—ফাইল চিত্র।
রাজ্য জুড়ে চলছে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচি। প্রতিদিন গ্রামীণ হাওড়ার রাস্তায় রাস্তায় চলছে পুলিশের ‘চেকিং’। তার মধ্যেই সোমবার উলুবেড়িয়ার তাঁতিবেড়িয়ায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে দেখা গেল, বেশ কিছু পুলকার গাদাগাদি করে ছাত্রছাত্রী নিয়ে দৌড়চ্ছে!
গরমের ছুটির পরে কয়েকদিন হল স্কুল খুলেছে। বহু অভিভাবকেরই অভিযোগ, পুলকারে অতিরিক্ত ছাত্রছাত্রী নিয়ে যাওয়ার ঘটনা শুধু এ দিনেরই নয়। আগেও হয়েছে। স্কুলে সময়ে পৌঁছনোর তাগিদে তাঁদের অনেকেই পুলকারে ছেলেমেয়েদের ওই ভাবে পাঠাতে বাধ্য হন। কেউ কেউ অবশ্য জানিয়েছেন, আতঙ্কে তাঁরা পুলকারের ভরসা ছেড়ে নিজেরাই ছেলেমেয়েদের স্কুলে পৌঁছে দিয়ে আসেন। এ ব্যাপারে পুলিশ এবং পরিবহণ দফতরের উদাসীনতার অভিযোগও তুলেছেন তাঁরা।
জেলা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগ বলছে, নিয়ম হল— একটি পুলকারে চালকের পাশের আসনে সব সময় সহকারী চালক থাকার কথা। বাকি যতগুলি আসন থাকবে, সেই সংখ্যক পড়ুয়াই নিতে হবে। এর অন্যথা করা বেআইনি। কিন্তু ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে এ দিন যে যব পুলকারকে দৌড়তে দেখা গিয়েছে, সবগুলিই সেই নিয়মের তোয়াক্কা করেনি। যে গাড়িতে চালক-সহ আট জন থাকার কথা সেখানে ৩৪ জনকেও দেখা গিয়েছে। পুলিশও দেখে দেখেনি বলে অভিযোগ।
বছর খানেক আগে উলুবেড়িয়া বাণীতলায় একটি পুলকার উল্টে বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী আহত হয়েছিল। তার পরেও কী ভাবে পুলকারগুলি বাড়তি ছাত্রছাত্রী নেয়?
জেলা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘আমরা নিয়মিত স্কুলগুলিতে পথ সচেতনতা শিবির কর। ছাত্রছাত্রীদের এবং স্কুল কর্তৃপক্ষকে বারে বারে সচেতন করি। মাঝেমধ্যে বেআইনি ভাবে পড়ুয়াদের নিয়ে যাওয়ার সময়ে পুলকার ধরে জরিমানাও করা হয়। আরও নজরদারি চালানো হবে।’’ একই রকম দাবি করেছেন উলুবেড়িয়ার অতিরিক্ত আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা চয়ন মজুমদার। তিনিও বলেন, ‘‘আমাদের পক্ষ থেকেও নজরদারি চলে। বিশেষ অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’
গ্রামীণ হাওড়ার অধিকাংশ বেসরকারি স্কুলে পুলকার চলে। উলুবেড়িয়ার তাঁতিবেড়িয়ার একটি বেসরকারি প্রাথমিক স্কুলের এক ছাত্রী এ দিন পুলকার থেকে ঘেমেনেয়ে নামার পরে বলে, ‘‘গাড়িতে বসার জায়গা না-পেয়ে দাঁড়িয়েই চলে এলাম। ড্রাইভার-কাকুকে এতজনকে তুলতে বারণ করি। শোনে না।’’ ওই স্কুলের এক পড়ুয়ার অভিভাবক রাজু সিংহ বলেন, ‘‘প্রতিদিন ভয়ে থাকি। বাধ্য হয়ে ছেলেকে পুলকারে স্কুলে পাঠাতে হয়। স্কুল কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেও লাভ হয়নি।’’
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনিল কাঁড়ার সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা নিয়ম মেনেই ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আসি। কয়েকদিন একটি গাড়ি খারাপ হওয়ার জন্য সেই গাড়ির ছাত্রছাত্রীদের অন্য গাড়িতে নিয়ে আসা হচ্ছে। শীঘ্রই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’’ অন্য একটি স্কুলের শিক্ষিকা রিতা সেন তাঁদের পুলকারে নিয়ম মেনে ছাত্রছাত্রীদের তোলা হয় বলে দাবি করেছেন। একই সঙ্গে মেনেও নিয়েছেন, বহু পুলকারে বেআইনি ভাবে ছাত্রছাত্রীদের তোলার কথা।
সমস্যা কবে মেটে, এটাই প্রশ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy