বুধবার সকালে গোঘাটের বিরামপুরে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠি চার্জের অভিযোগ উঠল। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জড়িয়ে পড়েন মৃত বধূর বাপেরবাড়ির আত্মীয়স্বজন এবং প্রতিবেশিদের একাংশ। সকাল ৮টা থেকে টানাপোড়েনের পর অবশেষে দুপুর ১টা নাগাদ আরামবাগ পুলিশের সার্কল ইন্সপেক্টর রঘুনাথ হালদারের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে রেশমা বেগম (২২) নামে ওই বধূর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। লাঠি চালনার অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।
রঘনাথবাবু বলেন, “রাতে বধূর বাপের বাড়ির তরফে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি-সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে গোঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে দোষীদের খোঁজ চলছে।”
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুই আগে আরামবাগের মাদ্রা গ্রামের রেশমার সঙ্গে গোঘাটের বিরামপুরের মিন্টু মল্লিকের বিয়ে হয়। দম্পতির ৬মাসের একটি শিশুকন্যাও রয়েছে। রেশমার বাপের বাড়ির লোকের অভিযোগ, বুধবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ শ্বশুড়বাড়ি থেকে ফোন করে খবর দেওয়া হয়, তাঁদের মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আধঘন্টার মধ্যে তাঁরা শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখেন রেশমার মৃতদেহ দাওয়ায় শোয়ানো। বিছানা লন্ডভন্ড। সেখানে পড়ে আছে দু’টি ছেড়া বেল্ট। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা সব উধাও। রেশমার বাবা শেখ আজমাতুল্লার অভিযোগ, জামাইয়ের সঙ্গে তার বড় বৌদির বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে মেয়ে প্রতিবাদ করত। সেই নিয়ে মেয়েকে কয়েক বার মারধরও করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, মঙ্গলবার রাতে ফের অশান্তি হয় বলে প্রতিবেশীদের কাছে খবর পেয়েছি। তাঁদের দৃঢ় বিশ্বাস মেয়েকে গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করা হয়েছে।
রেশমার মৃত্যু নিয়ে এ দিন সকাল থেকেই গ্রামে উত্তেজনা ছিল। পুলিশ আটটা নাগাদ মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে রেশমার বাবা শেখ আজমাতুল্লা, মা লুত্ফা বেগম, ভাই শেখ নিজামুদ্দিন, কাকা শেখ ফজলুল হকরা দাবি করেন, জামাই-সহ পলাতক দোষীদের খঁুজে গ্রেফতার করতে হবে এবং তাদের দিয়ে রেশমার শিশু কন্যার নামে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার কাজ শেষ হওয়ার মৃতদেহ তুলতে দেওয়া হবে। এ নিয়ে তাঁদের সঙ্গে পুলিশের সঙ্গে বচসা ও ধস্তাধস্তি হয়।
অভিযোগ, অবস্থা সামাল দিতে পুলিশ লাঠি চালায়। লাঠির ঘায়ে গুরুতর জখম হন রেশমার বাবা-মা-ভাই ও কাকা-সহ জনা কয়েক প্রতিবেশী। এর প্রতিবাদে এবং পুলিশের বিরুদ্ধে পাল্টা খুনের ঘটনা চাপা দেওয়ার অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে সামিল হয় বাসিন্দারা। দুপুর ১টা নাগাদ বিরাট পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতের পরিবারকে নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করতে বলে। সেই সঙ্গে দোষীদের খঁুজে গ্রেফতার করার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy