Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বিতর্কের মধ্যেই পাশ ‘বিশ্ব বাংলা’

বিধানসভায় এ দিন বিলটি পেশ হওয়া মাত্রই পূর্বপ্রস্তুতি অনুযায়ী বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা হইচই শুরু করে দেন। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলতে থাকেন, ‘‘বোলপুরে বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে হওয়ার কথা, সেই জমি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। বিশ্ব বাংলার লোগো নিয়েও মামলা চলছে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:২১
Share: Save:

বিরোধিতার মধ্যেই মঙ্গলবার বিধানসভায় পাশ হয়ে গেল বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় বিল।

বিধানসভায় এ দিন বিলটি পেশ হওয়া মাত্রই পূর্বপ্রস্তুতি অনুযায়ী বাম ও কংগ্রেস বিধায়করা হইচই শুরু করে দেন। বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলতে থাকেন, ‘‘বোলপুরে বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে হওয়ার কথা, সেই জমি নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। বিশ্ব বাংলার লোগো নিয়েও মামলা চলছে।’’ এরই মধ্যে বিজেপি বিধায়ক দিলীপ ঘোষ বক্তৃতা শুরু করেন। তখন কংগ্রেস ও বাম বিধায়কেরা বিল পাশ না করানোর দাবিতে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখান। বিলের প্রতিলিপি ছিঁড়ে উড়িয়ে সভাকক্ষ ত্যাগ করেন তাঁরা।

বিধানসভা চত্বরে স্লোগান দিয়ে মিছিল করে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘আমরা ডেঙ্গি নিয়ে আলোচনা চেয়েছিলাম। বিচারাধীন বিষয় বলে তা নিয়ে আলোচনার অনুমতি দেওয়া হল না। তা হলে বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাশ করাতে বিধানসভায় আলোচনা হচ্ছে কী করে? বিশ্ব বাংলা লোগো এবং ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি— দু’টিই তো আদালতে বিচারাধীন!’’ মান্নানের আরও যুক্তি, এক সাংসদ ভাইপো রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে বিশ্ব বাংলা লোগোর স্বত্ব চেয়েছিলেন— সে কথা সরকারই হলফনামায় জানিয়েছে। অর্থাৎ বিষয়টি বিতর্কিত। এই প্রেক্ষিতে মান্নান বলেন, ‘‘ডেঙ্গি আর বিশ্ব বাংলার মধ্যে সরকারের কাছে কোনটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝা গেল!’’

সিপিএম বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, বোলপুরে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় আছে। তার পরে সেখানে ‘বিশ্ব বাংলা’র নামে বিশ্ববিদ্যালয় করে সরকার রবীন্দ্রনাথ এবং রাজ্যবাসীকে অপমান করছে।

তাৎপর্যপূর্ণ হল, বিজেপি-র তরফে মুকুল রায় সম্প্রতি ‘বিশ্ব বাংলা’ বিতর্ক সামনে এনেছেন। অথচ সেই বিজেপি-রই বিধায়ক এবং রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু বিধানসভায় বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় বিল সমর্থন করেন। তবে একই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘ওই জমিতে আগে শিল্প হবে বলা হয়েছিল। এখন বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার কথা হলা হচ্ছে। মাত্র ২০ একর জমিতে কী করে বিশ্ববিদ্যালয় হবে?’’ দিলীপবাবুকে আবার কটাক্ষ করে মান্নানের মন্তব্য, ‘‘বক্তৃতার জন্য ৬ মিনিট বরাদ্দ ছিল। কিন্তু তিনি ১০ মিনিট বলেছেন। রাজ্য সরকার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে যে সংবর্ধনা দিল, তার প্রভাব কি দিলীপবাবুর বক্তৃতায় পড়ল?’’

বিল নিয়ে জবাবি ভাষণে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘বিরোধীরা বিশ্ব বাংলা লোগো নিয়ে সমস্যা তৈরি করছেন। কোনও দিন শুনব, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব কথাটা বাদ দিতে হবে! কেন্দ্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতা কিছুই নেই। রবীন্দ্রনাথ শুধু ভারতবর্ষের নয়। গোটা বিশ্বের।’’ স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘বিশ্ব বাংলা’র লোগো নিয়ে মামলা চলছে বলে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে ‘বিশ্ব বাংলা’ শব্দ ব্যবহার করা যাবে না, এটা হয় না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE