হুদহুদের ঝাপটায় ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে শনিবার রাত থেকেই প্রচার চালাাচ্ছিল পুলিশ-প্রশাসন। সেই ঝড়ের আতঙ্কে রবিবার, ছুটির দিনে কার্যত পর্যটকশূন্য রইল হাওড়ার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র গাদিয়াড়া। বন্ধ রইল লঞ্চ পরিষেবা।
প্রতি রবিবার ও অন্য ছুটির দিনে ৃগমগম করে শ্যামপুরের গাদিয়াড়া। হোটেল-গেস্ট হাউসগুলিতে জায়গা প্রায়ই মেলে না। অথচ, হুদহুদ আতঙ্কে ব্যতিক্রমী চিত্র দেখা গেল এ দিন। শ্যামপুর, বাগনান, উলুবেড়িয়ার মতো জেলার নদী তীরবর্তী এলাকাগুলিতে শনিবার বিকেল থেকেই আকাশ মেঘলা হয়ে পড়ে। শুরু হয় ঝিরঝিরে বৃষ্টি। রবিবার সকাল থেকেও দেখা যায় একই ছবি। মানুষ ঘরে বসে টিভির পর্দায় চোখ রেখে দেখেছেন কী ভাবে দুপুর আড়াইটা নাগাদ হুদহুদ হানা দিয়েছে অন্ধ্র-ওড়িশার সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে। আতঙ্কের একটা মনোভাব তাঁদের মধ্যে এই সব এলাকা নিয়েও ছিল। বৃষ্টির মধ্যে যখন ঝোড়ো হাওয়া বয়েছে, মানুষের মুখে শোনা গিয়েছে এই বুঝি ‘সে’ এল! কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই জেলায় কিছুই ঘটেনি। তবুও হুদহুদের পরোক্ষ প্রভাব দেখা গিয়েছে গাদিয়াড়ায়।
রূপনারায়ণ এবং হুগলি নদীর সঙ্গমস্থল হল গাদিয়াড়া। এখান থেকেই হুগলি নদী সোজা গিয়ে মিশেছে বঙ্গোপসাগরে। ফলে, সমুদ্র উথাল-পাথাল হলে তার কিছুটা আঁচ পড়ে গাদিয়াড়ায়। এ অবস্থায় আবহবিদরা যখন হুদহুদ নিয়ে সতর্কবার্তা প্রচার করছেন, তখন হাওড়া জেলা প্রশাসন চুপ করে বসে থাকতে পারেনি। শনিবার বিকেলে গাদিয়াড়ায় শ্যামপুর ১ ব্লক প্রশাসন এবং পুলিশ যৌথ ভাবে সতর্কবার্তা প্রচার করে হুদহুদ নিয়ে। মত্স্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে নিষেধ করা হয়। শনিবার বিকেলেই গাদিয়াড়া থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নুরপুর, পূর্ব মেদিনীপুরে লঞ্চ পরিষেবা দেয় হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি। বন্ধ করে দেওয়া হয় সেই পরিষেবা।
রবিবার গাদিয়াড়ার গিয়ে দেখা যায়, এলাকা কার্যত সুনসান। এখানে যে সরকারি লজটি রয়েছে, অন্য ছুটির দিনে তার প্রতিটি ঘর পর্যটকে ভর্তি থাকলেও এ দিন অর্ধেক ঘরই ভরেনি। লজ দেখভালের দায়িত্বে যাঁরা, তাঁরা জানান, হুদহুদ নিয়ে যে টানা প্রচারের ফলেই আতঙ্কগ্রস্ত পর্যটকেরা। একই ছবি বেসরকারি লজগুলিতেও। পর্যটক প্রায় নেই বললেই চলে। লঞ্চ পরিষেবা বন্ধ থাকার কথা না জেনেই অনেকে এসেছিলেন ফেরিঘাটে। কিন্তু তাঁদের ফিরে যেতে হয়। হেলদোল যায়নি নদীর তীরে বসবাসকারীদের মধ্যে। তাঁরা জানান, এই ধরনের অভিজ্ঞতা তাঁদের আগেও হয়েছে। ফলে, হুদহুদ নিয়ে তাঁরা চিন্তিত নন। অবশ্য তাঁরা জানালেন, সরকার আগে থেকে সতর্কতামূলক প্রচার চালিয়ে ঠিকই করেছে। উলুবেড়িয়ার এসডিপিও শ্যামলকুমার সামন্ত জানান, শুধু গাদিয়াড়াতেই নয়, বাগনান এবং উলুবেড়িয়াতেও প্রচার হয়েছে। কোনও ঝুঁকি নেওয়া হয়নি।
রবিবার দুপুরে গাদিয়াড়ার ছবি দু’টি তুলেছেন সুব্রত জানা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy