প্রতীকী ছবি।
সর্বোচ্চ ৪৫০ বন্দি রাখা যায় হুগলি জেলা সংশোধনাগারে। কিন্তু এখন সেখানে আছেন অন্তত সাড়ে ৭০০ বন্দি!
ওই পরিসংখ্যান দিচ্ছেন জেল কর্তৃপক্ষই। এই অবস্থায় ওই জেলের করোনা সংক্রমিত বিচারাধীন বন্দির মৃত্যুতে বাকিদের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি কতটা রক্ষিত হচ্ছে এবং কারাকর্মী ও আধিকারিকরাই বা কতটা সুরক্ষিত, সে প্রশ্ন উঠছে।
কারারক্ষীদেরই একাংশ দাবি করেছেন, করোনার জন্য আলাদা করে বন্দিদের ক্ষেত্রে কোনও সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে না। এক কারারক্ষী বলেন, ‘‘করোনায় দূরত্ব-বিধি মানা খুব জরুরি। কিন্তু জেলবন্দির সংখ্যা প্রতিদিন লাফিয়ে বাড়ায় দূরত্ব-বিধি মানা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে, বন্দি এবং আমাদের মতো কর্মীদের বিপদ প্রতিদিন বাড়ছে। কারা দফতরের উচিত, নতুন বন্দিদের জন্য আলাদা সেল করা। তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো। সেই রিপোর্ট নেগেটিভ হলে তবেই তাঁদের সাধারণ বন্দিদের সঙ্গে রাখা উচিত।’’
জেলবন্দিদের ক্ষেত্রে আলাদা স্বাস্থ্য-বিধি কিছু নেই বলে জানিয়ে হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে যা, তাই কার্যকর করতে হবে বন্দিদের ক্ষেত্রেও। অর্থাৎ, বন্দিরা দূরত্ব-বিধি মানছেন কিনা এবং মাস্ক পরছেন কিনা, তা নিশ্চিত করতে হবে জেল কর্তৃপক্ষকে।’’
তাঁরা চেষ্টা করছেন বলে দাবি করেছেন হুগলি জেলা সংশোধনাগারের সুপারিন্টেন্ডেন্ট বিনোদ কুমার। তিনি বলেন, ‘‘জেলে অন্তত সাড়ে সাতশো বন্দি আছেন। বিচার বিভাগের কাজ এখন খুব ধীরে হওয়ায় বন্দিদের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে যতটা সম্ভব আমরা চেষ্টা করছি।’’
সোমবার রাতে মৃত্যু হয় ওই বিচারাধীন বন্দির। কয়েকদিন আগে জ্বর হয়েছিল তাঁর। তাঁকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল বলে সংশোধনাগার সূত্রের খবর। সোমবার রাতে তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই তিনি মারা যান। ৩০ জুলাই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল তাঁর। মঙ্গলবার বিকেলে রিপোর্টে দেখা যায়, তিনি করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন। বিধি অনুয়ায়ী কোনও বন্দির মৃত্যু হলে ময়নাতদন্তের সময় ভিডিয়োগ্রাফি করতে হয়। কিন্তু কোনও করোনা রোগীর ময়নাতদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নেই। ফলে, ওই বন্দির দেহ কলকাতায় নিয়ে গিয়ে ময়নাতদন্ত করা হবে বলে বুধবার জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে।
ওই বন্দি সংক্রমিত হয়েছিলেন, এ কথা জানার পরেই কারারক্ষী এবং কারাকর্মীরা করোনা আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেন। তাঁরা জানান, করোনা-আবহে বিচারের কাজ অত্যন্ত ধীর গতিতে হচ্ছে। ফলে, ধৃতদের আদালতে পাঠানো হলেও জামিন পেতে তাঁদের সময় লাগছে। ফলে, জেলে বন্দির সংখ্যা বাড়ছে। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পরে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করায় ঠিকই। কিন্তু চিরাচরিত প্রথায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা এ ক্ষেত্রে কতটা কার্যকর হচ্ছে, সে প্রশ্নও তুলছেন কারাকর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy