দম্পতির মিষ্টিমুখ। নিজস্ব চিত্র
সংসারে অশান্তি চলছিলই। দু’দিন হল চড়েছিল সপ্তমে। কথা বলেও দাম্পত্য-কলহে বাগ মানাতে পারেননি পড়শিরা। শুক্রবার সকালে আবার ঝগড়া শুরু হতে ছুটে সটান উঠোনের কুয়োয় ঝাঁপ দিলেন স্বামী! পাড়া-পড়শি, পুলিশ মিলে ঘণ্টাখানেকের কসরতে বাঁশ বেঁধে, দড়ি ধরে তুললেন তাঁকে। চিকিৎসার জন্য পুলিশের গাড়ি ছুটল হাসপাতালে। কিছু সুস্থ করিয়ে মিষ্টির প্যাকেট নিয়ে এল পুলিশ। সঙ্গে অনুরোধ, আর বিবাদ নয়।
তখন সকাল সাড়ে দশটা। বীরভূমের মহম্মদবাজার থানার কাঁইজুলি বোর্ডিং পাড়ার ঘটনা শুনে ততক্ষণে উৎসাহীদের ভিড় জমেছে। স্থানীয়েরা জানালেন, অন্তত বছর পনেরো আগে বিয়ে হয়েছে পেশায় গাড়ির মিস্ত্রি নাসু শেখ ও ঝুমা বিবির। দম্পতির মেয়ের বয়স এগারো, ছেলের সাত। পড়শিরা জানালেন, নানা বিষয়ে বিবাদ লেগে থাকত দম্পতির। অশান্তি হত নাসুর নেশা নিয়েও। বৃহস্পতিবার বিকেলেও দম্পতির অশান্তির খবর পৌঁছেছিল থানায়। তখন এক পুলিশ কর্মী বাড়িতে এসে দু’জনের সঙ্গে কথা বলেন।
তখনকার মতো মিটলেও বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ফের দম্পতির কথা কাটাকাটির আওয়াজ কানে আসে অনেকের। সকালে তাঁরা জানতে পারেন কুয়োয় ঝাঁপের কথা। পড়শিরা মিলে ছুটে যান উদ্ধারে। থানায় খবর পৌঁছতেই আবার ছোটে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় নাসুকে। শুশ্রূষা করে পুলিশের গাড়িতেই তাঁকে ঘরে ফেরানো হয়। শেষে ওসি (মহম্মদবাজার) তপাই বিশ্বাসের কথায় ট্রাফিক ওসি বিদ্যাসাগর পাল ছোটেন মিষ্টি কিনতে। পুলিশের সামনে পরস্পরকে মিষ্টিমুখ করান দম্পতি। বিদ্যাসাগরবাবু অনুরোধ করেন ঝগড়া মিটিয়ে নিতে। পাড়ার লোক সব কাণ্ড দেখে হেসেই খুন! আঁচল চাপা দিয়েছেন গাঁয়ের বধূরা।
পুলিশের ‘দাওয়াইয়ে’ আপাতত কাজ হয়েছে। স্বামী-স্ত্রী বলছেন, ‘‘ভুল বোঝাবুঝিতে ঝগড়া হচ্ছিল। এ বার নিজেরা সব মিটিয়ে নেব।’’ পড়শিরা সরস। বলছেন, ‘মধুরেণ সমাপয়েৎ’।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy