পর্যটকদের সঙ্গে জালিয়াতির অভিযোগে এক ভ্রমণ সংস্থার কর্ণধারকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে হুগলির শেওড়াফুলিতে ওই ঘটনায় ধৃতের নাম বিবেকানন্দ গুপ্ত। বুধবার ধৃতকে শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ৬ দিন পুলিশ হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, অক্টোবর মাসে হুগলির ২৪ জনের একটি পর্যটক দল আন্দামানে যান। সেখানে বেড়ানো এবং থাকা-খাওয়ার জন্য ‘গুরুজি ট্র্যাভেলস’ নামে শেওড়াফুলির একটি ভ্রমণ সংস্থার সঙ্গে মাথাপিছু ১৪ হাজার টাকায় তাঁদের চুক্তি হয়। যাওয়ার আগেই চুক্তির পুরো টাকা মিটিয়ে দেয় পর্যটকদের দলটি। পর্যটকদের অভিযোগ, আন্দামানে পৌঁছনোর পরে প্রথম দু’দিন নির্ঘণ্ট অনুযায়ী ঘোরানো হয়। তারপরে লিটল আন্দামান দ্বীপ থেকে ফেরার সময় স্থানীয় এজেন্ট জানিয়ে দেন, সরকারি জাহাজ নেই। অন্য জাহাজে ফিরতে গেলে মাথা পিছু ৫০০ টাকা করে লাগবে। বাধ্য হয়ে তাঁরা ওই টাকা দেন। তখন এজেন্ট বলেন, শেওড়াফুলি থেকে তাঁদের ট্র্যাভেল এজেন্সি টাকা না পাঠানোয় হোটেল ভাড়া দেওয়া যাচ্ছে না। ফলে ওই টাকা তিনি রেখে দেবেন। জাহাজে ফিরতে আরও ৫ হাজার ৮০০ টাকা লাগবে। পর্যটকরা ওই টাকাও দিয়ে দেন।
পর্যটক দলটির অভিযোগ, তাঁদের নীল এবং হ্যাভলক দ্বীপ ঘোরার কথা ছিল। কিন্তু ভ্রমণ সংস্থা টাকা না পাঠানোয় এজেন্ট ওই দু’টি জায়গায় তাঁদের নিয়ে যাননি। ফলে টানা পাঁচ দিন কার্যত হোটেলবন্দি হয়ে কাটাতে হয় তাঁদের। হোটেলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, অনেক টাকা বিল বাকি। না মেটালে জিনিসপত্র আটকে রাখা হবে।
স্থানীয় এজেন্টও টাকার জন্য চাপ দিতে থাকেন। এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন পর্যটকেরা। তাঁদের পরিবারের তরফে শেওড়াফুলি ফাঁড়িতে বিষয়টি জানানো হয়। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় পর্যটক সংস্থাটি হোটেলের বিল মিটিয়ে ঘরে ফেরেন।
দিন কয়েক আগে পর্যটক দলটির তরফে ভ্রমণ সংস্থাটির বিরুদ্ধে শ্রীরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার ভিত্তিতেই মঙ্গলবার রাতে শেওড়াফুলির ব্যাঙ্কপাড়ায় বাড়ি থেকে বিবেকানন্দবাবুকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার আদালতে ধৃতের স্ত্রী বলেন, ‘‘দু’টি জায়গায় ওঁরা ঘুরতে পারেননি ঠিকই। কিন্তু আমরা বলেছিলাম, কিছু টাকা ফিরিয়ে দেব। ওঁরা রাজি হননি। উল্টে প্রভাব খাটিয়ে স্বামীকে ফাঁসানো হল।’’
তদন্তকারী এক পুলিশ অফিসার জানান, নীল এবং হ্যাভলক দ্বীপে ঘোরা বা থাকা-খাওয়ার কোনও বন্দোবস্তই অভিযুক্ত ভ্রমণ সংস্থাটি করেনি। কেননা, ওখানে হোটেল বা অন্য কিছুর বুকিংয়ের কোনও প্রমাণ ওঁরা দেখাতে পারেননি। পুলিশ জানায়, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাঁর সংস্থার কাগজপত্র পরীক্ষা করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy