ফাইল চিত্র।
ভরা করোনাকালে কেন্দ্র কুম্ভমেলায় রাশ টানেনি কেন, সেই প্রশ্ন বড় হয়ে উঠেছিল। নবপর্যায়ে কোভিড সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার পর্যটনে নিষেধাজ্ঞা চাপালেও সাগরমেলা ছাড় পাচ্ছে কেন, উঠছে সেই প্রশ্ন। নিছক প্রশ্ন নয়, পর্যটনে রাশ টানতে চেয়ে সরকার যে-নির্দেশ দিয়েছে, সেটিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে ব্যাপক বিভ্রান্তি। তার জেরে আতঙ্কে ভুগছেন আম-পর্যটক থেকে পর্যটন ব্যবসায়ী পর্যন্ত সকলেই। তাঁদের বক্তব্য, হোটেল, হোম
স্টে-সহ সামগ্রিক পর্যটন বন্ধ হবে, না শুধু দ্রষ্টব্য স্থানগুলি বন্ধ হচ্ছে— সেটা ওই নির্দেশিকায় স্পষ্ট করা হয়নি। এই বিষয়ে বহু পর্যটন ব্যবসায়ী প্রশাসনের শীর্ষ স্তরে যোগাযোগ করছেন ।
পর্যটন ব্যবসায়ী ও ভ্রমণপিপাসু বাঙালিদের একাংশের প্রশ্ন, এ ভাবে পর্যটন যদি বন্ধই করা হবে তা হলে গঙ্গাসাগর মেলাকে তার বাইরে রাখা হচ্ছে কোন যুক্তিতে? সরকারি নির্দেশে বিভ্রান্তিই বা থাকবে কেন? আচমকা এই নির্দেশের ফলে যাঁদের ভ্রমণের টিকিট বা হোটেলের বুকিং বাতিল করতে হবে, তাঁদের আর্থিক ক্ষতি কে পূরণ করবে, উঠছে সেই প্রশ্নও।
এ বিষয়ে পর্যটন ব্যবসায়ী সংগঠন হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক এ দিনই একটি বৈঠকের আয়োজন করেছিল হয়। সংগঠনের তরফে সম্রাট সান্যাল জানান, নির্দেশিকার ধোঁয়াশা কাটাতে তাঁরা মুখ্যসচিব ও পর্যটন সচিবের দ্বারস্থ হয়েছেন। সম্রাটবাবু বলেন, “এখন পর্যটনের সময়। বহু মানুষ দার্জিলিং-কালিম্পংয়ে রয়েছেন। তাঁরা তড়িঘড়ি ফিরবেন কী ভাবে? অনেকে গন্তব্যে রওনা দিয়েছেন। তাঁরা মাঝপথে কী করবেন?”
দার্জিলিং ছাড়াও তুরুক, অহলধারা, রামধুরার মতো উত্তরবঙ্গের অসংখ্য ‘অফবিট ডেস্টিনেশনে’ স্থানীয় বা দক্ষিণবঙ্গের বাঙালিরা যে-সব হোটেল বা হোম স্টে চালান, তাঁরা এখনও বুঝতে পারছেন না, হোটেল বন্ধ করবেন কি না। সিকিমে পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত কাঁচরাপাড়ার শুভজিৎ দাস বলেন, ‘‘সিকিমে তো সব খোলা। পর্যটকদের বুকিং রয়েছে জানুয়ারি জুড়ে। নবান্নের নির্দেশিকায় কিছু বুঝতে পারছি না, ব্যবসা চালু রাখব, না বন্ধ করব।’’ কার্শিয়াংয়ের কাছে সিটং-এ হোম স্টে চালান সোদপুরের বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়। এ দিনও তাঁর হোম স্টে ভর্তি। পাশাপাশি সব হোম স্টে-তেই ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বুকিং হয়ে আছে বলে জানান তিনি। পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকেই এ দিন বলছেন, যদি বাস বা অটো বন্ধ না-হয়, তা হলে উড়ানে বা দূরপাল্লার ট্রেনে বেড়াতে যাওয়া লোকেরা অনায়াসে তাতেই হোটেলে পৌঁছতে পারবেন। পাহাড়ে অনেকেই কয়েকটা দিন নিরিবিলিতে থাকতে যান। নিরঞ্জন সরকার নামে এক ভ্রমণার্থী পরিবারের
সকলের জন্য ৫ জানুয়ারির দার্জিলিং মেলের টিকিট কেটেছেন। গন্তব্য সিকিম। তিনি বলেন, ‘‘নির্দেশিকা অনুযায়ী সফরে কোনও বাধা আছে বলে তো মনে হচ্ছে না। শুধু লোকাল ট্রেন আর স্কুল-কলেজে নিষেধাজ্ঞা। আর সিকিমে তো ঢোকায় কোনও বারণ নেই।’’
তবে শান্তিনিকেতন, দিঘা, তারাপীঠে হোটেল ব্যবসা মার খাবে বলে জানাচ্ছেন সেখানকার হোটেল-মালিকেরা। ওই তিন জায়গাতেই হোটেল চালান সোদপুরের প্রবীর তালুকদার। তিনি বলেন, ‘‘তারাপীঠে রাতে আমরা আলোচনায় বসছি। অন্য জায়গাতেও হোটেল খোলা রেখে লোকজনকে মাইনে দিয়ে আমাদের পক্ষে ব্যবসা চালানো সম্ভব হবে না। তা ছাড়া এই পরিস্থিতিতে খুব কম পর্যটক আসবেন। কারণ, ঘুরে দেখার জায়গাগুলিই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy