নতুন উদ্যোগের অপেক্ষায়।
উদ্বোধনের পরে কেটে গিয়েছে চার বছর। কিন্তু হাওড়া জেলা পরিষদের উদ্যোগে এক কোটি টাকায় উলুবেড়িয়ার তুলসীবেড়িয়ায় তৈরি মাকের্ট কমপ্লেক্সে দোকানঘর ভাড়া নিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। ফলে, পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে ওই কমপ্লেক্স। আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে জেলা পরিষদের।
কেন ব্যবসায়ীরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না? স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, অপরিকল্পিত ভাবে মাকের্ট কমপ্লেক্সটি তৈরি। দোকানঘরগুলি ছোট। তার উপরে এককালীন এবং ভাড়া হিসেবে যে টাকা ধার্য করা হচ্ছে, তা বেশি। তা ছাড়া, এলাকাটি জমজমাট না হওয়ায় ব্যবসা কতটা জমবে, তা নিয়েও তাঁদের চিন্তা রয়েছে। তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদের বর্তমান বোর্ড এই পরিস্থিতির জন্য আগের বামফ্রন্ট পরিচালিত বোর্ডকেই দায়ী করেছে। তাদেরও অভিযোগ, অপরিকল্পিত ভাবে মার্কেট কমপ্লেক্সটি তৈরি হওয়ায় ব্যবসায়ীদের সাড়া মিলছে না। সে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পূর্বতন বোর্ডের সদস্যেরা।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে (আরআইডিপি) তুলসীবেড়িয়া বাসস্ট্যান্ডের কাছে এক বিঘা জমিতে গড়া হয় দোতলা ওই মাকের্ট কমপ্লেক্স। উদ্বোধন করেছিলেন মন্ত্রী অরূপ রায়। সেই সময়ে জেলা পরিষদের ক্ষমতায় ছিল বামেরা। কমপ্লেক্সটিতে মোট ৯৬টি দোকান রয়েছে। ভাড়া নিতে হলে দোকানঘরের অবস্থান অনুযায়ী ব্যবসায়ীকে এককালীন দিতে হবে ৬০-৮০ হাজার টাকা। মাসিক ভাড়া ৩০০-৩৫০ টাকা। ইতিমধ্যে কয়েক বার দোকান ভাড়া দেওয়ার জন্য লটারির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র ১৮ জন ব্যবসায়ী দোকান ভাড়া নিয়েছেন। অথচ, তাঁদের কেউই এখানে ব্যবসা করেন না। বন্ধই পড়ে থাকে তাঁদের দোকানঘর। এ ছাড়া, ওই কমপ্লেক্সে তিনটি হলঘর রয়েছে সরকারি কোনও অনুষ্ঠানে ভাড়া দেওয়ার জন্য। কিন্তু এক দিনও কোনও হলঘর ব্যবহার হয়নি।
যে উদ্দেশ্য নিয়ে প্রকল্পটি করা, সেটাই না হওয়ায় জেলা পরিষদের কর্তাদের একাংশের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভও রয়েছে। জেলা পরিষদের বর্তমান সহ-সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য বলেন, “ওই মাকের্ট কমপ্লেক্সের দোকান ভাড়া দেওয়ার জন্য আমরাও একবার উদ্যোগী হয়েছিলাম। ব্যবসায়ীরা সে ভাবে সাড়া দেননি। আমরা ফের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলব। তার পরে সিদ্ধান্ত নেব। ঠিক মতো পরিকল্পনা না করে প্রকল্পটি করার ফলে আজ এই সমস্যা।”
পরিকল্পনার অভাবের কথা মানতে চাননি জেলা পরিষদের পূর্বতন বাম বোর্ডের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ আনন্দ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর তত্ত্বাবধানেই তৈরি হয়েছিল ওই মার্কেট কমপ্লেক্স। তাঁর দাবি, “তখন স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলেই প্রকল্পটি হয়। তখন সকলেই আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। এখন যদি তাঁরা সহযোগিতা না করেন, আমাদের কী করার আছে?”
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, প্রকল্পটি তৈরি করা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। মার্কেট কমপ্লেক্সের পাশেই একটি স্টেশনারি দোকানের মালিক বলেন, “প্রকল্পটি তৈরি হবে বলে শুনেছিলাম। তার পরে তৈরি হতেও দেখলাম। কিন্তু আমাদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি।” পাশের একটি দোকানের মালিক বলেন, “ওখানে দোকান এত ছোট যে আমার মালপত্র রাখার জায়গা হবে না। ভাড়াও বেশি। তাই প্রথমে ভাড়া নেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও পরে আর এগোইনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy