Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

পুরভোটের আগে পথেই নজর বাম-কংগ্রেসের

কলকাতায় প্রথম বাম ও কংগ্রেসের যৌথ প্রকাশ্য কর্মসূচি ছিল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) প্রতিবাদে মিছিল।

রবিবার ধর্মতলায় ফের উঠল ‘গো ব্যাক’ মোদী স্লোগান। —নিজস্ব চিত্র।

রবিবার ধর্মতলায় ফের উঠল ‘গো ব্যাক’ মোদী স্লোগান। —নিজস্ব চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:০৭
Share: Save:

পরপর তিন কর্মসূচিতে সাড়া মিলল বিপুল। প্রতিবাদের রেশ ধরে রেখেই আসন্ন এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা সেরে রাখতে চাইছে বাম ও কংগ্রেস।

কলকাতায় প্রথম বাম ও কংগ্রেসের যৌথ প্রকাশ্য কর্মসূচি ছিল সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) প্রতিবাদে মিছিল। ডিসেম্বরের শেষে সেই মিছিলে চোখে পড়ার মতো ভিড় হওয়ার পরে সাধারণ ধর্মঘট সাড়া মিলেছিল ভাল। বাম ও কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা সে দিন একসঙ্গেই রাস্তায় ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সফরের বিরোধিতা করে দু’পক্ষের ডাকে এবং উদ্যোগে উত্তাল বিক্ষোভে হয়েছে কলকাতার রাজপথে। এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতেই এ বার বড়সড় আকারে যৌথ উদ্যোগে রাজভবন অভিযানের পরিকল্পনা করছে বিধান ভবন ও আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। ‘গো ব্যাক মোদী’ শীর্ষক প্রতিবাদে যোগ দেওয়ার ফাঁকে রবিবার রাস্তায় বসে প্রদেশ কংগ্রেস ও সিপিএম নেতৃত্বের মধ্যে এই নিয়ে প্রাথমিক কথাবার্তাও হয়েছে।

জেলায় জেলায় সিএএ-এনআরসি নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়ার পরে কলকাতায় রাজভবন অভিযানের কথা আগেই বলে রেখেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। কংগ্রেস নেতৃত্ব চাইছেন, লাগাতার প্রতিবাদের মেজাজ ধরে রেখেই বামেদের সঙ্গে নিয়ে বড় আকারে ওই অভিযান হোক। বামেদেরও তাতে আপত্তি নেই। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম প্রস্তাব শুনে সোমেনবাবুদের জানিয়েছেন, আলিমুদ্দিনে রাজ্য কমিটির বৈঠক রয়েছে মঙ্গল ও বুধবার। তার পরে ১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে সিপিএম নেতারা যাবেন তিরুঅনন্তপুরম। তার আগে আজ, সোমবার দিল্লিতে বিরোধীদের বৈঠকে এনআরসি-বিরোধী আন্দোলনের রূপরেখা আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে। দলীয় স্তরে কথা বলে নিয়ে বাম নেতৃত্ব কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা করে কলকাতায় রাজভবন অভিযানের সূচি চূড়ান্ত করবেন।

আরও পড়ুন: বিবেকানন্দ জন্মদিবসের শোভাযাত্রায় ফ্লেক্স-এ অভিষেকের ছবিতে বিতর্ক

এই বছরেই কলকাতা-সহ রাজ্যের শতাধিক পুরসভায় নির্বাচন হওয়ার কথা। বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্বের লক্ষ্য রাস্তায় যৌথ আন্দোলনের তীব্রতা বাড়িয়েই পুরভোটে সমঝোতার বাতাবরণ তৈরি করে ফেলা। জেলায় এবং মহকুমা শহরে এখন একত্রে কর্মসূচি নেওয়ার দিকেই নজর দিচ্ছেন দু’দলের নেতৃত্ব। লোকসভা ভোটে রাজ্যে বিরোধী দলের যে পরিসর বিজেপির দখলে চলে গিয়েছে, তাকে যতটা সম্ভব পুনরুদ্ধার করতে চান তাঁরা। সিপিএমের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘রাস্তাই এখন পথ দেখাবে।’’

রাতভর অবস্থানে প্রতিবাদীরা। ধর্মতলা চত্বরে শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।

ধর্মতলায় ছাত্র ও যুবদের প্রতিবাদে শামিল হতে এ দিন এসেছিলেন কংগ্রেসের সোমেনবাবু, অমিতাভ চক্রবর্তী, শুভঙ্কর সরকার, আব্দুস সাত্তারেরা। ছিলেন সিপিএমের সেলিম, শমীক লাহিড়ী, মানব মুখোপাধ্যায় ও অন্যান্য বাম নেতারা। সঙ্কটের সময়ে ছাত্র-যুবরাই প্রতিবাদের পথ দেখাচ্ছেন বলে তাঁদের কৃতজ্ঞতা জানান সোমেনবাবু।

প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের সময়ে বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে গেলে কংগ্রেসের ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি সৌরভ প্রসাদ-সহ কয়েক জনকে এ দিন নেতাজি ইন্ডোর সংলগ্ন রাস্তায় বিজেপির কর্মীরা মারধর করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ সৌরভকে গ্রেফতারও করে। প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি শাদাব খান ও সোমদীপ ঘোষের নেতৃত্বে আর এক দল যুব ও ছাত্র ছিলেন ধর্মতলার অবস্থানে। প্রসেনজিৎ বসুদের ডাকে বাম প্রতিবাদীরা রাতভর বসেছিলেন ধর্মতলায়। নেতাজি ইন্ডোরে অনুষ্ঠান সেরে মোদী ফিরে যাওয়ার সময় পর্যন্ত ধর্মতলা অবরোধ করে রেখেছিলেন অবস্থানকারীরা।

অন্য বিষয়গুলি:

CAA NRC Left Front Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy