চুক্তি মতো টাকা না দেওয়ায় একটি বেসরকারি বিমা সংস্থাকে জরিমানা করল হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। সেই সঙ্গে চুক্তি মতো চিকিৎসার খরচের পুরো টাকাই পরিবারটিকে ফিরিয়ে দিতে ওই সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
চন্দননগরের বড়বাজার এলাকার বাসিন্দা লিপি মণ্ডল গঙ্গোপাধ্যায় বৈঁচির একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। বর্তমানে তিনি বেঁচে নেই। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালে লিপিদেবী চন্দননগর বাগবাজারের একটি বেসরকারি বিমা সংস্থায় ১ লক্ষ টাকার একটি পারিবারিক ‘পলিসি’ করান। ২০১২ সালের নভেম্বরে ওই সংস্থাতেই তিনি ২ লক্ষ টাকার একটি ব্যক্তিগত ‘পলিসি’ করান। ২০১৩ সাল থেকে তিনি শারীরিক সমস্যায় ভুগতে থাকেন। একাধিক নার্সিংহোমে তাঁর চিকিৎসা হয়।
স্বামী রাজ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, প্রথম পলিসি-র প্রায় সব টাকাই মিটিয়ে দিয়েছিল বিমা সংস্থাটি। কিন্তু তার পরে চিকিৎসায় আরও টাকা খরচ হয়। তখন দ্বিতীয় পলিসি থেকে টাকা দিতে সংস্থাটি অস্বীকার করে। চিকিৎসার খরচ বাবদ মোট ৯৫ হাজার ২৪৫ টাকার বিল জমা দেওয়া হলেও ওই টাকা বিমা সংস্থাটি মেটাতে অস্বীকার করে। রাজবাবুর আরও অভিযোগ, ‘‘বিমা সংস্থা দাবি করে, আমার স্ত্রীর না কি আগে থেকেই নানা সমস্যা ছিল। তাই ওরা টাকা দেবে না।’’ উপায় না দেখে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন ওই পরিবার। মামলা চলাকালীন ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে লিপিদেবী মারা যান। গত ২৯ ডিসেম্বর মামলার নিষ্পত্তি হয়।
সমস্ত নথিপত্র এবং সব দিক বিবেচনা করে আদালত এই সিদ্ধান্তে পৌঁছয়, বিমা করার সময় ওই শিক্ষিকা নিজের রোগ সম্পর্কে আদপেই অবহিত ছিলেন না। আর বিমা সংস্থাটিও চুক্তি করার সময় কোনও চিকিৎসককে দিয়ে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেয়নি। প্রয়োজনের সময় পরিবারটিকে প্রাপ্য পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করেছে তারা। আদালতের সভাপতি ভীমদাস নন্দ এবং সদস্য চন্দ্রিমা চক্রবর্তী নির্দেশ দেন, আগামী এক মাসের মধ্যে চিকিৎসার বিল বাবদ পুরো টাকাই ওই পরিবারকে ফিরিয়ে দিতে হবে। সেই সঙ্গে এতদিন ধরে ওই পরিবারকে যে মানসিক যন্ত্রণা এবং হয়রানির শিকার হতে হয়েছে, সে জন্য ১০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
পাশাপাশি মামলার খরচ চালানোর জন্য আরও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সব টাকাই এক মাসের মধ্যে না দিলে প্রতিদিন ২০০ টাকা করে জরিমানা দিতে হবে সংস্থাটিকে। সে ক্ষেত্রে বাড়তি ওই টাকা ‘কনজিউমার লিগাল এইড’-এর তহবিলে জমা হবে।
অভিযোগকারী পক্ষের আইনজীবী গোবিন্দ ঘোষ বলেন, ‘‘টাকা না দেওয়ার জন্যই যেমন খুশি যুক্তি খাড়া করেছিল সংস্থাটি। ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের সঠিক পর্যবেক্ষণে সুবিচার মিলল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy