Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

চোরাই মাল নিয়ে যেতে বাধা, গুলি চালিয়ে তাণ্ডব দুষ্কৃতীদের

ডানলপ কারখানা থেকে চোরাই মাল তাদের এলাকা দিয়ে নিয়ে যেতে বাধা দিয়েছিলেন বাসিন্দারা। এমনকী আটকে রাখা হয় মালপত্রও। সেই ‘অপরাধে’ স্থানীয় বাসিন্দাদের মারধর করে, শূন্যে গুলি চালিয়ে তাণ্ডব করল একদল দুষ্কৃতী। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সাহাগঞ্জের ঝাঁপপুকুর মনসাতলার আমবাগান এলাকায়। খবর পেয়ে চুঁচুড়া থানার আইসি সুশান্ত মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিরাট বাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে দুষ্কৃতীরা পুলিশ দেখে পালানোর চেষ্টা করে।

ডানলপে গোলমালে ধৃত।— নিজস্ব চিত্র।

ডানলপে গোলমালে ধৃত।— নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৫১
Share: Save:

ডানলপ কারখানা থেকে চোরাই মাল তাদের এলাকা দিয়ে নিয়ে যেতে বাধা দিয়েছিলেন বাসিন্দারা। এমনকী আটকে রাখা হয় মালপত্রও। সেই ‘অপরাধে’ স্থানীয় বাসিন্দাদের মারধর করে, শূন্যে গুলি চালিয়ে তাণ্ডব করল একদল দুষ্কৃতী। শুক্রবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে সাহাগঞ্জের ঝাঁপপুকুর মনসাতলার আমবাগান এলাকায়। খবর পেয়ে চুঁচুড়া থানার আইসি সুশান্ত মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিরাট বাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে দুষ্কৃতীরা পুলিশ দেখে পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ ও এলাকার লোকজন তাড়া করে এক দুষ্কৃতীকে ধরে ফেলে। আটক করা হয়েছে দুষ্কৃতীদের ফেলে যাওয়া ৬টি মোটরসাইকেল। ঘটনাস্থল থেকে ডানলপ কারখানার এক নিরাপত্তা রক্ষীর পরিচয়পত্রও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘‘এলাকাবাসী বাধা দেওয়ায় দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে। একজন দুষ্কৃতী ধরা পড়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কারখানার দামি যন্ত্রপাতি-সহ অন্যান্য মালপত্র পাহারা দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষী বহাল রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই নিরাপত্তা রক্ষীদের সঙ্গে যোগসাজশে প্রায়ই কারখানার ভিতর থেকে দুষ্কৃতীরা মালপত্র চুরি করে বসতি এলাকার মধ্যে দিয়ে নিয়ে যায়। চোরাই মালপত্র তাঁদের এলাকা দিয়ে যাতে না নিয়ে যাওয়া হয় সে জন্য তাঁরা নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু তাতে কান দেয়নি দুষ্কৃতীরা। এ দিন সকালে কয়েকজন দুষ্কৃতী চোরাই মাল নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় কয়েকজন যুবক তাদের বাধা দেয়। চুরির মাল আটকে রাখে। এর পর দুষ্কৃতীরা সেখান থেকে চলে যায়। বেশ কিছুক্ষণ পরে দশটি মোটর সাইকেলে জনা কুড়ি সশস্ত্র দুষ্কৃতী ঝাঁপপুকুর আমবাগান এলাকায় ঢুকে শূন্যে গুলি চালিয়ে তাণ্ডব শুরু করে। মালপত্র আটকে রাখায় জন্য কয়েক জন বাসিন্দাকে মারধর করে।

ঘটনাস্থলের কাছেই পুলিশ ফাঁড়ি। গুলির আওয়াজ শুনে ও গোলমালের খবর পেয়ে পুলিশের বিশাল বাহিনী এলাকায় পৌঁছে যায়। ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসেন সমস্ত বাসিন্দারাও। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দুষ্কৃতীরা পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ ও বাসিন্দারা তাড়া করে একজনকে ধরে ফেলে। দুষ্কৃতীদের ফেলে যাওয়া ৬টি মোটর সাইকেলও উদ্ধার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয় কারখানার এক নিরাপত্তারক্ষীর পরিচয়পত্র।

স্থানীয় বাসিন্দা রুবিয়া বিবি বলেন, ‘‘সকালে বাড়িতে রান্না করছিলাম। হঠাৎ গুলির আওয়াজ পেয়ে বাইরে বেরিয়ে দেখি কয়েকজন গুলি ছুড়ছে। এলাকার ছেলেরা চিৎকার করছে। একটু পরে দেখি বিশাল পুলিশ বাহিনী চলে এসেছে। পুলিশ দেখে দুষ্কৃতীরা পালানোর চেষ্টা করে। লোকজন ও পুলিশ তাড়া করে একজনকে ধরে ফেলে।’’

আর এক বাসিন্দা নারায়ণচন্দ্র শিকদার বলেন, ‘‘ দীর্ঘদিন ধরেই এই রাস্তা দিয়ে ডানলপের মাল পাচার হচ্ছে। আমরা এখান দিয়ে ও সব নিয়ে যেতে ওদের অনেক বার নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু ওরা শোনেনি। এ দিন কয়েকজন বাধা দেওয়াতেই এমন গণ্ডগোল। তবে পুলিশ ঠিক সময়ে না পৌঁছলে আরও বড় গোলমাল হতে পারত।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE