ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার দীর্ঘ লাইন পড়ুয়াদের।—নিজস্ব চিত্র।
প্রাক-মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের সরকারি স্কলারশিপ বা বৃত্তির ফর্ম জমা দেওয়ার শেষ তারিখ হঠাৎ এগিয়ে আনায় সমস্যায় পড়ে গিয়েছে সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীরা। সেই সঙ্গে চলতি বছর থেকে ফর্মে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক করায় সমস্যা আরও বেড়েছে। শুধু তাই নয়, কোনও কোনও স্কুল পূরণ করা ফর্ম জমা না নেওয়ায় ছাত্রছাত্রীদের ফর্ম জমা দিতে ছুটতে হচ্ছে ব্লকে বা সংখ্যালঘু দফতরে। এই পরিস্থিতিতে হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রছাত্রীরা।
পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগম সূত্রের খবর, চলতি বছরের ১ জুন থেকে প্রাক-মাধ্যমিক স্তরে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মেধাবী সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্কলারশিপের ফর্ম দেওয়া শুরু হয়েছে। প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা ওই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবে। ফর্ম তোলার সময় দফতর সূত্রে জানানো হয়েছিল, ফর্ম জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৩১ অগস্ট। কিন্তু পরে তা এগিয়ে এনে ১৪ অগস্ট করা হয়। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করতেই ৭-৮ দিন সময় লেগে যাচ্ছে। সেখানে নির্ধারিত দিনের মধ্যে ফর্ম পূরণ করে জমা দেওয়া যাবে কি না তা নিয়ে তারা সংশয়ে।
পড়ুয়াদের এই দুর্ভোগ লাঘবে প্রশাসনের তরফে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা সে প্রশ্নের উত্তরে জেলার সংখ্যালঘু দফতরের আধিকারিক প্রদীপ আগরওয়াল বলেন, “রাজ্য দফতর থেকে যে নির্দেশ এসেছে, আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করছি। এর বাইরে গিয়ে কিছু করার এক্তিয়ার আমাদের নেই।”
অন্য দিকে, এ বছর থেকে ফর্মের সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক করায় সমস্যা আরও বেড়ছে। অভিযোগ, অনেক ছাত্রছাত্রীরই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই। তাই নতুন করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে দু’সপ্তাহের কাছাকাছি সময় লেগে যাচ্ছে। কারণ, স্বল্প সময়ের মধ্যে সকলেই অ্যাকাউন্ট খুলতে চাওয়ায় ব্যাঙ্কের উপরেও চাপ বেড়ে গিয়েছে। ফলে নির্ধারিত দিনের মধ্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে কি না তা নিয়েও আশঙ্কায় ছাত্রছাত্রীরা।
উলুবেড়িয়ার একটি রাস্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তা বলেন, “আমাদের কিছু করার নেই। ব্যাঙ্কে যে ক’জন কর্মচারী রয়েছেন, তাঁদের দিয়ে দিনে ২০-২৫টির বেশি অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব নয়। অথচ অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য রোজ প্রচুর আবেদন জমা পড়ছে।
তবে এ ক্ষেত্রে বোধহয় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছে দশ বছরেরও কম বয়সী পড়ুয়ারা। কারণ কম বয়েসর কারণে কোনও কোনও ব্যাঙ্ক তাদের নামে অ্যাকাউন্টই খুলতে চাইছে না। ফলে পরিবারের লোকজনদের ছুটতে হচ্ছে দূরের কোনও ব্যাঙ্কে। ভাটোরার বাসিন্দা আলতাব হোসেন জানালেন, মেয়ে আজমিরার জন্য তাঁকে বাগনানে গিয়ে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy