এক ফোঁটা জলের জন্য দিনভর এভাবেই হাহাকার।—নিজস্ব চিত্র।
একটু জল পাই কোথায় বলতে পারেন? সাঁকরাইলের রঘুদেববাটীর বাসিন্দাদের এখন এটাই ‘কমন’ প্রশ্ন।
কোথাও মিলছে না পানীয় জল। আবার কোথাও পানীয় জল মিললেও সেটি পরিস্রুত নয়। কেউ গাঁটের কড়ি খরচ করে জল কিনে খাচ্ছেন। আবার কেউ ১ কিলোমিটারের বেশি পথ উজিয়ে জল বয়ে নিয়ে আসছেন। গরমের দিনগুলি এভাবেই কাটছে সাঁকরাইল ব্লকের এই জনপদে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত রঘুদেববাটি পঞ্চায়েত এলাকায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বসবাস করেন। এলাকার মানুষের ভরসা বলতে পাশের সারেঙ্গা পঞ্চায়েতের হীরাপুরে জনস্বাস্থ্য দফতরের একটি পাম্প। রঘুদেববাটীর বিস্তীর্ণ এলাকায় পাইপলাইনের মাধ্যমে ওই পাম্পের জল সরবরাহ করা হয়। এছাড়া কয়েকটি জায়গায় রয়েছে সজলধারা প্রকল্পের পাইপ লাইন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পাইপ লাইনের মাধ্যমে রাস্তার পাশের ট্যাপ কলগুলিতে সারা দিনে তিন বার জল আসার কথা। কিন্তু সেটা আসে না। কন্যামণি, গন্ধর্বপুর-সহ রঘুদেববাটীর বিভিন্ন এলাকায় পাইপলাইনে নিয়মিত জল আসে না। আবার যেটুকু জল আসে সেটাও পরিস্রুত নয়। মিস্ত্রিপাড়া, মণ্ডল পাড়া, সিপাই পাড়া, সর্দার পাড়া, মল্লিক পাড়ার মতো এলাকায় তো এখনও পাইপ লাইনটাই পৌঁছায়নি।
গন্ধর্বপুরের বাসিন্দা মুথুর দাস, পম্পা দাসদের দাবি, ‘‘আমাদের এখানে জলের পাইপ লাইন রয়েছে। কিন্তু সেখানে সব সময় জল আসে না। গত তিনদিন ধরে এক বারও জল আসেনি। এলাকার একটি মাত্র নলকূপের উপরেই সবাইকে নির্ভর করতে হচ্ছে। এই গরমে খুব কষ্টে রয়েছি।’’ সর্দারপাড়ার বাসিন্দাদের জল আনার জন্য এক কিলোমিটারের বেশি পথ উজিয়ে মিতালি পাড়া যেতে হয়। হাসপাতাল পাড়ার বাসিন্দাদের পানীয় জল আনতে হচ্ছে মুচির মাঠ থেকে। অনেকে আবার টাকা দিয়ে জল কিনে খাচ্ছেন। রঘুদেববাটির বিভিন্ন এলাকায় ২০ লিটারের পানীয় জলের জার বিকোচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকায়।
সাঁকরাইল পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা তথা রঘুদেববাটির বাসিন্দা তারক নস্করের দাবি, ‘‘শাসক দলের উদাসীনতার জন্যই এই সমস্যা। সব জেনেও পঞ্চায়েত এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’
সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন তৃণমূল পরিচালিত রঘুদেববাটী পঞ্চায়েতের প্রধান পম্পা রায়। তিনি বলেন, ‘‘জল সঙ্কটের কথা জানি। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর ও বিধায়কের সঙ্গে এই নিয়ে আলোচনা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy