মনিকার বাড়ি । নিজস্ব চিত্র
এলাকায় গুঞ্জন, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর বিশেষ পদ পাওয়ার পরেই তাঁর বেশভূষা, চালচলন বদলে যায়। অল্প দিনের মধ্যে ১৪০০ বর্গফুটের দুধসাদা ঝাঁ-চকচকে বাড়ি হাঁকিয়ে ফেলেন। হাওড়ার উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের বাণীবন গ্রামের সাঁতরাপাড়ায় মনিকা সাঁতরা নামে ওই নেত্রীর বাড়ি নিয়ে চর্চার শেষ নেই।
কোন জাদুতে হল অমন বাড়ি? নিন্দুকদের কথায় গুরুত্ব দিতে নারাজ মনিকা। তিনি জানিয়ে দেন, নিয়ম বহির্ভূত কিছুই করেননি।
বাড়িটি হঠাৎ দেখলে ভ্রমণস্থলের ব্যয়বহুল কটেজ বলে ভুল হতে পারে। জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে সাড়ে চার কাঠা জায়গা কিনেছিলেন মনিকা। সেই জমিতেই বাড়ি। একতলা বাড়ির মধ্যে আছে তিনটি বেডরুম, ডাইনিং রুম, রান্নাঘর ও শৌচাগার। সঙ্গে দু’টি বিশাল বারান্দা। সবটাই মার্বেল বসানো। ঘরে দামি আসবাব। আগাগোড়া রুচির ছাপ। বাড়ির দিকে তাকিয়ে কেউ বলেন, ৩০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। কেউ বলেন, ৪০। কারও ধারণা, আরও বেশি। মনিকা বলেন, ‘‘ধাপে ধাপে খরচ করেছি। কত খরচ হয়েছে মনে নেই।’’
কয়েক মাস আগে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী হিসেবে কাজ পান মনিকা। বেতন মাসে ৮ হাজার টাকা। ব্লকের মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্ঘ সমবায়ের সম্পাদিকা পদে রয়েছেন তিনি। তবে, এই পদের জন্য কোনও সাম্মানিক নেই। স্বামী কারখানার বদলি শ্রমিক। তাঁর রোজগার মাসে ১০-১২ হাজার টাকা। দুই ছেলেমেয়ে। ছেলে কিছুদিন বেসরকারি কারখানায় কাজ করেছেন। এখন কাজ ছেড়ে বাড়িতেই থাকেন। মেয়ে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘সংসার চালিয়ে এমন দামি বাড়ি ওঁরা করলেন কী করে, সেটাই ভাবি।’’
স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের একাংশের দাবি, বছর তিনেক আগে গোষ্ঠীর সঙ্ঘ সমবায়ের সম্পাদিকা হওয়ার পরেই মনিকার চালচলন বদলে যায়। উলুবেড়িয়া-২ ব্লকে প্রায় সাড়ে চারশো স্বনির্ভর গোষ্ঠী। তাতে প্রায় ৪৫০০ মহিলা আছেন।
তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা নানা অভিযোগের কোনওটাই মানেননি মনিকা। তাঁর দাবি, ‘‘কারও থেকে এক কাপ চা-ও খাইনি। নিয়ম বহির্ভূত কোনও টাকা কারও কাছ থেকে নিইনি। আমাকে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্ঘ সমবায়ের সম্পাদিকা করায় অনেকের হিংসা হয়েছে। তাঁরাই এ সব কুৎসা রটাচ্ছেন।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাপের বাড়ির সম্পত্তি বিক্রির টাকা পেয়েছি। বন্ধুর থেকে বড় অঙ্কের টাকা ধার করেছি। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়েছি। অনেক কষ্ট করে বাড়িটা করেছি। কোনও অসৎ উপায়ে বাড়ি করিনি। কেউ যদি চ্যালেঞ্জ করে, তা হলে তাকে দেখিয়ে দেব, কোথা থেকে ধার করে বাড়ি তৈরি হয়েছে।’’
উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক নির্মল মাঝি বলেন, ‘‘মনিকার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক স্তরে কোনও অভিযোগ আসেনি। এলে নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেওয়া হত। তবে কী ভাবে তিনি ওই বাড়ি তৈরি করলেন, তা খতিয়ে দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy