ভাঙচুর তৃণমূল কার্যালয়ে। —নিজস্ব চিত্র
লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই তৃণমূল-বিজেপির আকচা-আকচি লেগেই রয়েছে জাঙ্গিপাড়ায়। এ বার বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর এবং মেরে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের পা ভেঙে দেওয়ার অভিযোগকে ঘিরে বৃহস্পতিবার রাতে তেতে ওঠে রাজবলহাটের দিঘিরপাড় এলাকা। রাতে তল্লাশিতে গিয়ে আক্রান্ত হল পুলিশও। পাশের মোড়ল গ্রামে জনতার ছোড়া ইটের আঘাতে জখম হন জেলা পুলিশের এক ডিএসপি। আর এক পুলিশকর্মীর মাথা ফাটে। তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বেই ওই ঘটনা বলে বিজেপির দাবি।
হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার তথাগত বসু বলেন, ‘‘জাঙ্গিপাড়ার ঘটনায় এক ডিএসপি-সহ পুলিশের দু’জন আহত হয়েছেন। অভিযুক্তদের খোঁজ শুরু হয়েছে।’’
লোকসভা ভোটের পর থেকেই জাঙ্গিপাড়ার বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় দখলের অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। বিজেপি সেই অভিযোগ মানেনি। দু’পক্ষের আকচা-আকচি চলছিল। কিছুদিন ধরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার হিড়িকও পড়েছে। ফলে, দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা কমেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত ১০টা নাগাদ ১০-১৫টি মোটরবাইকে জনা তিরিশ যুবক রাজবলহাট-২ পঞ্চায়েতের দিঘিরপাড় এলাকায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালায়। ভাঙচুর করা হয় সেখানকার আসবাব, টিভি। পঞ্চায়েত প্রধান তুষারকান্তি রক্ষিত সেখানেই ছিলেন। তিনিও আক্রান্ত হন। মারে তাঁর বাঁ পা ভাঙে। তিনি কোনও মতে পাশেই নিজের বাড়িতে ঢুকে পড়েন। হামলাকারীরা সেখানেও চড়াও হয় বলে অভিযোগ। রাতে তৃণমূলের তরফে বিজেপির বিরুদ্ধে এই হামলার অভিযোগ দায়ের করা হয় থানায়। পুলিশ ওই কার্যালয় লাগোয়া মোড়ল গ্রামে অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশিতে যায়। তখনই পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়।
জাঙ্গিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘মোড়ল অঞ্চলের কিছু বিজেপি সমর্থক অযথাই এলাকায় অশান্তি পাকাচ্ছে।’’ পঞ্চায়েত প্রধান তুষারবাবুর অভিযোগ, বিজেপি নেতা রতন ঘোষের নেতৃত্বেই হামলা হয়। তিনি বলেন, ‘‘দলনেত্রীর নির্দেশমতো আমরা দলের পুরনো কর্মীদের সঙ্গে ফের যোগাযোগ তৈরি করছি। এ বার ২১ জুলাই ব্রিগেড সমাবেশে যেতে অনেকেই উৎসাহ দেখাচ্ছেন। সেটাই বিজেপির মাথাব্যাথা হয়ে গিয়েছে। ওরা একটাও বাস নিয়ে যেতে দেবে না বলে হুঙ্কার দিচ্ছে। এর আগে রহিমপুরে আমাদের কার্যালয় দখলের সময় ওরা আমার ডান হাত ভেঙেছিল। এ বার মারধর করতে বারণ করেছিলাম। তবু মেরে আমার বাঁ পা ভাঙল।’’
অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা রতনবাবুর দাবি, ‘‘রাজবলহাট-১ পঞ্চায়েতের প্রাক্তন তৃণমূল প্রধান এবং ওই দলেরই এক যুবনেতার গোষ্ঠী লড়াইয়ের দায় আমাদের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে। ওরাই বৃহস্পতিবারের ঘটনায় দায়ী। অথচ, পুলিশ আমাদের তাড়া করে গ্রামছাড়া করছে।’’ মোড়ল গ্রামের বিজেপি নেতা দেবাশিস ঘোষের দাবি, ‘‘পুলিশ বিজেপি কর্মীদের ধরতে এসে পা পিছলে পড়ে যাওয়ায় ইটে মাথা ফাটে। আমরাই সেবা করি। উল্টে এখন আমাদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ইট মারার অভিযোগ তোলা হচ্ছে।’’ রাজনৈতিক ভাবে ঘটনার মোকাবিলার করার কথা জানিয়েছেন লোকসভায় শ্রীরামপুরের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী দেবজিৎ সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy