Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Green Zone

‘গ্রিন জ়োন’ স্ট্র্যান্ডে প্লাস্টিক নিয়ে প্রশ্ন

যে সব বিধিনিষেধের কথা প্রকাশ্যে এসেছে, তার মধ্যে প্লাস্টিক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের কোনও উল্লেখ নেই। আর এতেই ছড়িয়েছে বিভ্রান্তি। পরিবেশপ্রেমীদের প্রশ্ন, ‘‘গ্রিন জ়োনে যদি প্লাস্টিকই নিষিদ্ধ না হয়, তা হলে সেটা গ্রিন জ়োন হয় কী করে?’’

চন্দননগর স্ট্র্যান্ড। ফাইল চিত্র

চন্দননগর স্ট্র্যান্ড। ফাইল চিত্র

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
চন্দননগর শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২০ ০০:৫৮
Share: Save:

গঙ্গাপাড়ের ঐতিহ্যের শহর চন্দননগরকে আরও সুন্দর করে তুলতে নানা পদক্ষেপ করছে চন্দননগর পুরসভা এবং পুলিশ কমিশনারেট। সেই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে স্ট্র্যান্ড রোডকে ‘গ্রিন জ়োন’ হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে। এ ছাড়াও একগুচ্ছ বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে কাল, শনিবার থেকে। কিন্তু তার মধ্যে প্লাস্টিক ব্যবহার কি নিষিদ্ধ হচ্ছে?

যে সব বিধিনিষেধের কথা প্রকাশ্যে এসেছে, তার মধ্যে প্লাস্টিক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের কোনও উল্লেখ নেই। আর এতেই ছড়িয়েছে বিভ্রান্তি। পরিবেশপ্রেমীদের প্রশ্ন, ‘‘গ্রিন জ়োনে যদি প্লাস্টিকই নিষিদ্ধ না হয়, তা হলে সেটা গ্রিন জ়োন হয় কী করে?’’ চন্দননগরের পুর কমিশনার স্বপন কুণ্ডু অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা প্রাথমিক ভাবে পুরসভার তরফে নির্দেশিকা জারি করেছি। এর সুবিধা-অসুবিধা, মানুষের চাহিদা— সবটাই মাথায় আছে। পরবর্তী সময়ে কিছু সংযোজনের ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না। আমরা পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেই সব কিছু করছি।’’

চন্দননগর স্ট্র্যান্ড রাজ্য হেরিটেজ কমিশনের তালিকাভুক্ত। তাই স্ট্র্যান্ডের একধারে থাকা চন্দননগর কলেজ, কারেন্সি বিল্ডিং, ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউট, গির্জা— সবই হেরিটেজ তালিকাভুক্ত। কিছুদিন আগে শহরের পরিবেশপ্রিয় মানুষেরা পুরসভাকে স্ট্র্যান্ড এবং লাগোয়া এলাকা নিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছিলেন। তাতে স্ট্র্যান্ড সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয়ে তাঁরা অবহিত করেছিলেন। আদালত এবং স্কুল থাকায় এলাকাটিকে ‘শব্দহীন এলাকা’ হিসেবে চিহ্নিত করার দাবি জানানো হয়েছি। উঠেছিল প্লাস্টিক নিয়ন্ত্রণের দাবিও। কিন্তু পুরসভার নির্দেশিকায় প্লাস্টিকের পাশাপাশি শব্দ নিয়ন্ত্রণেরও উল্লেখ নেই বলে অভিযোগ।

অবশ্য সোমবার পুর কর্তৃপক্ষের জারি করা নির্দেশিকায় বলা হয়, জায়গাটির গুরুত্ব উপলব্ধি করে এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় রাখতে, সাধারণ মানুষের বাধাবিহীন চলাচল, বয়স্কদের প্রাতঃকালীন এবং সান্ধ্যকালীন ভ্রমণ, ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য কিছু ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। সেই সব ব্যবস্থার মধ্যে স্ট্র্যান্ডে বা সংলগ্ন রাস্তায় রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ ছাড়াও স্ট্র্যান্ডের বাতিস্তম্ভের উপরে ব্যানার, পোস্টার বা কোনও দল-সংগঠনের পতাকাও লাগানোও নিষিদ্ধ হচ্ছে।

পরিবেশপ্রেমীদের দাবি, আদর্শ আচরণবিধি সংক্রান্ত সরকারি বিজ্ঞপ্তি স্ট্র্যান্ডে টাঙিয়ে দেওয়া হোক। সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক ভাষা-শহিদ স্মারকটি। পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুধু বিধি আরোপ করলেই কিন্তু পুরসভা বা প্রশাসনের দায়িত্ব ফুরিয়ে যায় না। সেই বিধি মানুষ মানছেন কিনা তা শক্ত হাতে দেখতে হবে। না হলে এর কোনও মানে দাঁড়াবে না।’’

স্ট্র্যান্ডে নিয়মিত হাঁটতে আসা এক প্রবীণ বলেন, ‘‘আমরা এখানে দেখেছি, নানা রঙের বোতলে লুকিয়ে মদ্যপান করা হয়। প্রতিবাদ করলে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। তাই চুপ করে থাকি। এ সব কি বন্ধ হবে না?’’

অন্য বিষয়গুলি:

Chandannagar Strand Green Zone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE