শোকার্ত: নিহত জওয়ান বিপুল রায়ের দিদি সুজাতা রায় এবং ভাই বকুল রায়। বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের বিন্দিপাড়ায়। ছবি: নারায়ণ দে
সীমান্ত সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছে বাড়ির বড় ছেলের। ছোট ছেলে বকুল রায় মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান হওয়া দরকার। তা হলেই শান্তি আসবে সীমান্তে।
বৃহস্পতিবার শুধু অপেক্ষাতেই দিন কাটল আলিপুরদুয়ারের বিন্দিপাড়ায় বিপুল রায়ের পরিবারের। বেলা ২টো নাগাদ সেনার তরফে জানানো হয়, এ দিন আর দেহ বাড়ি আনা হবে না। রাতে হাসিমারা বায়ুসেনা ছাউনিতে বিপুলের দেহ পৌঁছয়। বিন্দিপাড়ায় দেহ আসবে আজ, শুক্রবার। বিপুলের স্ত্রী ও মেয়ে আসার জন্যই অপেক্ষা করা হবে, জানিয়েছেন বিপুলের আত্মীয়রা।
লাদাখে প্রাণ গিয়েছে রাজেশ ওরাংয়েরও। বীরভূমের মহম্মদবাজারে বেলগড়িয়া গ্রামে তাঁর বাড়ির লোকজনেরও এ দিন সময় কেটেছে অসহ্য অপেক্ষায়, কখন আসবে ছেলের দেহ। সাঁইথিয়া, সিউড়ি, মল্লারপুর, রামপুরহাট থেকে বহু মানুষ এসেছেন শুধু রাজেশকে শেষ দেখা দেখতে। কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না রাজেশের মা মমতা, বাবা সুভাষ বা বোন শকুন্তলা। তাঁরা সকলেই শোকে বিছানা নিয়েছেন। তাঁদের সান্ত্বনা দিতে এগিয়ে আসেন অনেক অচেনা মানুষ।
আরও পড়ুন: সীমান্তে কেন ভারতীয় সেনার ‘মাউন্টেন স্ট্রাইক কোর’ হল না, উঠছে প্রশ্ন
বিন্দিপাড়ায় বিপুলের বাবা নীরেন রায় দিনভর কারও সঙ্গেই বিশেষ কথা বলেননি। বড় ছেলেকে হারালেও সুযোগ পেলে ছোট ছেলে বিপুলকেও সেনায় পাঠাতে চান তিনি। বকুল ভুটানে চাকরি করেন। বাড়ি ফিরে সারাটা দিনই ছিলেন শোকার্ত বাবা ও দিদির পাশে। বাবার কথা শুনে বললেন, ‘‘দেশকে রক্ষা করার সেই সুযোগ পেলে অবশ্যই যাব। তবে এই সমস্যার সমাধান আলোচনার মাধ্যমেই করতে হবে। তা হলেই সীমান্তে শান্তি আসবে।’’
রাত পৌনে ৮টা নাগাদ রাজেশের দেহ নিয়ে বিমান নেমেছে পানাগড়ে। সেখান থেকে দেহ নিয়ে যাওয়া হয় সেনা হাসপাতালে। ভোর ৫টা নাগাদ দেহ বেলগড়িয়ার উদ্দেশে রওনা দেবে বলে জানান এসিপি (কাঁকসা) শাশ্বতী শ্বেতা সামন্ত। পানাগড় থেকে বিমানটি হাসিমারার দিকে উড়ে যায়।
আরও পড়ুন: মায়ের কোল থেকে স্যালুট
বিপুলের দেহও অনেক রাতে হাসিমারায় পৌঁছয়। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে হাসিমারাতেই থাকছে দেহ। শুক্রবার দুপুরে দেহ বিন্দিপাড়ায় নিয়ে যাওয়া হবে। বিপুলের স্ত্রী রুম্পা ও পাঁচ বছরের শিশুকন্যা তামান্নাকে সেনার তরফে মেরঠ থেকে বিন্দিপাড়ায় আনা হচ্ছে। শুক্রবার দুপুরের আগে পৌঁছতে পারবেন না তাঁরা।
বিপুলের বাড়িতেও উপচে পড়েছে ভিড়। এর মধ্যেই মঞ্চ বাঁধা হচ্ছে। বিপুলকে গান স্যালুট দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হবে। একই ভাবে বেলগড়িয়া গ্রামেও তৈরি হয়েছে জায়গা। দুই যুবকের ছবি দিয়েই এলাকায় মিছিল হয়, আলিপুরদুয়ার-জলপাইগুড়িতে হয় মোমবাতি মিছিলও।
পানাগড়ে দেহ এসেছে, এ কথা জানার পরে রাজেশের বাড়ি ঘিরে থাকা লোকের ভিড় কমতে থাকে। সকলেই আজ, শুক্রবার তাঁকে শেষ দেখা দেখতে আসবেন। অনেক দূরে বিপুলের বাড়ি ঘিরেও তখন অন্ধকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy