ধৃত পলাশ চট্টোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র।
এলাকার সিপিএম সমর্থক অসিত নন্দীকে খুনের অভিযোগে শনিবার রাতে গ্রেফতার করা হল জাঙ্গিপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের পলাশ চট্টোপাধ্যায়কে। জাঙ্গিপাড়া থেকেই তাঁকে ধরা হয়। ধৃতকে রবিবার শ্রীরামপুরের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট প্রোজ্জ্বল ঘোষের এজলাসে হাজির করানো হয়। বিচারক ধৃতকে তিন দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার আবেদন মঞ্জুর করেন। ধৃত অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মানেননি।
একুশে জুলাই কলকাতার দলীয় শহিদ সমাবেশ থেকে ফেরার পথে জাঙ্গিপাড়ায় সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সে দিনের ঘটনায় আক্রান্ত অসিতবাবুকে ভর্তি করানো হয়েছিল কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। শনিবার তিনি মারা যান। হামলার পরেই অসিতবাবুকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল পলাশবাবু-সহ চার তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। অসিতবাবুর মৃত্যুর পরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের মামলাও রুজু করেছে পুলিশ। পুলিশ জানায়, বাকি অভিযুক্তেরা পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।
এ দিন আদালত চত্বরে ধৃত পলাশবাবুর দাবি, ‘‘সে দিন মারধরের কোনও ঘটনাই ঘটেনি। আমি কোনও গোলমালে ছিলাম না। উনি অসুস্থ ছিলেন। তার জেরেই মৃত্যু হয়। সিপিএম আমাকে ফাঁসাচ্ছে।’’ কিন্তু অসিতবাবুর দেহে আঘাতের চিহ্ন কী করে এল, তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি পলাশববাবু। তবে, তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, অসিতবাবুর সঙ্গে পলাশবাবুর একটি পুরনো বিবাদ ছিল। অসিতবাবুর বাড়ির সামনে সরকারি জমিতে পলাশবাবুর এক ঘনিষ্ঠ একটি নির্মাণ করছিলেন। পলাশবাবু সেই কাজে সাহায্যও করছিলেন। অসিতবাবু প্রতিবাদ করেন। তা থেকেই গোলমাল। সিপিএমের অভিযোগ, সেই আক্রোশ মেটাতেই গত ২১ জুলাই হামলা হয়।
দলীয় নেতার গ্রেফতার হওয়া নিয়ে জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আইন আইনের পথেই চলবে। দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত কেউ অপরাধী হন না।’’ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে শাসকদলের এক নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করছে, সেটা এই সরকারের পক্ষেই সম্ভব। আগের আমলে জাঙ্গিপাড়াতেই সিপিএম একের পর এক বিরোধীদের খুন করেছে। কোনও ঘটনাতেই সিপিএমের লোকেদের না গ্রেফতার করা হয়েছে, না বিচার হয়েছে।’’
সিপিএমের জাঙ্গিপাড়া জোনাল কমিটির সম্পাদক অলোক সিংহরায় বলেন, ‘‘আমরা চাই, বাকি অভিযুক্তদেরও অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক। তাদের যেন উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়। এখানে যেন সন্ত্রাস বন্ধ হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy