মৃত: পুতুল পাল। ফাইল ছবি
এক মাস আগে চন্দননগর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার (ওটি) থেকে মিলেছিল সেখানকার নার্স পুতুল পালের মৃতদেহ। থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিল পরিবার। পুলিশ তদন্ত করছে। এর পাশাপাশি এ বার বিভাগীয় তদন্তও শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চট্ট্যোপাধ্যায়।
গত ১৩ জুন পুতুলদেবীর দেহের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট তাঁর পরিবারের হাতে পৌঁছয়। কিন্তু সেই রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু উল্লেখ নেই বলে পরিবারের লোকজনের দাবি। পুতুলদেবীর মেয়ে তনয়া বলেন, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ অস্পষ্ট। মায়ের মৃত্যু নিয়ে এখনও আমরা ধোঁয়াশায় রয়ে গেলাম। যদি কেউ খুন করে থাকে, তার নাগাল মিলল না। আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত এবং ঠিক বিচার চাইছি।’’ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সম্পূর্ণ নয়। ভিসেরা রিপোর্ট পাওয়া গেলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
শহরের কাপালিপাড়ার বাসিন্দা পুতুলদেবী ২২ বছর ধরে ওই হাসপাতালে সিস্টার-ইনচার্জ পদে কর্মরত ছিলেন। গত ১২ মে রাত ৮টা নাগাদ হাসপাতালের ওটি থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। জনৈক আয়া একটি অস্ত্রোপচারের ব্যাপারে তাঁকে জানাতে গিয়ে দেখেন, বছর ছাপ্পান্নর পুতুলদেবী স্ট্রেচারের উপের অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। চিকিৎসকেরা এসে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সেই সময় হাসপাতাল কর্মীদের একাংশের দাবি ছিল, পুতুলদেবী আত্মঘাতী হয়েছেন। কিন্তু তাঁর পরিবার মানতে চায়নি।
পুতুলদেবীর স্বামী তরুণবাবু খুনের অভিযোগ তোলেন। কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুর পর হাসপাতালের পক্ষ থেকে বাড়িতে জানানো হয়নি, এমন অভিযোগও ওঠে। তনয়া দাবি করেন, সে দিন হাসপাতালে গিয়ে মায়ের দেহের পাশে একটি স্যালাইনের বোতল দেখতে পান তাঁরা। তাঁদের আশঙ্কা তাতে কিছু মেশানো ছিল। পুলিশ ছাড়াও স্থানীয় কাউন্সিলর, বিধায়ক, সাংসদ, মেয়র, আইনি সহায়তা কেন্দ্রের দ্বারস্থ হন তরুণবাবুরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য কোনও অভিযোগ মানেননি। সুপার জগন্নাথ মণ্ডলের দাবি, ‘‘পুতুলদেবী আমাদের দীর্ঘদিনের সহকর্মী ছিলেন। ওটি-র সব কাজ নিজের দায়িত্বে করতেন। তাঁকে কেউ কেন খুন করবে?’’ তবে, চন্দননগর আইনি সহায়তা কেন্দ্রের কর্ণধার বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় মনে করেন, এই ধরনের মৃত্যুর পিছনে কোনও রহস্য লুকিয়ে রয়েছে। সামাজিক স্বার্থে এই মৃত্যুর সঠিক কারণ প্রকাশ্যে আসা জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy