Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

হুগলিতে দল পরিচালনা নিয়ে ‘বেসুরো’ প্রবীর

বুধবার কোন্নগরে সাংবাদিক সম্মেলনের বিধায়কের আচমকা ওই বক্তব্যে তৃণমূলের অন্দরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। দলের নেতাদের একাংশ মনে করছেন, লোকসভা ভোট-উত্তর পরিস্থিতিতে দলীয় সংগঠনে প্রভাব কমেছে প্রবীরবাবুর। সেই কারণেই তিনি ‘বেসুরো’।

প্রবীর ঘোষাল (বাম দিকে)। ফাইল চিত্র

প্রবীর ঘোষাল (বাম দিকে)। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোন্নগর শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:১১
Share: Save:

দলের ‘দুর্নীতিপরায়ণ’ নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচির প্রাসঙ্গিকতা আদৌ থাকবে কিনা, সেই প্রশ্ন তুলে দিলেন উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। হুগলিতে দল পরিচালনা নিয়েও ক্ষোভের কথা জানালেন সংবাদমাধ্যমে। স্বীকার করলেন গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথাও।

বুধবার কোন্নগরে সাংবাদিক সম্মেলনের বিধায়কের আচমকা ওই বক্তব্যে তৃণমূলের অন্দরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। দলের নেতাদের একাংশ মনে করছেন, লোকসভা ভোট-উত্তর পরিস্থিতিতে দলীয় সংগঠনে প্রভাব কমেছে প্রবীরবাবুর। সেই কারণেই তিনি ‘বেসুরো’। এ নিয়ে দলের জেলা সভাপতি তথা প্রবীরবাবুর ‘বিরোধী শিবির’-এর নেতা বলে পরিচিত দিলীপ যাদবের প্রতিক্রিয়া, ‘‘উনি বিধায়ক। দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কিছু বলার থাকলে জেলা সভাপতি, পর্যবেক্ষক, দলনেত্রী সবাইকেই জানাতে পারেন। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে কতটা বলা যায়, সেটা বোঝা উচিত।’’

উত্তরপাড়ার বিধায়ক জানান, ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে রাজ্য সরকারের প্রকল্প, পরিষেবা নিয়ে প্রশংসা শুনছেন তাঁরা। কিন্তু ‘খারাপ অভিজ্ঞতা’ও হচ্ছে। প্রবীরবাবুর কথায়, ‘‘অনেকেরই মতামত, যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে, তাঁদের বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নিক। শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলে এই নেতারা অন্য দলে চলে যাবেন। তাতে আখেরে তৃণমূলের লাভ হবে।’’

হুগলিতে দল পরিচালনা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রবীরবাবু। তিনি বলেন, ‘‘দলে গোষ্ঠীকোন্দল আছে, এতে সন্দেহ নেই। দলনেত্রী কোন্দল বন্ধের চেষ্টা করছেন। কিন্তু হুগলিতে দলের কাজকর্ম যে ভাবে চলছে তার সঙ্গে দলনেত্রীর নির্দেশের অনেক গরমিল। সেটা বাঞ্ছনীয় নয়। এখন কঠিন সময়। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। কিন্তু সেই কাজে গাফিলতি হচ্ছে।’’ দলের গোষ্ঠী-বিভাজনে বিজেপি সুবিধা পাচ্ছে বলেও তাঁর ধারণা। পরিস্থিতি নিয়ে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে বিধায়ক জানান।

প্রবীরবাবুর বক্তব্য নিয়ে দলের অন্দরে চর্চা শুরু হয়েছে। তাঁর বিরোধী শিবিরের নেতাদের বক্তব্য, ২০১৫ সালে বিধায়ক হওয়ার পর থেকে জেলায় তৃণমূলের দলীয় সংগঠনেও প্রবীরবাবুর গুরুত্ব বেড়েছিল। কিন্তু লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরে তাঁর বিরোধী বলে পরিচিত দিলীপ যাদব জেলা সভাপতির দায়িত্ব পান। এই মুহূর্তে হুগলিতে দলের রাশ কার্যত দিলীপবাবুর হাতেই। প্রবীরবাবুর বিধানসভা এলাকায় কিছু ক্ষেত্রে তাঁর বিরোধী বলে পরিচিত নেতারা স্থানীয় সংগঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন। এই সব কারণেই প্রবীরবাবু ‘অসন্তুষ্ট’। ২১ জুলাইয়ের ‘শহিদ সমাবেশ’কে সামনে রেখে ডানকুনিতে দলের প্রস্তুতি সভায় তাঁর অনুপস্থিতি নিয়েও দলে প্রশ্ন উঠেছিল। সম্প্রতি শেওড়াফুলিতে দলের সভায় তিনি অভিযোগ করেন, বিধায়ককে না-জানিয়ে দলের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

দুর্নীতিপরায়ণ নেতাদের অন্য দলে পাঠানোর কৌশল নিয়ে প্রবীরবাবুর বক্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল বসুর কটাক্ষ, ‘‘ওদের দলে দুর্নীতিপরায়ণ বাছতে বসলে তো ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে। তখ‌ন দল করারই তো কেউ থাকবে না!’’

অন্য বিষয়গুলি:

Prabir Ghoshal TMC MLA Hoogly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy