Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কোটি টাকা জলকর বাকি, ধুঁকছে নদী-সেচ

নেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মী। তার উপর চাষিদের কাছে জল কর বাবদ বকেয়া প্রায় ১ কোটি টাকা। এই পরিস্থিতিতে হুগলির নদী সেচ প্রকল্পগুলি ধুঁকছে। চাষিদের কাছে বিপুল পরিমাণে বকেয়া ওই টাকা আদায়ের জন্য জেলাশাসকের শরণাপন্ন হয়েছে কৃষি সেচ (যান্ত্রিক) দফতর।

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৩৫
Share: Save:

নেই প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মী। তার উপর চাষিদের কাছে জল কর বাবদ বকেয়া প্রায় ১ কোটি টাকা। এই পরিস্থিতিতে হুগলির নদী সেচ প্রকল্পগুলি ধুঁকছে।

চাষিদের কাছে বিপুল পরিমাণে বকেয়া ওই টাকা আদায়ের জন্য জেলাশাসকের শরণাপন্ন হয়েছে কৃষি সেচ (যান্ত্রিক) দফতর। কৃষি সেচ দফতরের (যান্ত্রিক) নির্বাহী বাস্তুকার অমিত মল্লিক বলেন, “২০১৫-’১৬ আর্থিক বছর থেকে ৯০ লক্ষ টাকার উপর চাষিদের জলকর বাকি। এই টাকা চাষিদেরই ব্লকে জমা দেওয়ার কথা। বিষয়টি জেলাশাসককে জানিয়েছি। ব্লক প্রশাসনগুলি উদ্যোগী হলে ওই টাকা আদায় সম্ভব।’’

প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে (৩০ ডিসেম্বর) জেলা প্রশাসন থেকে এই মর্মে সমস্ত বিডিওকে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) শ্রাবণী ধর বলেন, “কৃষি সেচ দফতরের কর্মীরা বিডিওদের অধীনে বেতন পান। চাষিদের কাছে বকেয়া জলকর আদায়ের জন্য সমস্ত পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতির সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে বিডিওদের।’’

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, নদীবেষ্টিত হুগলি জেলায় নদী সেচ প্রকল্পের অভাব নেই। কিন্তু কর্মীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। জেলায় মোট নদী সেচ প্রকল্প চালু আছে ৩০৬টি। মাঠ পর্যায়ে কেন্দ্র পিছু ৩ জন করে মোট ৯১৮ জন কর্মী থাকার কথা। অথচ আছেন দু’শোরও কম। কর্মী সংখ্যা কম থাকায় এক একজনকে ৪ থেকে ৫টি কেন্দ্রের দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। এদিকে কেন্দ্র পিছু কমপক্ষে ৮০ থেকে ১৮০ একর জমিতে সেচের ব্যবস্থা রয়েছে। কেন্দ্র পিছু চাষির সংখ্যা থাকে ৩০০ থেকে ৪৫০ জন। একা কর্মীর পক্ষে এতজন চাষির জল বণ্টন ব্যবস্থা থেকে কর আদায়ের রসিদ তৈরি করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। কর্মী সংগঠনের জেলা সম্পাদক কল্লোল মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, “নদী সেচ প্রকল্পগুলির ভগ্নদশা স্রেফ কর্মীর অভাবে। দীর্ঘদিন কর্মী এবং আধিকারিকদের অভাবে তদারকি হয়নি বললেই চলে। এমনকী যন্ত্রাংশ বিকল হলে চাষিদের নিজেদের খরচে তা সারাতে হয়। ফলে জলকর আদায়ে চাপ দেওয়াও যায় না।’’

আর নদী সেচ প্রকল্পের আওতায় থাকা বিভিন্ন ব্লকের চাষিদের অভিযোগ, অধিকাংশ সেন্টার দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি। ফাটা বা ভাঙা পাইপ কিংবা যন্ত্রাংশ চুরি ইত্যাদি নানা কারণে চাষের এলাকা দিন দিন কমছে। পতিত হয়ে থাকছে তিন ফসলী বা বহু ফসলী বহু জমি।

গোঘাটের মঙ্গলগাঁতি গ্রামের সুকুমার রায়, দিঘড়া গ্রামের বলরাম সরকার, অমরপুরের বৃন্দাবন মালিক, কেশবপুর গ্রামের শেখ মকবুলের অভিযোগ, “২০ থেকে ২৫ বছর পাইপ লাইন মেরামত হয়নি। তার উপর কখনও যন্ত্রাংশ চুরি হচ্ছে। কখনও পাম্প বিকল ইত্যাদি নানা সমস্যা রয়েছে। জলকর সময়ে দিতে আমাদের আপত্তি নেই। যথাযথ পরিষেবা পেলে আগে যেমন ব্লকে জলকর পৌঁছে দিয়ে আসতাম। তেমনি দেব।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE