তৃণমূল কাউন্সিলরদের মধ্যে বিরোধ এড়াতে এ বার রিষড়ার সব কমিউনিটি হলের ‘বুকিং’ পুরসভা থেকেই করার সিদ্ধান্ত নিলেন পুর কর্তৃপক্ষ।
সব মিলিয়ে ওই পুর এলাকায় ১০টি কমিউনিটি হল রয়েছে। সেগুলির মালিক পুরসভাই। কিন্তু এতদিন অন্তত পাঁচটি হলের ‘দখল’ ছিল কাউন্সিলরদের হাতে। হলের চাবি তাঁদের কাছেই থাকত। এর মধ্যে অন্তত দু’টি ওয়ার্ডের হলের ভাড়া পুরসভায় জমা পড়ত না বলে পুর কর্তৃপক্ষেরই অভিযোগ। বিষয়টি সামনে আসার পরেই পুর কর্তৃপক্ষ ওই সিদ্ধান্ত নেন।
তৃণমূলেরই একটি সূত্র ওই বিরোধের কথা মেনে নিয়েছে। উপ-পুরপ্রধান জাহিদ খানের বক্তব্যেও সেই ইঙ্গিত মিলেছে। পুরসভার তরফে তিনিই হল দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত। জাহিদ বলেন, ‘‘আমাদের পুরবোর্ড তৈরি হওয়ার পর থেকে দু’টি হলের বুকিংয়ের টাকা পুরসভায় জমা পড়ছিল না। এ বার সব ক’টি হলেরই দখল নেওয়া হচ্ছে। বুকিং পুরসভার অফিস থেকেই করা হবে। সব হলেই এ সংক্রান্ত বোর্ড ঝোলানো হচ্ছে।’’
কখনও আবাসন তৈরি, কখনও বোনাসপ্রাপ্তি নিয়ে রিষড়ায় তৃণমূল কাউন্সিলরদের মধ্যে বিরোধ চলছিলই। মাস কয়েক আগে সমস্যা মেটাতে পুরসভার শীর্ষপদে রদবদল হয়। নতুন পুরপ্রধান হন বিজয় মিশ্র, উপ-পুরপ্রধান জাহিদ খান। কিন্তু তার পরেও বিরোধে লাগাম পড়েনি। যে পাঁচটি হলের ‘দখল’ পুরসভা নিয়েছে, সেগুলি রয়েছে ৪, ৯, ১২, ১৪ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে। এর মধ্যে মূলত ৪ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে গোলমাল বলে পুরসভার একটি সূত্রের খবর। দিন কয়েক আগে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ওই গোলমাল কার্যত রাস্তায় নেমে আসে।
৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আরামবাগের সাংসদ অপরূপা পোদ্দারের স্বামী সাকির আলি। অভিযোগ, দিন কয়েক আগে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে পুরসভার লোকজন ওই কমিউনিটি হলে তালা দিতে গেলে সাকির বাধা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, এলাকার কাউন্সিলর হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে কিছুই জানানো হয়নি।
তাঁর বক্তব্য, নির্দিষ্ট সরকারি প্রকল্পে হলটি তৈরি হয়। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার এখনও ৩২ লক্ষ টাকা পাবেন। সেই টাকা দেওয়ার ব্যাপারে পুরসভা উচ্চবাচ্য করছে না। টাকা মেটানোর ব্যাপারে আগে পদক্ষেপ করা হোক। এ নিয়ে সাকিরের সঙ্গে জাহিদের কথা কাটাকাটিও হয়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য পুরসভার তরফে সেখানে তালা দিয়ে দেওয়া হয়। বুকিং সংক্রান্ত বোর্ডও ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
যদিও বুকিংয়ের টাকা নেওয়ার অভিযোগ মানেননি সাকির। তাঁর দাবি, ‘‘এত দিন গরিব মানুষরা হলটি ব্যবহার করেছেন। তাঁদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়নি। হলটি ঠিকাদারের অধীনেই ছিল। এখন মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে আমাকে গুরুত্বহীন করে দিতে দলেরই একাংশ উঠেপড়ে লেগেছে।’’
তবে রিষড়ার পুরপ্রধান এবং উপপ্রধান ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁদের দাবি, ‘‘সব ক্ষেত্রে একই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অন্য প্রশ্ন অর্থহীন।’’ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর উষাদেবী শা’য়ের দাবি, ‘‘বুকিংয়ের টাকা এতদিন পুরসভার সঠিক জায়গাতেই জমা পড়েছে। হলের চাবি কেয়ারটেকারের কাছে ছিল। সেটি পুরসভার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy