Advertisement
E-Paper

৩টি পুকুর বোজানোর নালিশ হাওড়ায়

স্থানীয়দের অভিযোগ,  তৃণমূল শাসিত জগৎবল্লভপুর-২ পঞ্চায়েত প্রধান রঞ্জন কুণ্ডুর মদতে তিনটি পুকুর ভরাট করে বাণিজ্যিক চত্বর তৈরির কাজ চলছে।

অনিয়ম: পুকুরের মাঝ বরাবর উঠছে নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র

অনিয়ম: পুকুরের মাঝ বরাবর উঠছে নির্মাণ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৯ ০০:৩৯
Share
Save

বেআইনিভাবে পুকুর ভরাটের অভিযোগ উঠল হাওড়ার জগৎবল্লভপুরে। আর সেই কাজে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, তৃণমূল শাসিত জগৎবল্লভপুর-২ পঞ্চায়েত প্রধান রঞ্জন কুণ্ডুর মদতে তিনটি পুকুর ভরাট করে বাণিজ্যিক চত্বর তৈরির কাজ চলছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে জগৎবল্লভপুর ব্লক ভূমি সংস্কার দফতর পুলিশের কাছে বৃহস্পতিবার এফআইআর দায়ের করেছেন। তবে কাজ বন্ধ হয়নি। পুলিশের অবশ্য দাবি, কোনও এফআইআর মেলেনি। অভিযোগ এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শোভারানি কলেজের সামনে বড়গাছিয়া-উদয়নারায়ণপুর রাস্তার ধারে লাগোয়া তিনটি পুকুর আছে। অভিযোগ, সেগুলি ভরাট করে দোকানঘর তৈরি হচ্ছে। প্রথমে পুকুরের ধার থেকে কংক্রিটের থাম তুলে ঘর তৈরি হচ্ছে। তারপরে ছাই ফেলে পুকুরগুলি ভরাট করে ফেলা হচ্ছে। প্রায় দু’বছর ধরে প্রকাশ্যে এইভাবে পুকুরগুলি ভরাট করা হচ্ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান।

বাসিন্দাদের বক্তব্য, পুকুরগুলি তাঁরা ব্যবহার করেন। এলাকার জল নিকাশি ব্যবস্থায় পুকুরগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। এখানেই আছে কলেজ, ব্যাঙ্ক, হাসপাতাল, শিক্ষক প্রশিক্ষণকেন্দ্র। আগুন লাগলে জল নেওয়ার জন্য এই পুকুরগুলিকে ব্যবহার করা হয়। পুকুরগুলি বুজিয়ে দেওয়ার ফলে সমস্যা হবে বলে দাবি স্থানীয়দের।

স্থানীয় সূত্রের খবর, পুকুর বোজানোর কাজ শুরু হয় বছর দুই আগেই। প্রথমে একটি পুকুর বোজানো হয়। সেই সময়েই স্থানীয় বাসিন্দারা ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের কাছে অভিযোগ জানান। ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর ২০১৭ সালের ১৬ জুন থানায় এফআইআর করে। তারপরে কয়েক মাস পুকুর বোজানোর কাজ বন্ধ ছিল। সম্প্রতি ফের পুকুর বুজিয়ে দোকানঘর তৈরির কাজ চলছে। অনেকগুলি দোকানঘরের কাঠামো তৈরি হয়ে গিয়েছে। একেকটি পুকুরে গড়ে কুড়িটি করে দোকানঘরের পাকা কাঠামো তৈরি হয়েছে। দেখে শুনে বাসিন্দারা ফের ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে অভিযোগ জানান। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রঞ্জনবাবুই পুকুর মালিক এবং প্রোমোটারদের সঙ্গে যোগসাজস করে পুকুরগুলি ভরাট করছেন।

ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক গৌতম দাস বলেন, ‘‘বাসিন্দাদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেছি। দেখলাম সত্যিই পুকুর বোজানো হচ্ছে। এর আগেও আমরা ২০১৭ সালে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারপরেও কাজ বন্ধ হয়নি। সেই কারণে থানায় এফআইআর করেছি।’’

তবে ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দাদের একাংশ। পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে অন্যতম অভিযোগকারী তথা আইনজীবী সাবির আহমেদ বলেন, ‘‘দু’বছর আগে যখন আমরা অভিযোগ করেছিলাম, তারপরে একটা এফআইআর ছাড়া ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর কিছুই করেনি। তারপরেও তাদের নাকের ডগায় যেভাবে পুকুর ভরাট হচ্ছে তা বিস্ময়কর।’’ এ বিষয়ে গৌতমবাবু বলেন, ‘‘আমরা এফআইআর ছাড়া কিছু করতে পারি না। পুলিশই মামলা রুজু করে তদন্ত করবে।’’

পুলিশের পক্ষ থেকে আবার ব্লক ভূমি সংস্কার দফতরের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগে বলা হয়েছে, এই দফতরই তো পুকুর যাঁরা ভরাট করছেন তাঁদের ডেকে পাঠাবে। পুকুর ভরাট করা হলে তা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেবে। সেই নির্দেশ না মানলে তো মামলার প্রশ্ন।

রঞ্জন কুণ্ডু বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে পুকুর ভরাটের কোনও সম্পর্ক নেই। আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে।’’

TMC Jagatballabhpur

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}