কোথাও খোলা রয়েছে মিটার বাক্স, কোথাও বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে বিদ্যুতের তার। ছবি দু’টি তুলেছেন দীপঙ্কর দে।
হাসপাতালের দোতলায় যাওয়ার বড় কাঠের সিঁড়ি সংলগ্ন উঠোনে ডাঁই করে রাখা রয়েছে রোগীদের শয্যা। মাথার উপরে ঝুলছে পাখার স্ট্যান্ড। সেখানে পাখা নেই। তবে বেরিয়ে রয়েছে একগোছা খোলা বিদ্যুতের তার। সামনের দেওয়ালে অনেকগুলি মিটার রাখা। তার মধ্যে একটি মিটার খোলা রয়েছে। আনাচে কানাচে জট পাকিয়ে রয়েছে তার। ওই রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করেন রোগী এবং রোগীর আত্মীয়েরা। ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে আগুন লেগে প্রাণহানি ঘটেছে। কিন্তু সেই ঘটনা আদৌও কি শিক্ষা নিয়েছে উত্তরপাড়া জেনারেল হাসপাতাল? তার খোঁজ করতে গিয়েই চোখে পড়ল এই ছবি।
হাসপাতালের এক কর্মীর ক্ষোভ, ‘‘পুরনো রাজবাড়িকে হাসপাতাল করা হয়েছে। বর্ষাকালে দেওয়ালে ড্যাম্প ধরে। আগুন লাগলে তো ছুটে বেরিয়ে লাভ নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তো সবই জানেন।”
সচেতনতার অভাবের এই ছবি উত্তরপাড়া জেনারেল হাসপাতালের প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডে রয়েছে। হাসপাতালে কোনও জরুরি সিঁড়ি নেই। হাসপাতালের নতুন বাড়ির পিছনে রয়েছে রান্নাঘর। সেখানে গ্যাসে রান্না হয়। সেখানে অগ্নি নির্বাপক একটি সিলিন্ডার রয়েছে। আগুন লাগলে একটি সিলিন্ডারে ঠেকানো যাবে তো? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন সেখানে ২২০টি শয্যা রয়েছে। প্রতি দিন রোগীদের মাথাপিছু ১০০ লিটার জলের চাহিদা রয়েছে। ওই এলাকায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জলের মান ভাল নয়। তাই উত্তরপাড়া পুরসভার জল আসে হাসপাতালে।
আগুন লাগলে জল আসবে কোথা থেকে? হাসপাতালের এক কর্তার দাবি, “রোগীদের চাহিদার থেকে প্রতিদিন কয়েকগুন বেশি জল সরবরাহ করা হয়। বিপদ হলে সেই বাড়তি জল কাজে লাগানো যাবে।” যদিও এই আশ্বাস কতখানি কার্যকর হবে সেই নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। কারণ দমকলের আইন অনুয়ায়ী প্রতিটি হাসপাতালে আগুন নেভানোর জন্য বিকল্প জলের ব্যবস্থা মজুত রাখতে হয়। কিন্তু উত্তরপাড়া হাসপাতালে সেই ব্যবস্থা নেই।
হাসপাতালের এক কর্মী দাবি করলেন, “আমরা লোক দেখাতে আগুন নেভানোর সিলিন্ডার ঝুলিয়ে রাখিনি। প্রতি বছর সেগুলি পরীক্ষা করা হয়। সদ্য সেই কাজ হয়েছে।’’ হাসপাতাল সূত্রের খবর, এখন পুরো হাসপাতাল ৯টি অগ্নি নির্বাপক সিলিন্ডার রয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে আরও ৪টি আনা হবে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, “উত্তরপাড়া হাসপাতালে র্যাম্প তৈরির জন্য ৩৯ লক্ষ টাকা মঞ্জুর হয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। জলের বিকল্প উৎস হিসেবে হাসপাতালে ঢুকতেই যে পুকুরটি রয়েছে সেটি নিয়ে ভাবনা-চিন্তা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy