Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

মন্ত্রীর কাছে নালিশ, প্রধানের ঘরে তালা

সমস্যা নিরসনে সে দিনই আবার প্রধান মমতা কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্য এব দলীয় কর্মীকে নিয়ে ধনেখালিতে মন্ত্রী অসীমা পাত্রের কাছে যান।

বিপাকে। তালা খোলার পর নিজের ঘরে বসে প্রধান মমতা হাঁসদা। শুক্রবার দুপুরে।  —নিজস্ব চিত্র

বিপাকে। তালা খোলার পর নিজের ঘরে বসে প্রধান মমতা হাঁসদা। শুক্রবার দুপুরে। —নিজস্ব চিত্র

সুশান্ত সরকার
পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৯ ১০:২৮
Share: Save:

মন্ত্রীর কাছে বৃহস্পতিবার তাঁরা গিয়েছিলেন নালিশ জানাতে। নালিশ দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে, এলাকার অনুন্নয়ন নিয়ে, এখনও ভোটের প্রচারে ঠিকমতো নামতে না-পারা নিয়ে। এই ‘অপরাধে’ পান্ডুয়ার বেলুন-ধামাসিন পঞ্চায়েতের দলীয় প্রধানের ঘরে শুক্রবার তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আনিসুল ইসলামের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। পরে অবশ্য তালা খুলে দেওয়া হয়।

প্রধান মমতা হাঁসদার অভিযোগ, ‘‘বেলা ১১টা নাগাদ পঞ্চায়েতে আমার ঘরের সামনে তালা ঝুলিয়ে দেয় দলের লোকেরাই। তারপরে ফোন করে দলের ব্লক সভাপতির এক অনুগামী মন্ত্রীর বাড়ি যাওয়ার জন্য কৈফিয়ত চান। একই সঙ্গে জানতে চাওয়া হয়, ব্লক সভাপতি থাকতে কেন মন্ত্রীর বাড়িতে যাওয়া হল?’’ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন আনিসুর। তাঁর দাবি, ‘‘সব মিথ্যা কথা। কেউ প্রধানের ঘরে তালা ঝোলায়নি। কিছু দলীয় কর্মীর ক্ষোভ থাকতে পারে। সব অভিযোগ খতিয়ে দেখছি।’’

ওই পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। বুধবার পর্যন্ত পঞ্চায়েতের ছোট সরসা গ্রামে হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী রত্না দে নাগের সমর্থনে কোনও দেওয়াল-লিখন হয়নি। বিজেপি কিন্তু ইতিমধ্যেই তাদের প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থনে দেওয়াল-লিখনের কাজ শেষ করে ফেলেছে। বিজেপির ভয়েই তাঁরা দেওয়াল-লিখনে নামতে পারেননি এবং দলের স্থানীয় নেতৃত্ব কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ তুলেছিলেন ওই গ্রামেরই কিছু তৃণমূল কর্মী। এ সংক্রান্ত খবর আনন্দবাজারে প্রকাশিত হতেই বৃহস্পতিবার আনিসুল এবং পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ সঞ্জীব ঘোষ দলীয় কর্মীদের নিয়ে গিয়ে দেওয়াল লিখতে শুরু করেন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সমস্যা নিরসনে সে দিনই আবার প্রধান মমতা কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্য এব দলীয় কর্মীকে নিয়ে ধনেখালিতে মন্ত্রী অসীমা পাত্রের কাছে যান। অসীমাদেবীই দলের তরফে ওই ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত। ওই দলে থাকা এক পঞ্চায়েত সদস্য বলেন, ‘‘এলাকার বেশ কিছু পানীয় জলের কল খারাপ হয়ে গিয়েছে। মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে। ছোট সরসায় ঠিকমতো দেওয়াল-লিখন হচ্ছে না। ব্লক সভাপতি কোনও কথা শুনছেন না। গত এক মাসে মাত্র একদিন ওই গ্রামে গিয়েছেন তিনি। এ সব কথাই মন্ত্রীকে জানানোয় ব্লক সভাপতির অনুগামীরা চটেছে।’’

পঞ্চায়েতে তাঁর ঘরে তালা দেওয়ার কথা জানার পরেও এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ সেখানে যান প্রধান মমতা। তিনি বলেন, ‘‘গিয়ে দেখি বাইরের লোকজন বসে রয়েছেন। আমি যেতে অবশ্য উপপ্রধান সুজয় ধোলে দরজা খুলে দেন।’’ উপপ্রধান এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। মন্ত্রী অসীমাদেবী জানিয়েছেন, প্রতিদিন বিভিন্ন ব্লক থেকে বহু দলীয় কর্মী তাঁর কাছে আসছেন। বেলুন-ধামাসিনে ঠিক কী হয়েছে, তা খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE