নতুন করে ছড়াচ্ছে কুড়মালি আন্দোলন। —নিজস্ব চিত্র।
চার দিনে গড়াল কুড়মি সমাজের রেল এবং সড়ক অবরোধ কর্মসূচি। অবরোধকারীদের সঙ্গে একাধিক বার আলোচনাতেও কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। বরং নতুন করে ছড়াচ্ছে আন্দোলন। শুক্রবারও বাতিল হয়েছে একাধিক ট্রেন। স্তব্ধ সড়কপথও। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। অন্য দিকে, দাবি পূরণ না হলে এই আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
কুড়মি জাতিকে তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত করা এবং কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্তির দাবিতে গত চার দিন ধরে রাজ্যের নানা প্রান্তে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। যার জেরে কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলার মাঝে খেমাশুলি এলাকা। পুরুলিয়ায় ‘রেল রোকো’ কর্মসূচি পালন করা ছাড়াও মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুরে রাস্তা অবরোধ করা হয়। শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতেও আন্দোলন শুরু হয়েছে। ‘রেল রোকো’ হতে পারে শালবনি স্টেশনেও। বেলা ১১টা নাগাদ কুড়মি সমাজের নেতৃত্ব সেখানকার স্টেশন মাস্টারকে জানান, তাঁরা সেখানেও ‘রেল রোকো’ আন্দোলন করবেন। তার পর মেদিনীপুর পুরুলিয়া আদ্রা ডিভিশনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুরুলিয়া থেকে ভেলুপুরম এক্সপ্রেস ট্রেনটি ছেড়ে দেওয়ার আবেদন জানায় রেল। ওই ট্রেনটি শালবনী স্টেশন পেরোতেই আন্দোলন শুরু নিয়ে বৈঠক শুরু হয়েছে।
ট্রেন চলাচল স্তব্ধ খড়্গপুর থেকে ঝাড়গ্রাম লাইনে। খড়্গপুর ডিভিশনের সিনিয়র ডিসিএম রাজেশ কুমার বলেন, ‘‘শুক্রবার বেশ কিছু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। আপ লাইনে ১২টি এবং ডাউনে ন’টি ট্রেন ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আপাতত দু’টি আপ এবং ডাউনে আটটি ট্রেনের যাত্রা স্থগিত রাখা হয়েছে।’’ একই অবস্থা সড়কপথেও। খড়গপুর থেকে ঝাড়গ্রামের দিকে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের দু’পাশে সারি সারি গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে।
পুরুলিয়ায় অবরোধ স্থলে আবার উৎসবের মেজাজ দেখা দিয়েছে। আন্দোলনস্থলে রাতে পালা করে করে চলছে ছৌ-ঝুমুর নাচের আসর। সাধারণ মানুষের অসুবিধার কথা মানছেন কুড়মালি নেতা অজিতপ্রসাদ মাহাতো। তবে তিনি বলেন, ‘‘যদি সরকার আমাদের দাবি মেনে নিলেই অবরোধ তুলব।’’ আর এক নেতা রাজেশ মাহাতোর কথায়, ‘‘রেল রোকো এবং রাস্তা অবরোধের জেরে মানুষের হয়রানির জন্য ক্ষমা চাইছি। আসলে এই আন্দোলনে নামতে আমরা বাধ্য হয়েছি। আমরা জনগণের সহযোগিতা চাই।’’ এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে আদ্রা ডিভিশনের রেলওয়ে ম্যানেজার মণীশ কুমার বলেন, ‘‘আশা করেছিলাম, সমস্যা মিটে যাবে। আজও বাতিল ট্রেনের লম্বা তালিকা রয়েছে।’’ অবরোধ তুলতে কি তাঁরা ব্যর্থ? প্রশ্নের উত্তরে মণীশ বলেন, ‘‘এই সব ক্ষেত্রে পুরো ক্ষমতা রাজ্য সরকারের হাতে রয়েছে। এ নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকাও রয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, এই সব ক্ষেত্রে রেল হস্তক্ষেপ করবে না।’’ অন্য দিকে, রাজ্যের শাসক দল ঠিক বিপরীত কথা বলছে। তারা জানাচ্ছে, এ নিয়ে রেলেরই পদক্ষেপ করা দরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy