Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪

খানাকুলে তৃণমূল নেতা খুনে ওসি সাসপেন্ড গোয়েন্দা ব্যর্থতায়

জেলা গ্রামীণ পুলিশ সুপার সুখেন্দু হিরা বলেন, “ওই খুনের ঘটনায় গোয়েন্দা ব্যর্থতায় ওসিকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বিভাগীয় তদন্ত চলছে।”

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খানাকুল শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০২:৩৭
Share: Save:

এলাকার তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় সাসপেন্ড হয়ে গেলেন খানাকুল থানার ওসি নিরুপম মণ্ডল।

শনিবার রাতে বাড়ির কিছুটা দূরে, দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে খানাকুল-২ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য, হরিশচক গ্রামের বাসিন্দা মনোরঞ্জন পাত্রের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। ওই রাতেই বিজেপির বিরুদ্ধে খুনের এবং পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে থানা ঘেরাও করেছিল তৃণমূল। রবিবার সকালেই সাসপেন্ড করা হয় নিরুপমবাবুকে। তাঁর জায়গায় ওই সকালেই খানাকুল থানার ওসি-র দায়িত্ব নেন রাজকিরণ মুখোপাধ্যায়।

জেলা গ্রামীণ পুলিশ সুপার সুখেন্দু হিরা বলেন, “ওই খুনের ঘটনায় গোয়েন্দা ব্যর্থতায় ওসিকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বিভাগীয় তদন্ত চলছে।” তাঁর বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিয়ে নিরুপমবাবু কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, “দফতরের নির্দেশ মতোই সিঙ্গুরে পুলিশ লাইনে আছি।”

পুলিশের বিরুদ্ধে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ ছিল, খুন হওয়ার দিন সাতেক আগে বিজেপির ছেলেরা মনোরঞ্জনবাবুকে ঘেরাও করে হুমকি দিয়েছিল গ্রামেই। তারপরেও তাঁর জন্য কোনও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়নি। যদিও খানাকুল থানা সূত্রে দাবি করা হয়েছে, মনোরঞ্জনবাবুকে ঘেরাওয়ের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। সে সময় ঘেরাওকারীরা কেউ না-থাকলেও পুলিশ মনোরঞ্জনবাবুকে লিখিত অভিযোগ জানাতে বলে। কিন্তু তিনি গুরুত্ব দেননি। পুলিশ তাঁকে বাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে পরিবারের পক্ষে কোনও অভিযোগ আছে কিনা জানতে চায়। কিন্তু কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

মনোরঞ্জনবাবু খুনের পরে চার দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু বুধবার বিকেল পর্যন্ত খুনের কারণ নিয়ে পুলিশের ধন্দ কাটেনি। নতুন করে আর কেউ গ্রেফতারও হয়নি। ঘটনার পরের দিন অভিযুক্ত ১৬ জনের মধ্যে শুধু তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। এসডিপিও (আরামবাগ) নির্মলকুমার দাস জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত চলছে।

এ দিকে, মনোরঞ্জনবাবুর মৃত্যু-রহস্য নিয়ে নানা চর্চাও জোরদার হচ্ছে। এমনকি, তিনি খুন হয়েছেন নাকি দুর্ঘটনায় মৃত্যু— এ প্রশ্নও উঠছে। দীর্ঘদিন ধরে আরামবাগ মহকুমায় রাজনৈতিক খুনের ঘটনায় মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়ে আসছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু মনোরঞ্জনবাবুর ক্ষেত্রে তাঁর দল দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠায় আরামবাগ হাসপাতালে। যেখানে ময়নাতদন্তের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই নেই। কিন্তু কেন, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি নেতাদের থেকে। তা ছাড়া, তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ের সামনে যদি খুন হয়ে

থাকে, তা হলে কেন কোনও প্রত্যক্ষদর্শী মিলল না? দলীয় কার্যালয়ে বিজেপির ভয়ে তৃণমূল কর্মীরা থাকতে না-ই পারেন, কিন্তু কৃষিজীবী গ্রামবাসীরা ওই চত্বরে বাদামের শুঁটি ছাড়ানো-সহ নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন রাত পর্যন্ত। তাঁরাও কিছু দেখতে পেলেন না কেন? সব প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজা চলছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Khanakul TMC Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy