নতুন করে সাজবে এই ভবন। নিজস্ব চিত্র
প্রায় সাড়ে তিন বছর বন্ধ থাকার পরে অবশেষে চুঁচুড়া রবীন্দ্রভবনের সার্বিক সংস্কারের কাজ শুরু হল। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী নভেম্বরে একেবারে নতুন সাজে শহরের সংস্কৃতি চর্চার এই কেন্দ্রটি আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা।
নয়া সাজের রবীন্দ্রভবনে বাড়বে আসনসংখ্যা। আগে প্রেক্ষাগৃহটি ছিল ৭১২ আসনের। এ বার তা বাড়িয়ে ৭৫০ আসনের করা হচ্ছে। প্রেক্ষাগৃহটি হচ্ছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। নতুন মঞ্চ, নতুন পর্দা, আধুনিক আলো-শব্দের ব্যবস্থা— থাকছে সবই।
১৯৮০ সালে তৈরি হওয়ার পর থেকে কখনও রবীন্দ্রভবনের সার্বিক সংস্কার হয়নি। ফলে, গঙ্গাপাড়ের ভবনটি দীর্ঘদিন আগেই বেহাল হয়ে পড়েছিল। বর্ষায় ভবনের ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ত। বসার আসনগুলি সংস্কারের অভাবে অধিকাংশই ভেঙে গিয়েছিল। এ জন্য দুর্ঘটনায় আহতও হয়েছেন অনেক দর্শক। নিতান্ত নিরুপায় না-হলে এমন একটি কেন্দ্রে অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চাইতেন না বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলি। তারা তো বটেই, শহরের সংস্কৃতিমনস্ক মানুষও দীর্ঘদিন ধরে রবীন্দ্রভবন সংস্কারের দাবি জানাচ্ছিলেন।
বেশ কয়েক বছর আগে রবীন্দ্রভবনের সার্বিক সংস্কারে উদ্যোগী হয় জেলা প্রশাসন। এ জন্য রাজ্যের তথ্য-সংস্কৃতি দফতর ১ কোটি ৮ লক্ষ টাকা মঞ্জুরও করে। পূর্ত দফতর সংস্কারের কাজে হাত দেয়। এ জন্য ২০১৩ সালের ১ এপ্রিল থেকে দর্শদের জন্য বন্ধ হয়ে যায় রবীন্দ্রভবনের দরজা। সেই সময় এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার সময়সীমা ঠিক হয়েছিল। কিন্তু কয়েক মাস সংস্কারকাজ চলার পরেই বন্ধ হয়ে যায়। তার পরে এতদিন বাদে গত রবিবার থেকে শুরু হল নতুন ভাবে সংস্কারের কাজ।
কেন এত দেরি?
জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, আর্থিক জটিলতার কারণেই সংস্কারকাজ বন্ধ ছিল। চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদারের উদ্যোগেই সংস্কারকাজে গতি আসে। তিনি জানান, সার্বিক সংস্কারের জন্য যে টাকার প্রয়োজন তার ৬০ শতাংশ কেন্দ্র সরকারের এবং ৪০ শতাংশ রাজ্য সরকারের দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কেন্দ্র টাকা না-দেওয়ার ফলেই দীর্ঘদিন ধরেই সংস্কারের কাজ বন্ধ থাকে। নতুন ভাবে প্রকল্প তৈরি করে গত ১১ জুলাই তা রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছিল। রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর সংস্কারের জন্য জন্য প্রায় ২ কোটি ২ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করেছে।
তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের উদ্যোগেই সংস্কারের কাজ শুরু হচ্ছে। নভেম্বরের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছি। তা পরেই নতুন সাজে রবীন্দ্রভবন সকলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।’’
চুঁচুড়া রবীন্দ্রভবনে শুধু শহরের সাংস্কৃতিক সংস্থা বা সংগঠনই অনুষ্ঠান আয়োজন করত না, বাঁশবেড়িয়া, বলাগড়, পান্ডুয়া, পোলবা, ধনেখালির মতো এলাকার সংস্থাও আসত। এখন তারা অনেক ক্ষেত্রেই ব্যবহার করছে চন্দননগর রবীন্দ্রভবন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে যাতায়াতের সমস্যা থেকে যাচ্ছেই। চুঁচুড়া রবীন্দ্রভবন নতুন ভাবে চালু হলে সমস্যা মিটবে বলেই মনে করছে তারা। এখন শুধু অপেক্ষা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy