তৎপর: চিকিৎসা চলছে জখমের। নিজস্ব চিত্র
সোমবার সকাল ৯টা। চুঁচুড়া স্টেশন সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ডেই রক্তাক্ত অবস্থায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে বছর পঁয়তাল্লিশের এক ব্যক্তি। সপ্তাহের প্রথম দিন কাজে যাওয়ার ব্যস্ততা তখন সকলের। জখম ওই ব্যক্তিকে দেখে কেউ জানালেন সমবেদনা, আবার কেউ মোবাইল বের করে ছবি তুলে রাখলেন। কিন্তু সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলেন না কেউ।
মিনিট কুড়ি পরে অবশ্য খবর পেয়ে হাজির হন এক ট্র্যাফিক সার্জেন্ট ও সিভিক ভলান্টিয়ার। তাঁরাই ভিড় সরিয়ে জখম ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অজ্ঞাতপরিচয় ওই ব্যক্তি এ দিন চুঁচুড়া স্টেশন থেকে বাস ধরতে যাচ্ছিলেন। বাসস্ট্যান্ডে এসে ১৭ নম্বর বাসে উঠতে গিয়েই পড়ে যান তিনি। মাথা আর মুখ দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকে। সেই থেকে টানা মিনিট কুড়ি বাসের পাশেই পড়ে ছিলেন তিনি। কেউ দেখে নাক সিঁটকে চলে গেলেন, কেউ আবার সমবেদনা জানিয়ে ‘সময় নেই’ বলে ট্রেন ধরতে ছুটলেন। বছর কুড়ির এক যুবক জখম ওই ব্যক্তিতে তুলতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তাঁর পাশ থেকে এক মধ্যবয়স্কা বলেন, ‘‘না না তুলো না। এরপর পুলিশি হয়রানিতে পড়বে।’’ পাশ থেকে কেউ টিপ্পনি কাটলেন, ‘‘মদ খেয়ে বাসে উঠতে গেলে এমনই হয়।’’ আদৌ ওই ব্যক্তি মদ্যপ ছিলেন কি না তা অবশ্য তিনি স্পষ্ট করে বলতে পারেননি।
ঘটনাস্থলে এসে ট্র্যাফিক সার্জেন্ট জয়দেব নন্দী এবং সিভিক ভলান্টিয়া সত্যজিৎ মালো জখম ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে চুঁচুড়া হাসপাতালে নিয়ে যান। সেই সময় পুলিশকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন বাসস্ট্যান্ডের কয়েকজন দোকানদার। হাসপাতালের সুপার উজ্জ্বলেন্দুবিকাশ মণ্ডল বলেন, ‘‘আহত ব্যক্তি মদ্যপ ছিলেন না। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়াতেই এমন দুর্ঘটনা। মাথায় চোট লেগেছে। তবে তিনি আপাতত বিপন্মুক্ত।’’
ওই ব্যক্তি সুস্থ হলে তাঁর পরিচয় জানা যাবে বলে দাবি পুলিশের। জয়দেববাবু বলেন, ‘‘এতদিন ওই ব্যস্ত রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সামলাচ্ছি। এমন পরিস্থিতির সামনে কখনও পড়িনি। একটা লোক ওই ভাবে পড়ে রয়েছে। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথাও ভাবলেন না কেউ!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy