বন্যার জলে প্লাবিত পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। নিজস্ব চিত্র।
ফি বর্ষাতেই বানভাসি হচ্ছে জেলার নানা এলাকা। আর সেই ভোগান্তি যে মানুষেরই তৈরি, তা মানছেন পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। ইতিমধ্যে কেলেঘাইয়ের জলে প্লাবিত হয়েছে পটাশপুর, ভগবানপুর ও এগরার বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রতিদিনই জলের তলায় চলে যাচ্ছে নতুন নতুন জায়গা। এই বন্যার জন্য সমুদ্র ও নদীবাঁধের ধারে নিয়ম ভেঙে গজিয়ে ওঠা ইটভাটা আর মাছের ভেড়িকেই দুষছেন স্থানীয়দের একাংশ।
চারদিকে নদী ও সমূদ্রের বেড়াজালে ঘেরা রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। প্রায় ৬৫ কিমি সমূদ্র তীরবর্তী এলাকা-সহ রূপনারায়ণ, হলদি, কেলেঘাই, বাগুই, রসুলপুর প্রভৃতি হল এই জেলার প্রধান নদী। এই সমুদ্র আর নদীর পাড়ে যত্রতত্র গজিয়ে উঠেছে মাছচাষের ভেড়ি। যার মাসুল গুনতে হচ্ছে জেলাবাসীদেরই। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বৃষ্টির জল এতদিন গড়িয়ে যেত চাষের জমিতে। সেই জল নালার মাধ্যমে চলে যেত নদীতে। আর এখন বৃষ্টির জল যাওয়ার রাস্তাই বন্ধ হয়ে গিয়েছে অপরিকল্পিত ভেড়ির দাপটে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বিধায়ক তথা রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র স্বীকার করেছেন, বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ ভেড়ি নির্মাণ এই বন্যা-বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ। প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি তিনি উত্থাপন করেছেন বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসনের নজর এড়িয়েই ভেড়িগুলি গজিয়ে উঠছে। কী ভাবে এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায় তা নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে আলোচনা চলছে।’’
অভিযোগ, মাছ চাষে উৎসাহ দেওয়ার সুযোগ নিয়ে জেলার ভৌগোলিক চিত্রটাই বদলে দেওয়া হয়েছে চুপিসারে। জেলার ২৫টি ব্লকেরই নাম জড়িয়েছে এই তালিকায়। সেই সঙ্গে গজিয়ে উঠেছে বিপুল পরিমাণে অবৈধ ভাটা। নদীর চরগুলিকে গায়ের জোরে বা কম দামে লিজ নিয়ে তৈরি ভাটাগুলির দাপটে নদীর স্বাভাবিক গতিও নষ্ট হয়েছে। কিন্তু জেলা প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।
এরই মাশুল গুনছেন এগরা, পটাশপুর, ভগবানপুরের বাসিন্দারা। কেলেঘাই নদীর পাড়ের বিস্তীর্ণ চরগুলিতে কিছুটা অন্তর মাছের ভেড়ি আর ভাটা গজিয়ে ওঠার কারণে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। তার ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছে লক্ষাধিক পরিবার। প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বৃষ্টির জমা জলে দুর্ভোগ আরও বাড়ছে।
জেলাশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাজি বৃহস্পতিবার বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে বলেন, ‘‘কেলেঘাইয়ের সেতু রয়েছে সেই জায়গা থেকে জল বন্ধ করতে হবে। এ জন্য আজ সেচ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে পরিদর্শনে এসেছি। নদীতে জলের স্রোত বন্ধ না করা পর্যন্ত এলাকার পরিস্থিতি শুধরাবে না। তবে বিদ্যুৎ সমস্যার জন্য পানীয় জলের সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy