বন্ধ: আরান্ডির কর্মতীর্থের হাল এমনই। —নিজস্ব চিত্র।
দু’কোটি টাকা খরচ করে আরামবাগ ব্লকে তৈরি হয়েছিল কর্মতীর্থ। এক বছর আগে ঢাকঢোল পিটিয়ে উদ্বোধনও হয়েছিল সংখ্যালঘু দফতরের অধীন এই ভবনের। কিন্তু আরান্ডি-১ পঞ্চায়েতের ধামসার সেই দু’তলা ভবন এখন খালিই পড়ে। ৪৮টি দোকানের সব কটিই প্রায় বন্ধ। তাই খদ্দের টানতে এলাকার রাস্তার দু’ধারে বসা বাজারটাকেই তুলে আনা হচ্ছে কর্মতীর্থ চত্বরে।
জেলা সংখ্যালঘু দফতরের আধিকারিক অভিজিৎ ঘোষ বলেন, “কর্মতীর্থ চত্বরে স্থানীয় বাজারটিকে তুলে আনতে আরও ১২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের জন্য স্থায়ী ছাউনি করে দেওয়া হবে। বাজারটা উঠে এলেই খদ্দেরদের সমাগমে কর্মতীর্থ চাঙ্গা হবে।” তিনি আরও জানান, “যাঁরা কর্মতীর্থ দোকান ঘরের চাবি নিয়েও দোকান খুলছেন না, তাঁদের সঙ্গে শীঘ্রই আলোচনায় বসা হবে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের প্রতি ব্লকে অন্তত একটি করে ‘কর্মতীর্থ’ নামে মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি করার প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন ২০১৪ সালে। কথা ছিল, প্রশিক্ষণ ও অর্থসংস্থান-সহ প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করে দেবে রাজ্য সরকার। সেখান থেকেই স্বনির্ভর গোষ্ঠী, গ্রামীণ কারিগর ও ক্ষুদ্র-প্রান্তিক ব্যবসায়ীরা নিজেদের উৎপাদিত দ্রব্য বিক্রি করতে পারবেন।
আরামবাগের আরান্ডি-১ পঞ্চায়েত সংলগ্ন ধামসার মাঠে ৭৯ শতক জমির উপর ১ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা প্রায় ব্যয়ে দু’তলা ‘কর্মতীর্থ’-এ রয়েছে ৪৮টি ঘর। গত সেপ্টেম্বর মাসের ৫ তারিখে সেটির উদ্বোধন হয়। আরামবাগ ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, ‘কর্মতীর্থ’ নির্মাণের সময় ঘর নেওয়ার চাহিদা জানিয়ে প্রচুর আবেদন পড়ে। তাঁদের মধ্যে ৪৮জন উদ্যোগীর হাতে ঘরের চাবি তুলে দেওয়া হয়। উদ্বোধনের দিন পনেরো পর থেকেই দোকানগুলোর ঝাঁপ বন্ধ হতে থাকে। জনা ছয়েক ব্যবসায়ী একেবারেই ঝাঁপ খুলছেন না। বাকিরা দখলদারি টিঁঁকেয়ে রাখার জন্য মাঝে মাঝে এক-আধ ঘন্টার জন্য দোকান খোলেন।
খদ্দের না থাকাতেই দোকান খোলা হয়নি জানিয়ে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, “এতদিন সরকারি তরফে ‘কর্মতীর্থ’কে জমজমাট করার উদ্যোগই করা হয়নি।” সেলাইয়ের কাজ করা হামিরবাটি গ্রামের বাসন্দা তিলকা মালিকের অভিযোগ, ‘‘গত এক বছরে ১২০০ টাকাও আয় হয়নি। দোকান খুলে লাভ হয়নি।’’
আরামবাগের বিডিও বিশাখ ভট্টাচার্য বলেন, “রাস্তার দু’ধারের ব্যবসায়ীদের কর্মতীর্থ চত্বরে আনতে আমরা ২০টি ছাউনি তৈরি করে দেব। ওই বাজারের খদ্দেররাই কর্মতীর্থেরও খদ্দের হবেন। এক সপ্তাহের মধ্যেই সেই কাজ শুরু করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy