আরামবােগ রেল অবরোধ।নিজস্ব চিত্র।
কৃষি আইন, শ্রম আইন-সহ কেন্দ্রের বিভিন্ন ‘জনবিরোধী’ নীতির প্রতিবাদে বৃহস্পতিবারের বন্ধে হুগলি জেলায় মিশ্র প্রভাব দেখা গিয়েছে। রাস্তায় লোকজনের উপস্থিতি ছিল নগণ্য। কিছু জায়গায় বাজার-দোকান খোলা ছিল। অনেক জায়গাতেই বন্ধ সফল করতে একযোগে পথে নামেন বাম এবং কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা। সকাল থেকে উত্তরপাড়া, হিন্দমোটর, শ্রীরামপুর, চন্দননগর, হুগলি, মগরা, পান্ডুয়া প্রভৃতি স্টেশনে বন্ধ সমর্থকরা অবরোধ করেন। ফলে, ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়। তবে, কোথাও অবরোধ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। জিআরপি এবং আরপিএফ অরবোধকারীদের সরিয়ে দেয়। জেলার কোথাও বেসরকারি বাস চলেনি। বিভিন্ন জায়গায় সড়ক অবরোধও হয়।
বাম ও কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, বন্ধ সর্বাত্মক। মানুষের সাড়ায় অক্সিজেন মিলল বলে দু’পক্ষের নেতারাই মনে করছেন। উল্টো দাবি করেছে রাজ্যের শাসকদল। তাঁদের মতে, বন্ধ ব্যর্থ।
এ দিন গোলমালের ভয়ে অনেকেই বাড়ি থেকে বেরোননি। সকালের দিকে অটো-টোটোতে কিছু মানুষ কর্মস্থলে যান। কোথাও কোথাও তাঁদের অটো-টোটো থেকে নেমে যেতে অনুরোধ করেন বন্ধ সমর্থকেরা। তবে বেশিরভাগ লোকই তাতে সাড়া দেননি। ডানকুনির হাউজ়িং মোড়ে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ হয়। উত্তরপাড়া কলেজ মোড়ে জিটি রোডে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। কিছু জায়গায় বন্ধ সমর্থকদের চড়া মেজাজও দেখা গিয়েছে। পান্ডুয়ার বিভিন্ন জায়গায় মিছিল হয় স্থানীয় সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেনের নেতৃত্বে। পান্ডুয়ায় রেল অবরোধেও শামিল হন এই বাম বিধায়ক।
সকাল ১০টা নাগাদ পান্ডুয়া হাটতলায় একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে বন্ধ সমর্থকেরা ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ। সেখানে এটিএমের কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। ভিতরে ঢুকে ব্যাঙ্ক বন্ধের দাবি জানানো হয়। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার রাজকুমার মিত্র বলেন, ‘‘ঘটনার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। অনুমতি পেলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে।’’ আমজাদের দাবি, বন্ধ সমর্থকদের কেউ এ কাজ করেননি।
হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভায় কর্মীরা কাজে যোগ দিতে গেলে বনধ্ সমর্থনকারীরা বাধা দেন। দু’পক্ষের বচসা হয়। পুলিশ পরিস্থিতি সামলায়। কিছু জায়গায় পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান অবরোধকারীরা। সকালে আরামবাগের কালীপুর এবং নেতাজি স্কোয়ারে অবরোধ হয় ঘণ্টাখানেক। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। ১১ জনকে আটক করা হয়। প্রতিবাদে এলাকায় মিছিল করে সিপিএম। হরিপালের কৈকালায় ১২ নম্বর রুটে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান অবরোধকারী বাম কর্মী-সমর্থকরা। বৈদ্যবাটীতে বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু জায়গায় গাড়ি আটকান বন্ধ সমর্থকেরা। বৈদ্যবাটী, চাঁপদানি, শেওড়াফুলি, শ্রীরামপুর প্রভৃতি জায়গায় ব্যাঙ্ক বন্ধ ছিল।
ট্রেন চললেও যাত্রী ছিল হাতেগোনা। সরকারি বাস চললেও যাত্রী না থাকায় সেগুলি ফাঁকাই ছুটেছে। একই কথা প্রযোজ্য গঙ্গায় ফেরি চলাচলের ক্ষেত্রেও। দিল্লি রোড, জিটি রোড, অহল্যাবাই রোড, অসম লিঙ্ক রোড— কোথাও গাড়ির চাপ ছিল না। তবে, পেট্রোল পাম্প খোলা ছিল। আরামবাগ শহরে সকালে অল্প কিছু দোকান খোলা ছিল। সিপিএম কর্মীদের আবেদনে অনেকে দোকান বন্ধ করে দেন। খানাকুল, পুরশুড়া, গোঘাটের মূল বাজারগুলি বন্ধ ছিল। জেলায় সরকারি দফতরে হাজিরা স্বাভাবিক ছিল বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy