Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
ফেরি নিরাপত্তা নিয়ে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগের পর দুই জেলার দুই ছবি

হাওড়ায় সন্ধ্যার পর নিষেধ ফেরি চলাচলে

জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রাতে দুর্ঘটনা ঘটলে উদ্ধারে সমস্যা হয়। নিরাপত্তা জোরদার করা যায় না। সেই কারণেই পরিবহণ দফতর সন্ধ্যায় নৌকা ও ভুটভুটি চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। এই নিয়ম মানা হচ্ছে কি না, তা পুলিশকে দেখার জন্য বলা হয়েছে।’’

বিজ্ঞপ্তি: সময় জানিয়ে লাগানো হয়েছে বোর্ড। নিজস্ব চিত্র

বিজ্ঞপ্তি: সময় জানিয়ে লাগানো হয়েছে বোর্ড। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৭ ০২:৩৬
Share: Save:

সন্ধ্যার পর থেকে এ বার হাওড়ার ১৫টি ফেরিঘাটে যাত্রী পরিবহণ নিষিদ্ধ করল হাও়়ড়া জেলা পরিষদ। ভুটভুটি বা নৌকা চলে হাওড়ার যে ফেরিঘাটগুলিতে, গত ১ জুলাই থেকে তাদের জন্যই নিষেধাজ্ঞা। হাওড়া জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, নিরাপত্তার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত।

জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রাতে দুর্ঘটনা ঘটলে উদ্ধারে সমস্যা হয়। নিরাপত্তা জোরদার করা যায় না। সেই কারণেই পরিবহণ দফতর সন্ধ্যায় নৌকা ও ভুটভুটি চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। এই নিয়ম মানা হচ্ছে কি না, তা পুলিশকে দেখার জন্য বলা হয়েছে।’’

জেলা পরিষদের অধীনে হাওড়ায় মোট ২৪টি ফেরিঘাট আছে। তার মধ্যে চালু রয়েছে ১৮টি। গাদিয়াড়া, বুড়ুল আর বাউড়িয়া ফেরিঘাটে লঞ্চ চলে। বাকি ১৫টি ফেরিঘাটে ভুটভুটি বা নৌকা চলে। ওই ফেরিঘাটগুলিতেও অন্য ফেরিঘাটের মতো আগে ভোর পাঁচটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত যাত্রী পরিবহণ চলত। এখন সেখানে যাত্রী পরিবহণের সময় সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা। ইতিমধ্যে বিষয়টি জানিয়ে খেয়াঘাটে বোর্ডও লাগানো হয়েছে।

কয়েকমাস আগে হুগলির তেলেনিপাড়ায় জেটি দুর্ঘটনার পর রাজ্য পরিবহণ দফতর ফেরিঘাটগুলির সংস্কার-সহ যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে এক গুচ্ছ পরিকল্পনা নেয়। তারই অঙ্গ হিসাবে ফেরিঘাটগুলিতে নৌকা চলাচলের নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু এমন নিয়ম জারিতে সমস্যায় পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। উলুবেড়িয়ার কাজিয়াখালি, কাঁটাখালি, হিরাগঞ্জ প্রভৃতি ফেরিঘাট পার হয়ে বহু মানুষ দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুরে যাতায়াত করেন। নিত্যযাত্রীদের মধ্যে রয়েছেন কয়েকশো চটকল শ্রমিক। চটকলে বিভিন্ন শিফটে কাজ হয়। রাতের শিফটে অনেকে কাজ করে রাত ১০টার ভুটভুটি চেপে বাড়ি ফিরতেন। নিত্যযাত্রী উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা খোকন রায় বলেন, ‘‘আমাকে কলকাতা থেকে রাত ৯টার সময় ফিরতে হয়। আমি রায়পুর খেয়াঘাট থেকে ভুটভুটি ধরি। এখন কী করব বুঝতে পারছি না। খেয়া বন্ধ হয়ে গেলে আমাকে অনেকটা ঘুরপথে ফিরতে হবে।’’ একই সমস্যায় পড়েছেন ভাটোরা-গোপীগঞ্জ খেয়াঘাটের যাত্রীরা। জয়পুরের ভাটোরা থেকে রূপনারায়ণ নদ পার হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের গোপীগঞ্জে যাতায়াত করেন হাজার হাজার মানুষ। এখানেও খেয়া চলত রাত ৯টা পর্যন্ত।

আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্রের ক্ষোভ, ‘‘নিরাপত্তার দিক তো নিশ্চয়ই দেখতে হবে। যাত্রীদের সুবিধার কথাও ভাবা উচিত ছিল। এক তরফা নিষেধাজ্ঞায় যাত্রীরা বিপাকে পড়েছেন।’’ অজয়বাবুর অবশ্য দাবি, ‘‘সময় বেঁধে দেওয়ার ফলে যদি যাত্রীদের অসুবিধা হয় তা হলে জেলা পরিষদের কাছে তা শিথিল করার জন্য আবেদন করা যেতে পারে। আমরা সেই আবেদন পরিবহণ দফতরের কাছে পাঠিয়ে দেব।’’

জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ কল্যাণ ঘোষ জানান, ফেরিঘাট থেকে ভুটভুটি এবং নৌকা তুলে দিয়ে তার বদলে ‘জল‌ধারা’ প্রকল্পে ছোট লঞ্চ চালুর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। খেয়াঘাটগুলি যাঁরা লিজ নিয়েছেন তাঁদের জলধারা প্রকল্পে লঞ্চ কিনতে বলা হচ্ছে। কল্যাণবাবু বলেন, ‘‘খেয়াঘাট মালিকদের এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাঁদের ঋণও দেওয়া হবে লঞ্চ কিনতে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE