দুঃস্থ মানুষের হাতে সাহায্য তুলে দিচ্ছেন প্রবীর পাল। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
দরকার ছিল ৩৯ হাজার টাকা। গৃহ-শিক্ষকতা করে অর্জিত অর্থের ৭৫ শতাংশ আর সরকারের থেকে পাওয়া প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা জমিয়ে কাজটা করেই ফেললেন গোঘাটের প্রবীরকুমার পাল।
শুক্রবার একশো জন দুঃস্থ মানুষকে মশারি দিয়েছেন গোঘাটের মিরগা গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রবীর। তাতে তাঁর খরচ হয়েছে ৩৯ হাজার টাকা। ‘‘ডেঙ্গি থেকে ওঁদের বাঁচাতে এ বার মশারি দিলাম,’’ বললেন প্রবীর। ওই দুঃস্থদের জন্য দুপুরের খাবারের আয়োজনও করেছিলেন তিনি। এমনকি, ওই একশো জনের যাতায়াতের খরচও বহন করেছেন তিনি। আজ, শনিবার আরও ৩০ জনের হাতে মশারি তুলে দেবেন প্রবীর।
গত ১২ বছর ধরে লক্ষ্মীপুজোর দিন দুঃস্থদের কিছু না কিছু দান করেন প্রবীর। গতবার দিয়েছিলেন কম্বল। প্রবীর বলেন, “সব মিলয়ে এ বার ৩৯ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। শুধু পায়ে ভর দিয়ে চলতে পারি না। চলাচল করতে হাতেও ভর দিতে হয়। কিন্তু তাতে আমার কিছু আটকাচ্ছে না। পড়িয়ে যা পাই তার ৭৫ শতাংশ রেখে দিই এই কাজের জন্য ।”
উচ্চমাধ্যমিকে দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করার পরে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে আর পড়াশোনা করতে পারেননি। প্রতিবন্ধকতার কারণে স্বাভাবিক ভাবে হাঁটাচলা করতে পারেন না। এখন গৃহ-শিক্ষকতা করেন বছর বেয়াল্লিশের প্রবীর।
প্রবীর গৃহ-শিক্ষকতা করে মাসে ৫ হাজার টাকা আয় করেন। প্রতিবন্ধী ভাতা পান মাসে ১ হাজার টাকা। তিনি বলেন, “গৃহশিক্ষকতা করে যা উপার্জন করি তা থেকে প্রত্যেক মাসে কিছু জমাই। তার সঙ্গে যোগ হয় প্রতিবন্ধী ভাতা। সেই জমা অর্থেই দুঃস্থদের সেবা করি। প্রথম বছর ৩০ জনকে কিছু দিতে পেরেছিলাম।’’
প্রতিবছর শিক্ষক দিবসের দিন হুইল চেয়ারে বসে মিরগা চাতরা, বেলি, কুলকি, বালিবেলার মতো গ্রামে ঘুরে ঘুরে গাছের চারা রোপণ করেন প্রবীর। এলাকায় তিনি জনপ্রিয়। ২০০১ সালে হুইল চেয়ারটি তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁর কাজকে সম্মান জানাতে বছর চারেক আগে গোঘাট থানার তরফে তাঁকে একটি মোবাইল ফোন উপহার দেওয়া হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy