মাঝরাস্তায় বাসে উঠেছিলেন এক তরুণী। টিকিট কাটার সময় নিজের গন্তব্য ঠিক করে বলতে পারছিলেন না। ঘুটঘুটে অন্ধকার রাস্তায় ওই তরুণীকে বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে দায় ঝেড়ে ফেলার ‘পরামর্শ’ দেন যাত্রীদের কেউ কেউ। চালক ও বাসকর্মী অবশ্য সে পথে যাননি। তরুণীকে বাসস্ট্যান্ডে এনে বেশ কিছুক্ষণ ধরে তাঁর ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। তাতে ফল না হওয়ায় বাসকর্মী ও চালক তাঁকে থানার পৌঁছে দেন। বুধবার রাতে এই মানবিকতার ছবি ধরা পড়ল হুগলির জাঙ্গিপাড়ায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন রাতে শ্রীরামপুর থেকে জাঙ্গিপাড়াগামী ৩১ নম্বর রুটের বাসে বনমালিপুর থেকে ওঠেন বছর সাতাশের ওই তরুণী। বাস কিছু দূর যেতে কর্মী কৃষ্ণ ভড় তাঁর থেকে ভাড়া চান। ওই তরুণী ১০০ টাকার একটি নোট দেন। কৃষ্ণবাবু বলেন, ‘‘মেয়েটি যে স্টপেজের নাম বলছিল, তা এ দিকে নেই। চালক সৌমিত্র সাধুখাঁকে বিষয়টি জানাই।’’ এর পরে সকলে ওই তরুণীর নাম কি, বাড়ি কোথায়— জানতে চান। তিনি অবশ্য তা বলতে পারেননি। তাঁকে নিয়ে চিন্তায় পড়ে যান চালক-বাসকর্মী। যাত্রীদের দু’এক জন তাঁদের পরামর্শ দেন, মেয়েটিকে সেখানেই নামিয়ে দিতে। না হলে তাঁদেরই হ্যাপা পোহাতে হবে। কৃষ্ণবাবু এবং সৌমিত্রবাবু অবশ্য তাতে রাজি হননি। বাসমালিক ফোনে সব শুনে জানান, মেয়েটিকে নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন। ততক্ষণে বাস জাঙ্গিপাড়া বাসস্ট্যান্ডে চলে এসেছে। যাত্রীরা সবাই নেমে গিয়েছেন। এর পরেই চালক ও কর্মী মেয়েটিকে নিয়ে জাঙ্গিপাড়া থানায় যান। কৃষ্ণবাবু বলেন, ‘‘এত রাতে একটা মেয়েকে একা ফেলে যেতে পারিনি। এতে কৃতিত্বের কোনও ব্যাপার নেই। আমরা নিজেদের কর্তব্য করেছি।’’ পুলিশ জানায়, মেয়েটির কথাবার্তা কিছুটা অসংলগ্ন। তবে যেটুকু জানা গিয়েছে, তাঁর বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের তপনে। বৃহস্পতিবার বাড়ির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে কী ভাবে তিনি এত দূরে চলে এলেন, তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy