Advertisement
০১ মার্চ ২০২৫
EM Bypass Murder

পরকীয়া-তত্ত্ব উড়িয়ে দিচ্ছে ইএম বাইপাস-কাণ্ডে নিহত তরুণীর শ্বশুরবাড়ি! দাবি, ‘এমনটা হতেই পারে না’

মৃতার ভাসুর মিরাজ আহমেদের দাবি, রফিয়া এবং তাঁর স্বামী মোবিন প্রায়ই একসঙ্গে বার হতেন। রাতে খেতেও যেতেন বাইরে। তাঁরও প্রশ্ন, এমন কী হল বৃহস্পতিবার রাতে?

In-Laws family of EM bypass case victim can\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\\'t accept the alienation theory

বাইপাসের ধারে রফিয়া সাকিলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

সারমিন বেগম
শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৮:৩০
Share: Save:

রফিয়া সাকিল শেখের খুনের নেপথ্যে পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে জটিলতা রয়েছে, এমনটা মানতে নারাজ তাঁর শ্বশুরবাড়ি। রফিয়ার ভাসুরের কথায়, ‘‘এমনটা হতেই পারে না।’’

ইএম বাইপাসের ধারে রফিয়া-খুনে পরকীয়া সংক্রান্ত বিবাদ রয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ছিল। সেই তত্ত্বই খারিজ করছে রফিয়ার শ্বশুরবাড়ি।

রফিয়ার খোঁজখবর নিতে গিয়ে জানা যায়, তিনি স্বামী মোবিন আহমেদের সঙ্গে থাকতেন রাজাহাটের নারায়ণপুর এলাকায়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্ক ভালই ছিল বলে দাবি রফিয়ার শ্বশুরবাড়ির। পরিবারের দাবি, রফিয়া এবং তাঁর স্বামী মোবিন আহমেদের মধ্যে কোনও অশান্তি ছিল না। মৃতার ভাসুর মিরাজ আহমেদের বক্তব্য, রফিয়া এবং মোবিন প্রায়ই একসঙ্গে বার হতেন। রাতেও খেতে যেতেন বাইরে। তাঁর প্রশ্ন, এমন কী হল বৃহস্পতিবার রাতে? মিরাজের দাবি, ঘটনার পর থেকেই মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন মোবিন।

রাজারহাটের নারায়ণপুর এলাকার একটি চারতলা বাড়িতে স্বামীর সঙ্গে থাকতেন রফিয়া। চারতলা বাড়ির দোতলাটা তাঁদের জন্য ছিল। যদিও শুক্রবার সেখানে গিয়ে দেখা যায়, সেই ফ্ল্যাটের দরজায় তালা ঝুলছে। একতলায় স্ত্রী-সন্তান নিয়ে থাকেন মিরাজ। ওই চারতলা বাড়িটি তাঁদের নিজস্ব বলে জানান তিনি। সংসার আলাদা হলেও ভাইয়েরা থাকতেন একই বাড়িতে। মিরাজের অ্যালুমিনিয়ামের ব্যবসা।

যদিও রফিয়ার যাবতীয় সরকারি নথিতে নারকেলডাঙার একটি ঠিকানা লেখা ছিল। প্রথমে সেই ঠিকানায় গিয়ে খোঁজ নেওয়া হয়। সেখানে কাউকে না পেয়ে খোঁজখবর করতে মেলে নারায়ণপুরের ঠিকানা। মিরাজের দাবি, আগে তাঁরা নারকেলডাঙাতেই থাকতেন। পরে উঠে আসেন নারায়ণপুরের বাড়িতে।

রফিয়ার সম্পর্কে প্রথমে মুখ খুলতে রাজি ছিলেন না মিরাজ। নারায়ণপুরের বাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকি করা হলে দরজা ফাঁক করে প্রথমে কথা বলেন তিনি। কথায় ছিল জড়তা। ঘরের মধ্যে ঢুকে কথা বলা যাবে কি না জানতে চাইলে মিরাজ নিজেই ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। ঘরের বাইরে দাঁড়িয়ে কথা বলেন। তাঁদের কাছে এখনও এই হত্যা সম্পর্কে কোনও সুস্পষ্ট ধারণা নেই।

রফিয়ার সঙ্গে বছর চারেক আগে বিয়ে হয়েছিল মোবিনের। রফিয়া সম্পর্কে মোবিনের তুতো বোন। পরিবারের মধ্যেই বিয়ে হয় তাঁর। বিয়ের আগে রফিয়া থাকতেন বারুইপুরে। তাঁর খুনের নেপথ্যে এক ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে জটিলতা বলেই জানিয়েছে পুলিশ। যদিও তা মানতে রাজি নন রফিয়ার ভাসুর। মোবিনের সঙ্গেও কোনও অশান্তি ছিল না বলেই জানতেন বলে জানান মিরাজ।

কেমন ছিল স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক? তা বলতে গিয়েই মিরাজ জানান, মোবিন সল্টলেক সেক্টর ফাইভে একটি বেসরকারি সংস্থায় নাইট শিফ্‌টে কাজ করতেন। ডিউটির আগে প্রায়ই স্ত্রীকে নিয়ে বার হতেন মোবিন। তাঁর একটা স্কুটার আছে। তাতে চেপেই স্বামী-স্ত্রী দু’জনে রাতে বার হতেন। ঘুরতেন একসঙ্গে, খেতেনও বাইরে। তার পর স্ত্রীকে তপসিয়ায় তাঁর দিদার বাড়ি, কখনও আবার বাপের বাড়ি ছেড়ে কাজে চলে যেতেন মোবিন। মিরাজের দাবি, গত চার বছরে প্রায় প্রতি দিনই মোবিন এবং রফিয়া রাতে স্কুটারে চেপে বার হতেন। রাজারহাটের বাড়ি থেকে বেরিয়ে কখনও বাইরে খেতেন, কখনও আবার সোজা স্ত্রীকে দিদার বাড়ি ছেড়ে মোবিন চলে যেতেন কাজে।

ইএম বাইপাসের কাছে বৃহস্পতিবার রাতে রফিয়াকে কুপিয়ে খুন করা হয়। অভিযুক্ত এক মহিলা এবং নাবালক-সহ মোট তিন জন। এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, এক ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন রফিয়া। তা জানতে পারেন তাঁর স্ত্রী। এর পরই তিনি তাঁর স্বামীর ‘প্রেমিকা’কে খুনের পরিকল্পনা করেন, সঙ্গী ছিল ১৬ বছরের পুত্র । বাবার উপর গোয়েন্দাগিরি শুরু করে নাবালক। তারই পরিণাম বৃহস্পতিবার রাতের হত্যাকাণ্ড। তার পর থেকেই ‘খোঁজ’ নেই ফারুকের। স্ত্রীর মৃত্যুর খবর পেয়ে হাসপাতালে যান মোবিন। শুক্রবার সকালে তাঁর খোঁজ নিতে নারায়ণপুরের বাড়িতে গেলে মিরাজ জানান, রফিয়ার মৃত্যুর খবর জানার পর থেকেই হাসপাতালে আছেন তাঁর ভাই।

অভিযুক্তদের বাড়ি কলকাতার কলিন স্ট্রিটে। সেই বাড়িতে গিয়েও খোঁজখবর নেওয়া হয়। সেই ফ্ল্যাটও তালাবন্ধ। প্রতিবেশীরা জানান, ওই দম্পতির মধ্যে কোনও অশান্তি ছিল বলে শোনেননি। বাড়ির কাছের এক দোকানদার জানান, প্রায় ১০ বছর ফারুক তাঁর পরিবার নিয়ে কলিন স্ট্রিটের ওই ফ্ল্যাটে থাকতেন।

অন্য বিষয়গুলি:

EM Bypass Murder EM Bypass Kolkata Crime
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy