উলুবেড়িয়া: নিয়ম মেনে পরিবহণ দফতরের কাছে নথিভুক্ত (রেজিস্ট্রেশন) না করালে আগামী ৩১ মার্চ-এর পর হাওড়া গ্রামীণ জেলায় বন্ধ করে দেওয়া হবে মোটর ভ্যান এবং টোটো।
কী সেই নিয়ম?
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মোটর ভ্যান এবং টোটোগুলিকে ই-রিকশায় পরিণত করতে হবে। যার অর্থ, মোটর ভেহিকেল আইনে যে ভাবে গাড়ি তৈরি করার কথা সেই নিয়মেই বদল আনতে হবে ভ্যান ও টোটোতে। এ বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞ সংস্থা নিয়োগ করেছে জেলা প্রশাসন। ঠিক হয়েছে মোটরভ্যান এবং টোটোর মালিকদের নিয়ে ওই সংস্থা কর্মশালার আয়োজন করবে। মোটর ভ্যান এবং টোটোগুলিকে ই-রিকশায় পরিণত করার পরে জেলা পরিবহণ দফতর সেগুলিকে লাইসেন্স দেবে। টোটোগুলিকে যাত্রী পরিবহণের লাইসেন্স দেওয়া হলেও মোটর ভ্যানগুলিকে শুধু পণ্য পরিবহণের লাইসেন্স দেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এখন মোটর ভ্যান এবং টোটোর উপরে পরিবহণ আইন বলবৎ করা যায় না। লাইসেন্স দেওয়া হলে তাদের উপরে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত যাত্রী বা টোটোগুলি বিমার সুবিধা পাবে। অন্য দিকে পণ্য পরিবহণের লাইসেন্সপ্রাপ্ত মোটরভ্যানগুলি যদি যাত্রী বহন করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারবে পরিবহণ দফতর। কিন্তু এই পরিকল্পনা মাঠে মারা যেতে বসেছে মোটরভ্যান এবং টোটোচালকদের আগ্রহ না থাকায়। মাস ছয়েক আগে জেলা প্রশাসন থেকে বিভিন্ন ব্লককে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, তারা যেন মোটরভ্যান এবং টোটোগুলিকে ই-রিকশায় পরিণত করতে মালিকদের মধ্যে প্রচার শুরু করে। তাঁদের নিয়ে কর্মশালা করার কথাও বলা হয়। কিন্তু প্রচারের পরেও মোটরভ্যান এবং টোটো মালিকদের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া মেলেনি।
সরকারের প্রস্তাবে কেন অনীহা মোটরভ্যান এবং টোটো মালিকদের?
তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ই-রিকশায় পরিণত করার জন্য প্রচুর টাকার দরকার। টোটোগুলির ক্ষেত্রে সেই খরচ প্রায় আশি হাজার টাকা। মোটরভ্যানের ক্ষেত্রেও খরচ পড়বে ৫০ হাজার টাকার মতো। জেলা প্রশাসন অবশ্য এই বাড়তি টাকার জন্য ব্যাঙ্কঋণের ব্যবস্থা করেছে। তাতেও অবশ্য আগ্রহ দেখা যায়নি টোটো মালিকদের। তাঁদের বক্তব্য, টোটো কেনার জন্য তাঁরা একবার ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়েছেন। তার বোঝা বইছেন। ফের ঋণ নিলে কী ভাবে তা শোধ করবেন!
পাঁচলা ব্লক প্রশাসনের এক কর্তা জানান, প্রচার শুনে বেশ কিছু মোটরভ্যান চালক এবং টোটো মালিক তাঁদের কাছে এসেছিলেন। তাঁদের নিয়ে দুটি কর্মশালাও হয়েছে। কিন্তু টাকার কথা শুনে অনেকেই পিছিয়ে গিয়েছেন। সামান্য কয়েকজন মোটরভ্যান ও টোটোচালক তাঁদের গাড়িকে ই-রিকশায় বদলেছেন। তাঁদের লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে পরিবহণ দফতরে।
জেলা প্রশাসন অবশ্য আর দেরি করতে রাজি নয়। ৩১ মার্চ-এর পর বেআইনি মোটরভ্যান ও টোটো বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের এক কর্তা। ৩১ মার্চের পর শুধু লাইসেন্সপ্রাপ্ত মোটরভ্যান এবং টোটোই চলাচল করতে পারবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy