Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জের

প্রেমিকার স্বামীকে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন যুবকের

স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের প্রতিবাদ করেছিলেন স্বামী। সেই অপরাধে তাঁকে কুপিয়ে খুন করেছিল স্ত্রীর প্রেমিক। ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল।

পিন্টু মালিক। সাজা ঘোষণার পর। ছবি: তাপস ঘোষ।

পিন্টু মালিক। সাজা ঘোষণার পর। ছবি: তাপস ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:০০
Share: Save:

স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের প্রতিবাদ করেছিলেন স্বামী। সেই অপরাধে তাঁকে কুপিয়ে খুন করেছিল স্ত্রীর প্রেমিক। ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল। বুধবার চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (তৃতীয় আদালত) মানস বসু যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিলেন খুনের আসামী পিন্টু মালিককে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলির ধনেখালির চেঁচুয়া গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্ণীকান্ত মালিকের স্ত্রী প্রতিমার সঙ্গে পাশের গ্রাম বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা পিন্টুর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে যাতে পিন্টু কোনও সম্পর্ক না রাখে সে জন্য লক্ষ্মীকান্ত পিন্টুর পরিবারকে বলেন। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে পিন্টু। দুই পরিবারের মধ্যে অশান্তি বাড়ে। গ্রামের সালিশি সভায় ডেকে পিন্টুকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। এর প্রতিশোধ নিতে এবং ‘পথের কাঁটা’ দূর করতে লক্ষ্ণীকান্তকে খুন করার পরিকল্পনা করে পিন্টু।

পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১৫ সালের ৩০ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার বাংলা বনধ ছিল। ওই দিন সকালে লক্ষ্ণীকান্তবাবু সাইকেলে কাজে বের হন। সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার সময় ধনেখালির পারম্বুয়া বাজারের কাছে পিন্টুর সঙ্গে দেখা হলে তাঁকে মদ খাওয়ার জন্য ডাকে সে। গ্রামবাসীরা পারাম্বুয়া বাজারের কাছে একটি তিলখেতের ধারে দু’জনকে বসে থাকতেও দেখেছিলেন। রাতে লক্ষ্ণীকান্ত বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুজি শুরু হয়। এ ব্যাপারে পিন্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরদিন পয়লা মে, শুক্রবার সকালে গ্রামের লোকজন তিলখেতের ধারে লক্ষ্মীকান্তর রক্তাক্ত দেহ পড়ে থাকতে দেখে তাঁর বাড়িতে খবর দেন। লক্ষ্মীকান্তর দাদা বাবলুবাবু ঘটনাস্থলে গিয়ে ভাইকে শনাক্ত করেন। ঘটনাস্থল থেকে লক্ষ্ণীকান্তের মোবাইল, হাতঘড়ি ও সাইকেল উদ্ধার হয়। এরপর বাবলুবাবু ধনেখালি থানায় পিন্টুর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ৫ই মে তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হয় লক্ষ্ণীকান্তের স্ত্রী প্রতিমাও। শুরু হয় মামলা।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক মানষ বসু পিন্টু মালিককে দোষী সাব্যস্ত করেন। প্রতিমাদেবীর বিরুদ্ধে খুনের ষড়যন্ত্র ও তথ্য গোপন করার অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাঁকে মুক্তি দেন বিচারক।

মামলার সরকারি আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বুধবার চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (তৃতীয় আদালত) মানষ বসুর এজলাসে আসামী পিন্টু মালিককে হাজির করানো হয়। বিচারক তার যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।

এ ছাড়া ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় তাকে। অনাদায়ে আরও ২ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Life term imprisonment Youth Murder charge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE