Advertisement
E-Paper

ডেঙ্গি-যুদ্ধে এ বার রিষড়ায় অস্ত্র ড্রোন

প্রশাসনের আধিকারিকরা জানান, পরিস্থিতি বুঝতে পর্যবেক্ষণ (ক্লোজ মনিটরিং) করা হবে। নিকাশি নালায় কোথাও জল জমে থাকলে, সেই জায়গা চিহ্নিত করে তা পরিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ব্যবস্থা: পুরসভার উদ্যোগে চলছে স্প্রে। নিজস্ব চিত্র

ব্যবস্থা: পুরসভার উদ্যোগে চলছে স্প্রে। নিজস্ব চিত্র

প্রকাশ পাল

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০১৯ ০২:০৬
Share
Save

কার্তিক মাস শেষের মুখে। অথচ হুগলির রিষড়া শহরে ডেঙ্গির প্রকোপ কমার কোনও লক্ষণই নেই। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ্ন বাড়ছে। এই অবস্থা মোকাবিলায় রিষড়ায় বৈঠক হয়ে গেল জেলা প্রশাসনের তরফে। প্রশাসন সূত্রে খবর, নিয়মিত এলাকা পরিষ্কারের পাশাপাশি ডেঙ্গির ‘সোর্স’ খুঁজতে ড্রোন ব্যবহারের ভাবনা-চিন্তাও শুরু হয়েছে। জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘কয়েকটি জায়গায় সমস্যা রয়েছে। নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সেগুলি চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা হবে। পরিস্থিতি বাগে আনতে প্রশাসন সচেষ্ট।’’

প্রশাসনের আধিকারিকরা জানান, পরিস্থিতি বুঝতে পর্যবেক্ষণ (ক্লোজ মনিটরিং) করা হবে। নিকাশি নালায় কোথাও জল জমে থাকলে, সেই জায়গা চিহ্নিত করে তা পরিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে জ্বরের তথ্য সংগ্রহ করবেন। মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি কোথাও জল জমে থাকলে সেই ব্যাপারেও তাঁরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন। ডেঙ্গির ‘সোর্স’ খুঁজতে গলিঘুঁজিতে প্রয়োজনে ড্রোনের সাহায্যও নেওয়া হবে।

দুর্গাপুজোর সময় থেকেই রিষড়ায় ডেঙ্গি মাথাচাড়া দিতে শুরু করে। রোগীর ভিড় বাড়ে চিকিৎসকের চেম্বারে। ইতিমধ্যে অনেককেই হাসপাতালে বা নার্সিংহোমে ভর্তি হতে হয়েছে। সম্প্রতি ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের নয়াবস্তি শ্রীকৃষ্ণনগরের বাসিন্দা এক যুবকের মৃত্যুকে ঘিরে জল্পনা চরমে ওঠে। তাঁর পরিবারের লোকজনের দাবি, তিনি ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতর জানায়, ডেঙ্গি হলেও তা মৃত্যুর কারণ ছিল না। এনসেফ্যালাইটিসে তিনি মারা গিয়েছেন। রিষড়া স্টেশনের পশ্চিম দিকেই ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি বলে অভিযোগ। এখানকার মোড়পুকুর নবীনপল্লি, ১ নম্বর গভর্নমেন্ট কলোনির হরিসভা, সুভাষনগর তালপুকুর, নয়াবস্তি শ্রীকৃষ্ণনগর, ৩ নম্বর নতুনগ্রাম প্রভৃতি জায়গা থেকে ডেঙ্গির খবর মিলেছে। শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে জ্বরে ভর্তির জ‌ন্য শয্যা বাড়ানো হবে বলে এ দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় বলে জেলাশাসক জানান।

বেহাল নিকাশির কারণে পরিস্থিতি জটিল হয়েছে বলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ। ওই অভিযোগে দফায় দফায় অবরোধও হয়। পুর-কর্তারাও মানছেন, কেএমডিএর নিকাশি নালা পরিকল্পনা অনুযায়ী না হওয়ায় জল জমার সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলছেন।

সরকারি সূত্রের খবর, সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী মশার লার্ভা মারতে এক মাস অন্তর তেল এবং পাউডার দেওয়ার কথা। এ বার জলের সঙ্গে ওই পাউডার দেওয়া হবে। আজ, বুধবার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে। জেলাশাসক জানান, বন্ধ কারখানার চৌহদ্দি, ফ্ল্যাট, রেলের জমিতেও পুরসভার কর্মীদের নজরদারি চালাতে হবে। গাপ্পি মাছ মশার লার্ভা খায়। সেই জন্য পঞ্চাশ হাজার গাপ্পি মাছ নর্দমা বা বদ্ধ জলাশয়ে ছাড়া হবে। পুর-কর্তৃপক্ষ বারে বারেই দাবি করে এসেছেন যে, ডেঙ্গি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই পুরসভার তরফে করা হচ্ছে। যদিও প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘কাজে কিছু ফাঁক ছিল। সেগুলো পূরণ করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।’’

রিষড়া পুরসভার ভবনে ওই বৈঠকে জেলাশাসক ছাড়াও অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) প্রলয় মজুমদার, শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক তনয় দেব সরকার, সিএমওএইচ শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, ডেপুটি সিএমওএইচ (২) অরবিন্দ তন্ত্রী, এসিএমওএইচ (শ্রীরামপুর) মৌসুমী পাল বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। পুরপ্রধান বিজয়সাগর মিশ্র-সহ অন্যান্য কাউন্সিলর, আধিকারিক, স্বাস্থ্যকর্মীরাও ছিলেন।

Dengue Rishra Rishra Municipality

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}