Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
বাজি বিস্ফোরণে জখম তিন

রাবণ পোড়ার আগেই বিপত্তি

রবিবার দুপুরে শব্দ শুনে বাইরে বেরিয়ে আসেন ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল থানার রোহিণী এলাকার ধিতপুর গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরা দেখেন, বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছে স্থানীয় গুড়ন সিংহের মাটির বাড়ি।

পরবর্তী: বিস্ফোরণের পরে। নিজস্ব চিত্র

পরবর্তী: বিস্ফোরণের পরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাঁকরাইল শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:০৫
Share: Save:

পঞ্চমীর দুপুরে হঠাৎ বিকট শব্দ। পাক খেয়ে উঠছে ধোঁয়ার কুণ্ডলী। পোড়া বারুদের টেকা দায়।

রবিবার দুপুরে শব্দ শুনে বাইরে বেরিয়ে আসেন ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল থানার রোহিণী এলাকার ধিতপুর গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরা দেখেন, বিস্ফোরণে উড়ে গিয়েছে স্থানীয় গুড়ন সিংহের মাটির বাড়ি। কোনওরকমে বেরিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন গুড়ন ও তাঁর স্ত্রী নমিতা। তবে বিস্ফোরণে আহত হন তাঁরা। আহত তাঁদের প়ড়শি জলেশ্বরী সিংহও।

স্থানীয়দের দাবি, গুড়নের ওই মাটির বাড়ি আদতে বেআইনি বাজি তৈরির কারখানা। দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বাজি তৈরি হয়। যদিও ঝাড়গ্রামের জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর বলেন, “রাবণ পোড়ার অনুষ্ঠানের জন্য বাজি ছিল ওই বাড়িতে। ওখানে কোনও বাজি কারখানা ছিল না। তিন জন সামান্য জখম হন।” বিস্ফোরণের সূত্রেই সামনে আসছে এলাকায় গুড়নের প্রভাবের প্রসঙ্গও। স্থানীয় সূত্রের খবর, গুড়ন তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্যের তিনি ‘ঘনিষ্ঠ’ও। তৃণমূলের সাঁকরাইল ব্লক সভাপতি সোমনাথ মহাপাত্র বলেন, “গুড়ন দলের কর্মী নন। সদস্য হলেও হতে পারেন।” পঞ্চায়েত সমিতির স্থানীয় সদস্যের সঙ্গে গুড়নের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সোমনাথবাবুর জবাব, “জনপ্রতিনিধি এলাকায় জনসংযোগের জন্য বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলতেই পারেন। তাতে ঘনিষ্ঠতা প্রমাণিত হয় না।”

ঠিক কী হয়েছিল এ দিন? স্থানীয়েরা জানান, দুপুরে গুড়ন ও নমিতা বাড়িতে বাজি তৈরি করছিলেন। তখন কোনও ভাবে আগুন লেগে বিস্ফোরণ হয়।

সম্প্রতি দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে দু’জনের মৃত্যু হয়। কয়েক বছর আগে গোপীবল্লভপুরে বেআইনি বাজি তৈরির কারখানার বিস্ফোরণে মারা যান কয়েকজন। অভিযোগ, উৎসবের মরসুমে লোক দেখানো কিছু বাজি বিক্রেতার থেকে সরঞ্জাম ও শব্দবাজি আটক করেই দায়িত্ব সারে পুলিশ। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, গুড়নের বাড়িতে শব্দবাজি-সহ অন্য বাজি তৈরি ও মজুত করা হত। অভিযোগ, বিষয়টি পুলিশ জানলেও গুড়নের বাড়িতে তল্লাশি হয়নি। এ দিন বিস্ফোরণে আহতদের হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়নি। সাঁকরাইল ব্লকের ভাঙাগড় গ্রামীণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, বাজিতে আহত কেউ ভর্তি হননি। পুলিশের দাবি, চোট সামান্যই। স্থানীয়ভাবে তাঁদের চিকিত্সা হয়েছে।

স্থানীয়েরা বলছেন, রাবণ পোড়ানোর আগেই পুড়ল বাড়ি! ভাগ্য ভাল, এড়ানো গিয়েছে প্রাণহানি।

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Cracke Explosion Injury
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE