এগিয়ে আসছে নদী। হাওড়ার গাদিয়াড়ায় চলছে বাঁধরক্ষার কাজ। নিজস্ব চিত্র
বাগনানের নসিবপুর-দ্বীপামালিতার পরে এ বারে শ্যামপুরের গাদিয়াড়া।
রূপনারায়ণের পরে হাওড়ার আর এক জনপদের বাঁধে ধস নামাল হুগলি নদী। বুধবার দুপুরে গাদিয়াড়া পর্যটনকেন্দ্রের সামনেই খিরিশতলায় হুগলির নদীর বাঁধের প্রায় ৪০ ফুট ধসে যায়। আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। সেচ দফতরের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগও ওঠে। গত সোমবার বাগনানের নসিবপুরে এবং দ্বীপামালিতায় রূপনারায়ণের পাড় ভেঙে তলিয়ে যায় নদীগর্ভে।
সেচ দফতর মেরামতির কাজ শুরু করলেও গাদিয়াড়ায় ওই দফতরের কর্তাদের টিকি দেখা যায়নি বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত ১০০ দিনের প্রকল্পে জরুরি ভিত্তিতে ধস মেরামতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্যামপুর-১ ব্লক প্রশাসন। বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হয়ে যায় সেই কাজ। এখন ভরা কোটাল চলছে। হুগলি ও রূপনারায়ণ— দুই নদনদীই কানায় কানায় পূর্ণ। জল এসে ধাক্কা মারছে ধসের অংশে। তাতে যে কোনও মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে শুধু ওই পর্যটনকেন্দ্র নয়, শ্যামপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন বাসিন্দারা।
খিরিশতলা থেকেই হুগলি নদী বাঁক নিয়ে মোহনার দিকে চলে গিয়েছে। ফলে, নদীর জল এমনিতেই জোয়ারের সময় এই এলাকায় বাঁধে নিয়মিত ধাক্কা মারে। তার উপরে এখানে বাঁধ প্রায় ৫০০ ফুট নীচু। বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, বাঁধের মাত্র এক ফুট নীচ দিয়ে প্রবল বেগে জল বইছে। সেচ দফতর প্রতি বছর এখানে বাঁধ উঁচু করে দেয়। কিন্তু তা বর্ষার সময়ে ভাঙে।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, হেলাফেলা করে কাজটি করা হয়। সেই কারণেই তা প্রতি বছর ভাঙে। এ বছর করোনা আবহে সেই কাজটুকুও করা হয়নি। ফলে, বাঁধের নিচু অংশ দিয়ে নদীর জল উপচে পড়ার উপক্রম। ধস নামায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়েছে।বিডিও সঞ্চয়ন পান বলেন, ‘‘৫০০ ফুট নিচু অংশ পাকাপাকি ভাবে ঢালাই করে উঁচু করার জন্য বহুবার সেচ দফতরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কোনও কাজ হয়নি। পাকাপাকি ভাবে ঢালাই করে বাঁধ উঁচু করা না হলে বিপদ কাটবে না।’’
এলাকাটি পড়ে বাণেশ্বরপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। প্রধান আব্দুর রহমান বলেন, ‘‘এ বছর সেচ দফতর বাঁধ উঁচু করার কাজে হাতই দিল না। বার বার অনুরোধ করায় শেষ পর্যন্ত তারা আমাদের জানায়, একশো দিনের কাজ প্রকল্পে যেন আমরা মাটি ফেলে আপাতত এই অংশটি উঁচু করে দিই। কিন্তু ওরা এ কথা জানিয়েছে ভরা বর্ষার মরসুমে। মাঠঘাট ডুবে গিয়েছে। মাটি পাব কোথায়?’’তবে, এখন পরিস্থিতি গুরুতর হওয়ায় শেষ পর্যন্ত মেরামতির কাজ করতে ১০০ দিনের কাজকেই হাতিয়ার করছে ব্লক প্রশাসন। বিডিও বলেন, ‘‘আপাতত ১০০ দিনের প্রকল্পে জরুরি ভিত্তিতে ধস মেরামত করা এবং বাঁধ উঁচু করার কাজ করার জন্য পঞ্চায়েতকে বলা হয়েছে।’’ প্রধান বলেন, ‘‘শিয়রে শমন। একটা উঁচু জায়গা খুঁজে পেয়েছি। সেখান থেকে মাটি কেটে বাঁধ মেরামত করার কাজ শুরু করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy