Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ফের সংঘর্ষ তৃণমূলের অন্দরে, জখম যুবনেতা

মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দিচ্ছেন— কিন্তু শুনছে কে! তৃণমূলের মূল সংগঠন ও যুব সংগঠনের গোলমালে রক্ত ঝরছেই। মঙ্গলবারও পুরশুড়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে জখম হলেন তিন জন। তাঁদের মধ্যে লিয়াকত আলি চৌধুরী নামে যুব তৃণমূলের এক বুথ সভাপতি আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি। ঘটনায় নির্মল খাঁ নামে এক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

ভয়ার্ত: কান্নায় ভেঙে পড়েছেন লিয়াকতের পরিজনরা। নিজস্ব চিত্র

ভয়ার্ত: কান্নায় ভেঙে পড়েছেন লিয়াকতের পরিজনরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরশুড়া শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০১৮ ০২:৪০
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দিচ্ছেন— কিন্তু শুনছে কে! তৃণমূলের মূল সংগঠন ও যুব সংগঠনের গোলমালে রক্ত ঝরছেই। মঙ্গলবারও পুরশুড়ায় দু’পক্ষের সংঘর্ষে জখম হলেন তিন জন। তাঁদের মধ্যে লিয়াকত আলি চৌধুরী নামে যুব তৃণমূলের এক বুথ সভাপতি আশঙ্কাজনক অবস্থায় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি। ঘটনায় নির্মল খাঁ নামে এক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার থেকেই পুরশুড়ার শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে পঞ্চায়েত প্রধান অসীমা দে ও প্রকল্পের সুপারভাইজারদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন ধাপধাড়া গ্রামের শ’খানেক শ্রমিক। তাঁদের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন যুব তৃণমূলের নেতা লিয়াকত। অভিযোগ, মঙ্গলবার বিকেলে উত্তেজিত যুব তৃণমূলের সদস্য কিছু শ্রমিক উজ্জ্বল পণ্ডিত নামে এক সুপারভাইজার এবং নির্মল খাঁ নামে এক তৃণমূল নেতাকে মারধর করেন। তারপর সব মিটে গেলেও পরে মারধর করা হয় লিয়াকতকে। অভিযোগ উজ্জ্বল ও নির্মল তাঁর মাথায় মোটা বাঁশ দিয়ে আঘাত করেন। রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে লিয়াকতকে নিয়ে যাওয়া হয় আরামবাগ মহকুমা হাসাপাতালে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বুধবার সকালে তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়।

এরই মধ্যে বুধবার সকালে এলাকায় রটে যায় লিয়াকতের মৃত্যু হয়েছে। গুজব ছড়িয়ে পড়তেই পুরশুড়ার আটটি পঞ্চায়েত এলাকায় ফের উত্তেজনা শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন গ্রামে পুলিশকে টহল দিতে হয়। লিয়াকতের গ্রাম ধাপধাড়ায় বসেছে পুলিশ পিকেট। দুপুর আড়াইটা নাগাদ জানা যায় আশঙ্কাজনক হলেও লিয়াকত বেঁচে আছেন।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় তৃণমূল মূল সংগঠনের নেতা ও পঞ্চায়েত সদস্যা শ্রীমতি খাঁয়ের স্বামী নির্মল খাঁ এবং উজ্জ্বল পণ্ডিত-সহ পাঁচ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। নির্মলকে গ্রেফতার করা গেলেও বাকিরা পলাতক। তাদের খোঁজে পুলিশ তল্লাশি শুরু করেছে। এই সংঘর্ষ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি পঞ্চায়েত প্রধান অসীমা দে। তবে তিনি বলেন, “প্রতিদিন এ রকম অশান্তি হলে পঞ্চায়েতের উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজ হচ্ছে না। বিষয়টা দলের নেতাদের জানিয়েছি।”

শ্রীরামপুর অঞ্চল যুব তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি বাদশা মিদ্যার অভিযোগ, “দলের মূল সংগঠনের নেতা ব্লক সভাপতি জয়দেব জানার নেতৃত্বেই ক্রমাগত যুব দলের উপর হামলা হচ্ছে।” ব্লক সভাপতি জয়দেব জানা আবার বলেন, “ওই ঘটনায় দলের কোনও ভূমিকা নেই। পঞ্চায়েতে গিয়ে একদল মানুষ হামলা করছিলেন। আর একদল প্রতিবাদ করেছেন।”

এলাকা দখল এবং নানান কর্মসূচিতে আধিপত্য নিয়ে পুরশুড়ায় তৃণমূলের মূল সংগঠনের সঙ্গে যুব সংগঠনের সংঘর্ষ নতুন নয়। পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণার পর থেকে তা বেড়েছে। দুই সংগঠন একে অপরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সন্ত্রাস এবং তোলা আদায়ের অভিযোগ তুলে প্রায়ই গুলি, বোমাবাজিতে জড়াচ্ছে। যদিও দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, “দলের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। পঞ্চায়েতের ওই ঘটনায় দলের কোন সংগঠনের ভূমিকা থাকলে তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Infighting Group Clash TMC TMC Yuva
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE