বৃহস্পতিবার সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতিতে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র
আমপানে ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরে তৃণমূল পরিচালিত সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জয়ন্ত ঘোষকে সাসপেন্ড করেছিল শাসকদল। পদ ছাড়ার নির্দেশও দিয়েছিল তাঁকে। তারপর ২০ দিন কেটে গেলেও ইস্তফা দেননি জয়ন্তবাবু। তাঁর পদত্যাগের দাবিতে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টো থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতি কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূলের কয়েকশো কর্মী। তাঁদের হুঁশিয়ারি, জয়ন্তবাবু পদ না-ছাড়লে দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলন হবে।
ব্লকের ১৬টি পঞ্চায়েতের নিচুতলার বহু তৃণমূল কর্মী এ দিন বিক্ষোভে যোগ দেন। ছিলেন দলের ছাত্র, যুব এবং মহিলা সংগঠনের কর্মীরাও। তবে সাঁকরাইল বিধানসভা এলাকার পরিচিত কোনও নেতাকে বিক্ষোভে দেখা যায়নি। তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে বিক্ষোভকারীদের প্রশ্ন, জয়ন্তবাবু দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করার পরেও কেন হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন দলের নেতারা। এক ক্ষুব্ধ তৃণমূলকর্মীর কথায়, ‘‘জয়ন্তবাবু পদত্যাগ না করায় সাধারণ মানুষের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হচ্ছে। আমরা এর বিহিত চাই।’’ এ দিন বিক্ষোভে যোগ দেওয়া তৃণমূলকর্মী চঞ্চল পাল বলেন, ‘‘জয়ন্তবাবু পদত্যাগ না-করায়
এখন বিষয়টি হাসাহাসির পর্যায়ে পোঁছেছে। মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে গিয়ে আমরা জেরবার হচ্ছি। দলের নেতারাও হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন। তাই, আমাদেরই রাস্তায় নামতে হয়েছে।’’
জয়ন্তবাবুর বিরুদ্ধে শাস্তির কথা যিনি ঘোষণা করেছিলেন, সেই হাওড়া সদর তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ‘‘জয়ন্তবাবুর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছিলেন রাজ্য নেতৃত্ব। আমি ঘোষণা করেছিলাম মাত্র। তিনি পদত্যাগ না-করায় যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে রাজ্য নেতৃত্বই পদক্ষেপ করবেন। তাঁরা সব জানেন।’’
জয়ন্তবাবুকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। উত্তর অসেনি তাঁর মোবাইলে পাঠানো মেসেজের। তবে তাঁর শিবিরের অভিযোগ, ‘দলের একাংশের মদতে’ই পথে নেমেছেন নিচুতলার কর্মীরা।
কেন পদত্যাগ করছেন না জয়ন্তবাবু? তৃণমূলের একাংশের
ব্যাখ্যা পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী সভাপতি নিজে থেকে পদত্যাগ না-করলে কারও কিছু করার নেই। বোর্ড গঠনের আড়াই বছরের আগে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার সুযোগও পঞ্চায়েত আইনে নেই। সেই সুযোগটিই জয়ন্তবাবু নিচ্ছেন। যদিও অরূপবাবু বলেন, ‘‘আমি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’
আমপানে ক্ষতিপূরণের তালিকা তৈরিকে কেন্দ্র করে সাঁকরাইলে দুর্নীতি ও স্বজন-পোষণের অভিযোগ ওঠে। তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরে দেখা যায়, এমন অনেকের নাম ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় রয়েছে, যাঁদের বড়ির কোনও ক্ষতি হয়নি। এরপর দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হন তৃণমূলের একাংশ। অভিযোগ পেয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন জেলাশাসক। পরে নতুন তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়।
অন্য দিকে, তৃণমূলও দলীয় স্তরে অনুসন্ধান চালায়। দলীয় সূত্রে খবর, দুর্নীতির জন্য জয়ন্তবাবুকেই দায়ী করে তাঁকে শো-কজ করা হয়। পরে গত ১০ জুলাই তাঁকে সাসপেন্ড করে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদ ছাড়ার নির্দেশ দেয় দল। এরই মধ্যে এক ছাত্রনেতাকে মারধরের অভিযোগ ওঠে জয়ন্তবাবু এবং তাঁর কয়েকজন অনুগামীর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সাঁকরাইল থানায় এফআইআর-ও হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy