হাওড়া ট্রেজারি দফতর থেকে কয়েক বছর ধরে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বহু লক্ষ টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠল সাঁকরাইল ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সুপার তথা বিএমওএইচ ঋতু রায়ের বিরুদ্ধে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাসই পুলিশের কাছে ঋতুদেবী এবং তাঁর সঙ্গে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মী গৌতম ঘোষের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বুধবার। গৌতমবাবুকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘পাঁচ সদস্যের কমিটি তৈরি করে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করা হয়েছিল। প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে ওই বিএমওএইচ এবং এক লোয়ার ডিভিশন ক্লার্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঠিক কত টাকা দুর্নীতি হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। তদন্ত শেষ হলেই বিস্তারিত জানা যাবে। বিষয়টি রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে জানানো হয়েছে।’’
পুলিশ জানায়, ঋতুদেবীর বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঋতুদেবীকে বুধবার কয়েক দফায় ফোন করা হলেও অভিযোগ নিয়ে তাঁর বক্তব্য জানা যায়নি। প্রথমবার ফোন ধরে তিনি কেটে দেন। পরে তাঁর ফোন বন্ধ থাকে। এসএমএসেরও উত্তর দেননি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ঋতুদেবী ২০০৯ সাল থেকে সাঁকরাইল ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের পদে রয়েছেন। লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক গৌতম ঘোষও দীর্ঘদিন ধরে ওই হাসপাতালে কাজ করছেন। দিন কয়েক আগে হাওড়া ট্রেজারি দফতর থেকে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে জানানো হয়, মে মাসে সাঁকরাইল ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে হিসেব বর্হিভূত ভাবে ১০ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। তার পর জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে বিএমওএইচকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়। বিএমওএইচ গত শুক্রবার গৌতমবাবুর বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ করে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে রিপোর্ট পাঠান। কিন্তু সেই রিপোর্টে সন্তষ্ট হতে পারেনি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। তিনি সোমবার পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গড়েন। সেই কমিটি ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নথিপত্র খতিয়ে দেখে প্রাথমিক রিপোর্টে জানায়, ২০১৩ সাল থেকে হিসাব বর্হিভূত ভাবে বহু লক্ষ টাকা খরচের নাম করে তুলে নেওয়া হয়েছে। ডিডিও অফিসার হিসেবে অনেকগুলি নথিতেই বিএমওএইচ নিজে সই করেছেন। এর পর জেলা স্বাস্থ্য দফতর বিএমওএইচ এবং ওই লোয়ার ডিভিশন ক্লার্কের বিরুদ্ধে এফআইআরের সিদ্ধান্ত নেয়।
গৌতমবাবু জগৎবল্লভপুরের বাসিন্দা। এক সপ্তাহ আগে এক মহিলাকে মারধরের অভিযোগে জগৎবল্লভপুর থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। তাঁর জেল-হাজতও হয়। সেই মামলার সঙ্গে এ বার তাঁর বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের অভিযোগও যুক্ত হল। বুধবারই আদালতের কাছে আবেদন করে ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে নেয় সাঁকরাইল থানার পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy