পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ার খবর বাড়িতে না জানিয়ে হেঁটে হাওড়া ব্রিজ চত্বরে চলে এসেছিল সতেরো বছরের এক ছাত্রী। সেতুর রেলিংয়ে এক পা তুলে গঙ্গায় ঝাঁপ দিতে যাওয়ার ঠিক আগে টহলদার এক পুলিশকর্মী তাকে পিছন থেকে টেনে ধরেন। ফলে বেঁচে যায় ছাত্রীটি।
হাওড়া ব্রিজের ৩৫ নম্বর স্তম্ভের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন মেটিয়াবুরুজের এক যুবক। দূর থেকে নিখোঁজ দাদাকে দেখতে পেয়ে নাম ধরেই তাঁকে ডেকেছিলেন ছোট ভাই। চলমান পথচারীর ভিড় ঠেলে ভাই কাছে পৌঁছনোর আগেই সেতুর রেলিং টপকে গঙ্গায় ‘ঝাঁপ’ দেন ওই যুবক।
উপরের দু’টি ঘটনাই শুধু নয়, পুলিশ সূত্রের খবর, হাওড়া ব্রিজ থেকে গঙ্গায় ঝাঁপ দেওয়ার ঘটনা প্রতি মাসে গড়ে চার থেকে পাঁচটি করে ঘটে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে বাঁচানো সম্ভব হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আটকানো যায় না। পুলিশ সূত্রের খবর, হাওড়া ব্রিজ থেকে ঝাঁপ দেওয়া আটকাতে এ বার সেতুর রেলিংয়ের উচ্চতা দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মূল কাঠামো বা বিন্যাসের কোনও পরিবর্তন না করে সেতুতে লোহার রেলিং লাগানো হবে বন্দর কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত মাসে রেলিংয়ের উচ্চতা বৃদ্ধির একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল হাওড়া ব্রিজের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষকে। চলতি সপ্তাহেই বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে পুলিশের ওই প্রস্তাব মেনে নিয়ে প্রায় ৩৭ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। পুলিশের আশা, শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।
১৯৪৩ সালে তৈরি হওয়া হাওড়া ব্রিজের দু’পাশের রেলিংয়ের উচ্চতা প্রায় আড়াই ফুট। কলকাতা এবং হাওড়া পুলিশ যৌথ ভাবে ওই সেতুর নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। রেলিংয়ে উঠে গঙ্গায় ঝাঁপ দেওয়ার ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য কলকাতা পুলিশের তরফে ২৪ ঘণ্টাই নজরদারি চলে। ছ’জন পুলিশকর্মী ২৪ ঘণ্টা মোতায়েন থাকেন। পুলিশের একাংশের দাবি, হাওড়া থেকে কলকাতায় যাতায়াতের জন্য ওই সেতুর ফুটপাত ব্যবহার করেন কয়েক লক্ষ মানুষ। ফলে ভিড়ের মধ্যে নজরদারির ফাঁক গলে ঝাঁপ দেওয়ার ঘটনা অনেক সময় ঘটেই যায়।
লালবাজার সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই হাওড়া ব্রিজে দুর্ঘটনা আটকাতে সেতুর রাস্তার মাঝে স্থায়ী ডিভাইডার বসানো হয়েছে। সেই সঙ্গে ব্রিজের দু’পাশের ফুটপাত-সহ পুরো এলাকায় সিসিটিভির নজরদারি চালাতে আরও ক্যামেরা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তও হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy