Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কমিশনারেটে এল আরও তিন থানা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গুড়াপে ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত?

বার্তা: প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার গুড়াপে। নিজস্ব চিত্র

বার্তা: প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার গুড়াপে। নিজস্ব চিত্র

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় ও দীপঙ্কর দে
গুড়াপ শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৯ ০১:৫৩
Share: Save:

আড়ে-বহরে বাড়ল চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট এলাকা। কিন্তু তাতে দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্যে লাগাম পরবে কিনা, সে প্রশ্ন রয়েই গেল।

মঙ্গলবার দুপুরে গুড়াপের কাংসারিপুর মাঠে প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে চণ্ডীতলা, মগরা এবং পোলবা থানাকে চন্দননগর কমিশনারেটে অন্তর্ভুক্ত করার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এতদিন ওই তিন থানা হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের অধীনে ছিল।

কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত?

সে উত্তরও মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘অনেক সময় চন্দননগর, চুঁচুড়া, ভদ্রেশ্বর বা চাঁপদানি এলাকা থেকে দুষ্কৃতীরা গঙ্গা পার হয়ে ও পারে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর, নৈহাটি, ভাটপাড়া এলাকায় নানা সমাজবিরোধীমূলক কাজকর্ম করে। আবার ও পারের বিভিন্ন জায়গার দুষ্কৃতীরা এ পারে এসে নানা অঘটন ঘটায়।’’এরপরই তিনি মঞ্চে থাকা রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্রকে ওই তিন থানাকে চন্দননগর কমিশনারেটে দ্রুত অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পদক্ষেপের নির্দেশ দেন। পুলিশ মহলের ব্যাখ্যা, শুধু জলপথেই নয়, বাঁশবেড়িয়ার ঈশ্বরগুপ্ত সেতু দিয়ে উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়া থেকে এসে চুঁচুড়া, চন্দননগর এলাকায় বহু দুষ্কৃতী ডেরা গাড়ে। চন্দননগর কমিশনারেটের সঙ্গে সেই কারণেই মগরা থানাকে যুক্ত করা হয়েছে। তিনটি থানা যুক্ত হওয়ায় চন্দননগর কমিশনারেট এলাকায় থানার সংখ্যা বেড়ে হল ১০।

২০১৭ সালে তারকেশ্বরে জেলার প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী চন্দননগর কমিশনারেট গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। মোট সাতটি থানা নিয়ে কমিশনারেট তৈরি হয়। ১৬টি থানা যায় জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের অধীনে। কিন্তু সেই ঘোষণার পরেই জেলা পুলিশ এবং প্রশাসনিক মহলে পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কারণ, যে ভাবে এলাকা ভাগ করা হয় তাতে পুলিশের প্রশাসনিক কাজে নানা সমস্যা দেখা দেয়। জেলার আইন-শৃঙ্খলাকে নিয়ন্ত্রণ করতে মুখ্যমন্ত্রী ওই ব্যবস্থা নিলেও কার্যক্ষেত্রে তার বিশেষ প্রতিফলন দেখা যাচ্ছিল না বলে অনেকেরই অভিমত।

কারণ, কমিশনারেট গঠিত হওয়ার পরেও হুগলির শিল্পাঞ্চলে সে ভাবে অপরাধে লাগাম পড়েনি। বরং এই তিন বছরে তা বেড়েছে। ইতিমধ্যে প্রকাশ্য রাস্তায় গুলিতে খুন হয়েছেন ভদ্রেশ্বরের পুরপ্রধান মনোজ উপাধ্যায়। ব্যান্ডেলে একা থাকা অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষিকাকেও খুন করা হয়। চন্দননগরের সাবিনাড়ায় অস্ত্র কারখানার হদিশ মিলেছে। দিন তিনেক আগে চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরের ‘ত্রাস’ টোটন বিশ্বাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কিছুদিন আগেই সে এবং তার দলবল পুলিশের উপরে গুলি চালাতে দ্বিধা করেনি। ব্যান্ডেল স্টেশনে প্রকাশ্যে খুন হয়ে গিয়েছেন শাসকদলেরই এক নেতা। শিল্পাঞ্চল জুড়ে চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই লেগেই রয়েছে। এই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ বার মুখ্যমন্ত্রীর নয়া পদক্ষেপ। কিন্তু তা কতটা কার্যকর হবে, তা সময়ই বলবে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE