হেলমেট ছাড়া বেপরোয়া গতিতে মোটরবাইক চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনায় বৃহস্পতিবারই প্রাণ গিয়েছে পান্ডুয়ার এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। জখম হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে তার সঙ্গী মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দুই ছাত্রীও। এই নিয়ে এ বার রাজ্যে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে তিন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর। ফলে, নানা মহলে প্রশ্ন উঠছে, রাজ্য সরকার অন্তত ছ’মাস ধরে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভ’ কর্মসূচি চালিয়ে এলেও আমজনতার সম্বিত ফিরল কই?
সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা বলছে, পুলিশের নজরদারি আলগা হতেই মোটরবাইকে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হেলমেটহীন কমবয়সীরা। অনেক ক্ষেত্রে বাইকের ‘সাইলেন্সর পাইপ’ খুলে দিয়ে বিকট শব্দ করছে তারা। শুধু হুগলিতে প্রতিদিন রাজ্য ও জাতীয় সড়ক ধরে কয়েক হাজার মোটরবাইক চলে। অনেক আরোহীরই হেলমেট থাকে না। জেলার পুলিশ কর্তারাই প্রশ্ন তুলছেন, ব্যক্তিগত সচেতনতা ছাড়া শুধু নজরদারির মাধ্যমে কি এই দায়িত্বজ্ঞানহীন মোটরবাইক আরোহীদের রোখা সম্ভব? এক পুলিশকর্তা মানছেন, ‘‘আমরা তল্লাশির সময় দেখছি স্কুলের বাচ্চাদের অভিভাবকেরা অবলীলায় হেলমেট ছাড়াই মোটরবাইকে নিয়ে যাচ্ছেন। স্কুলে দেরি হওয়ায় অজুহাত দিলে আমরা ছেড়েও দিই।’’ একই ছবি দেখা যায় প্রাইভেট টিউশনে অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েদের পড়াতে নিয়ে যাওয়ার সময়ও। হুগলি জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘আমরা দেখেছি অল্প বয়সী ছেলেরা দিন বা রাতে বাইকের পিছনে বান্ধবী থাকলে জোড়ে বাইক চালান। এই প্রবণতা দুর্ঘটনা বাড়ায়।’’
এর পাশাপাশিই প্রশ্ন উঠেছে, বেপরোয়া গতিতে যে সব কমবয়সী ছেলেরা বাইক চালায়, অভিভাবকেরা তাঁদের বাগে আনতে পারছেন না কেন? প্রায়ই দেখা যায় কচি মুখের মোটরবাইক চালকের পিছনে বাড়ির বড়রা বসে। পান্ডুয়া শশীভূষণ সাহা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোমনাথ তালুকদার বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীরা স্কুটি বা বাইক নিয়ে এলে ওদের নিষেধের ক্ষেত্রে সরকারি নির্দেশিকা নেই। তবুও আমরা তাদের বাইক নিয়ে আসতে বারণ করেছি।’’
জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা (আরটিও) শুভেন্দুশেখর দাস বলেন, ‘‘নিয়মে ১৮ বছর না হলে মোটরবাইক চালানোর লাইসেন্স দেওয়া যায় না। আমরা এ বার থেকে নিয়ম করে স্কুলে স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের জন্য সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy