Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Puja Committee

মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার তো কিনে ফেলেছি, দাবি পুজো উদ্যোক্তাদের

হাওড়া ও হুগলি জেলার বেশির ভাগ পুজো উদ্যোক্তাদের দাবি, আদালতের নির্দেশ পালন করতে তাঁরা ইতিমধ্যেই সরকারি অনুদানের টাকায় মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার কিনে ফেলেছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নুরুল আবসার ও গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
উলুবেড়িয়া ও চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২০ ০১:৫৪
Share: Save:

রাজ্য সরকারের দেওয়া পুজো অনুদান নিয়ে মামলায় গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ ছিল, অর্থের ৭৫ শতাংশ খরচ করতে হবে করোনা-মোকাবলায়। অর্থাৎ, মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার ও ফেস-শিল্ড-এর মতো সামগ্রী কেনার কাজে। বাকি ২৫ শতাংশ খরচ হবে সামাজিক ক্ষেত্রে। টাকা খরচের হিসাবও জমা দিতে হবে বলে নির্দেশ রয়েছে আদালতের। সোমবার দুর্গাপুজো নিয়ে মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, এ বার পুজো মণ্ডপ থাকবে দর্শকশূন্য। আদালতের জোড়া রায়ে বিভ্রান্ত অনেক পুজো উদ্যোক্তা। তাঁদের প্রশ্ন, মণ্ডপই যদি দর্শকশূন্য থাকে, তবে মাস্ক বা স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হবে কাদের।

হাওড়া ও হুগলি জেলার বেশির ভাগ পুজো উদ্যোক্তাদের দাবি, আদালতের নির্দেশ পালন করতে তাঁরা ইতিমধ্যেই সরকারি অনুদানের টাকায় মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার কিনে ফেলেছেন। কিন্তু সেগুলি কী ভাবে বিলি করা হবে তা বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা। অনুদান মামলায় আদালতের নির্দেশ আসার পরেই মাস্ক ও স্যানিটাইজারের মতো করোনা-সুরক্ষা সামগ্রী কিনে ফেলে অনুদান পাওয়া পুজো কমিটিগুলি। সরকারি চেক পেলেও তা ভাঙাতে পারেনি, এমন পুজো কমিটিগুলি নিজস্ব তহবিল থেকে মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার কেনে। কারণ, আদালতের নির্দেশ রয়েছে, খরচের হিসাব জমা দিতে হবে প্রশাসনের কাছে। সোমবারের রায়ের পরে পুজো উদ্যোক্তাদের প্রশ্ন, মণ্ডপে দর্শক না এলে এত টাকার করোনা-সুরক্ষা সামগ্রী কোন কাজে ব্যবহার করবেন তাঁরা।

সরকারি অনুদানবাবদ পাওয়া ৫০ হাজার টাকার সিংহভাগ ইতিমধ্যেই মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার কেনায় খরচ করে ফেলেছেন বলে মঙ্গলবার দাবি করেছেন হাওড়া গ্রামীণ এলাকার বিভিন্ন পুজো কমিটির কর্তারা। উলুবেড়িয়া বাজারপাড়া সর্বজনীনের কর্তা অয়ন দে বলেন, ‘‘এর আগে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, অনুদানের টাকার একটা বড় অংশ মাস্ক এবং স্যানিটাইজ়ার কিনতে খরচ করতে হবে। বাকি টাকা খরচ করতে হবে সচেতনতামূলক প্রচারের কাজে। ফলে, আমরা অনেক আগেই মাস্ক এবং স্যানিটাইজ়ার কিনতে সেই টাকার একটা অংশ খরচ করে ফেলেছি।’’ হাইকোর্টের সোমবারের রায়ের প্রেক্ষিতে অয়নবাবু বলেন, ‘‘মণ্ডপের ১০ মিটার দূরে ব্যারিকেড করা হলেও তার বাইরে থেকে অনেকে প্রতিমা দর্শন করবেন। তাঁদের হাতে আমরা এই সব তুলে দেব।’’

বাগনান টাউন ক্লাব পুজো কমিটির কর্তা মানস বসু বা রাজাপুরের রঘুদেবপুর পাঁচলা মোড় নেতাজি সংঘ পুজো কমিটির সম্পাদক অজিত পাড়ুইও একই মন্তব্য করেন। মানসবাবু বলেন, ‘‘মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ারের বরাত অনেক আগে দিতে হয়েছে। না-হলে পাওয়া যেত না। এখন তো আর বরাত বাতিল করা যায় না। আমাদের স্বেচ্ছাসবকেরা পথচলতি দর্শনার্থীদের সেগুলি দেবেন।’’ অজিতবাবুর দাবি, ‘‘মাস্ক এবং স্যানিটাইজ়ার ইতিমধ্যেই আমাদের কাছে এসে গিয়েছে।’’ বাকি টাকা সচেতনতার প্রচারে খরচ করা হবে বলে জানিয়েছেন পুজো কমিটির কর্তারা।

হুগলির চুঁচুড়া রথতলা সর্বজনীনের কর্মকর্তা দেবাশিস কুণ্ডু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের দেওয়া অনুদানের চেক ব্যাঙ্কে জমা দিয়েছি। কিন্তু টাকা এখনও অ্যাকাউন্টে জমা পড়েনি। এ দিকে করোনা বিধি মেনে স্যানিটাইজার, মাস্ক সবই মজুত করা হয়েছে। এ বার কী করব, কিছুই বুঝতে পারছি না। মণ্ডপে লোক না ঢুকলে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার দেব কাকে!’’ চণ্ডীতলার নবজাগরণ সঙ্ঘের কর্তা তথা তৃণমূল নেতা সুবীর মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘আমরা কিছুটা বিভ্রান্ত। আদালতই বলেছে রাজ্য সরকারের অনুদানের ৭৫% টাকা দিয়ে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার কিনতে। কিন্তু, মণ্ডপে দর্শক না থাকলে সেগুলি দেব কাকে!’’

উত্তরপাড়া চড়কডাঙা সর্বজনীন পুজো কমিটির উৎপলাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা আগেই মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার কিনে ফেলেছি। সেগুলো নিয়ে এখন কী করব? এই প্রশ্নটাই ঘুরপাক খাচ্ছে।’’ উত্তরপাড়ার আর একটি পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা সৌমেন ঘোষ বলেন,‘‘সরকারের থেকে পাওয়া চেক জমা দিলেও নগদ টাকা হাতে পাইনি। তবে বহু টাকার মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার কিনে ফেলেছি। জানি না, ওই সব জিনিসের কী হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Puja Committee Mask Sanitizers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy