Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

যৌনপল্লি থেকে পালিয়ে বাড়ি ফিরলেন মহিলা, গ্রেফতার দুই

অল্প দিনের পরিচয়। তবু ভাল কাজের আশ্বাস পেয়ে দুই ছেলেকে হোমে রেখে বিশ্বাস করে তাদের সঙ্গে দিল্লি পাড়ি দিয়েছিলেন মহিলা। কিন্তু জানতেন না, যাদের তিনি বিশ্বাস করেছিলেন তারাই তাঁকে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেবে। কোনওক্রমে সেখান থেকে পালিয়ে শ্রীরামপুরে ফিরে এসে পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। তাঁর অভিযোগ পেয়ে রবিবার দুই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৪ ০১:১১
Share: Save:

অল্প দিনের পরিচয়। তবু ভাল কাজের আশ্বাস পেয়ে দুই ছেলেকে হোমে রেখে বিশ্বাস করে তাদের সঙ্গে দিল্লি পাড়ি দিয়েছিলেন মহিলা। কিন্তু জানতেন না, যাদের তিনি বিশ্বাস করেছিলেন তারাই তাঁকে যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেবে। কোনওক্রমে সেখান থেকে পালিয়ে শ্রীরামপুরে ফিরে এসে পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। তাঁর অভিযোগ পেয়ে রবিবার দুই মহিলাকে গ্রেফতার করেছে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম জানুয়া বিবি এবং আয়েশা পরভিন ওরফে চাঁদনি। জানুয়ার বাড়ি বৈদ্যবাটি কাজীপাড়ায়। আয়েশা চাঁপদানির বাসিন্দা। সোমবার ধৃতদের শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন পুলিশ হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। পুলিশের অনুমান, ধৃতেরা নারী পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত। তাদের আরও কয়েক জন সঙ্গীকে খোঁজা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় ওই মহিলা হাওড়ার বাগনানের মুগাবেড়িয়ায় বাপের বাড়িতে থাকতেন। মাস পাঁচেক আগে দুই ছেলেকে নিয়ে বৈদ্যবাটি কাজিপাড়ায় জানুয়া বিবির বাড়িতে ভাড়া থাকতে শুরু করেন। রঙের কাজ সংসার চালাতেন। বাড়িতে থাকার সুবাদে জানুয়া বিবির সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়। মহিলার অভিযোগ, জানুয়া তাঁকে বুঝিয়েছিল, ভিন্ রাজ্যে গেলে তিনি ভাল কাজ পাবেন। এমনকী পরিচিতদের মাধ্যমে সে-ই সব ব্যবস্থা করে দেবে বলেও জানায়। গত ১১ নভেম্বর জানুয়া ও তার পরিচিত আয়েশা পরভিন ওরফে চাঁদনি এবং রাজু নামে বৈদ্যবাটির এক যুবকের সঙ্গে তিনি ট্রেনে দিল্লি। তার আগে দুই ছেলেকে হাওড়ার একটি হোমে রেখে যান।

পুলিশের কাছে মহিলা জানিয়েছেন, দিল্লি স্টেশন থেকে বরুলি নামে এক জায়গায় মুন্না দেবী নামে একজনের বাড়িতে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে রেখে জানুয়া, চাঁদনি ও রাজু ফিরে আসে। দিন কয়েক পরে তিনি বুঝতে পারেন তাঁকে ১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে যৌনবৃত্তিতে নামার জন্য। গত ১৭ নভেম্বর সুযোগ বুঝে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে দিল্লি স্টেশনে আসেন। তার পর রেলপুলিশকে জিজ্ঞাসা করে কালকা মেল ধরে হাওড়ায় নেমে বাড়ি ফিরে আসেন। রবিবার মহিলা শ্রীরামপুর থানায় জানুয়া, আয়েশা ও রাজুর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মুন্না দেবীর কথাও পুলিশকে জানান। অভিযোগের ভিত্তিতে অপহরণ, যৌনবৃত্তিতে নামানোর জন্য বিক্রি এবং ষড়যন্ত্রের মামলা দায়ের করে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, জানুয়া বিবি গৃহবধূ ও চাঁদনি একজন যৌনকর্মী। কী ভাবে তাদের মধ্যে যোগাযোগ হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর আগেও এ ধরনের কোনও কাজ তারা করেছে কি না তারও তদন্ত হচ্ছে। জানুয়া ও চাঁদনি ধরা পড়লেও রাজু পলাতক, তার খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। চক্রে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তা দখা হচ্ছে। প্রয়োজনে পুলিশের একটি দল দিল্লিতেও যাবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE